• মুক্ত কলাম

    আধাঁরে প্রদীপ হাতে “ইমজা”—ফারজানা মৃদুলা

      প্রতিনিধি ৩ জুলাই ২০২০ , ৪:২৮:০৯ অনলাইন সংস্করণ

    আজ অদৃশ্য জালে আটকে আছে গোটা জাতি। আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষরা এখনো পুরোপুরিভাবে করোনার এই দখল কাটিয়ে উঠতে পারেনি।এই মহামারীর কালে আরো বেশী বিপাকে পড়ে গেছে ছিন্নমূল শিশু / নারী/ পুরুষ ও ভবঘুরে মানুষরা। তাদের জীবিকা নির্বাহের পথ এখন বলতে গেলে একেবারেই বন্ধ। তাদের মাঝে আবার কেউ কেউ অন্ধকার জগতে নিজেদের বন্দী করে ফেলেছে, কেউ স্বইচ্ছায় বেশীরভাগ আবার পরিস্থিতির শিকার যাকে বলে বাধ্য হয়ে এই পথে হাঁটছে আবার কেউ দালাল নামক চক্রের কবলে ও বাঁধা পড়েছে।

    এমন সময়ে তাদের পাশে সহযোগী হয়ে এগিয়ে এসেছে আমাদের সিলেটের ইলেকট্রনিক মিডিয়া জার্নালিস্ট সংগঠন (ইমজা)।করোনর সংকটময় সময়ে গেলো ৯ই মে থেকে ভালোবাসার সহমর্মিতার হাত বাড়িয়েছে এই সকল ছিন্নমূল / ভবঘুরে মানুষদের প্রতি।বিভিন্ন দানশীল মানুষের সহযোগিতায় প্রতি রাতে ৭০/৮০ জন অসহায় মানুষদের রাতের আহারের ব্যবস্থা করে আসছে তারা। শুধু তাই নয় তারা এর পাশাপাশি ঐ সকল মানুষ গুলো কে কাউন্সিলিং করছে, মানষিক ভাবে সহযোগিতা করে সাহস দিয়ে যাচ্ছে আর চেষ্টা করে চলছে অন্ধকারের এই যাত্রী গুলো কে আলোর পথে আনতে। বলা যায় আধাঁরের মাঝে প্রদীপের আলো নিয়ে ইমজা।
    সিলেট ক্বিনব্রিজ এর নিচে সুরমার চাঁদনীঘাটের পাড়ে ইমজার সদস্যরা প্রতিরাতে তাদের কাছে খাদ্য সহযোগিতা নিয়ে পৌঁছে যাচ্ছে, ঝড় বৃষ্টি উপেক্ষা করে তারা তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন।মানবতার এই ফেরীওয়ালাদের লক্ষ একটাই পথহারা এই মানুষগুলো যেন পথের দিশা খুঁজে পায়।

    তাদের এই মহৎ কাজে সহযোগিতা করতে প্রবাসী সহ স্হানীয় কয়েকটি সংগঠন, ব্যক্তিবর্গরাও এগিয়ে এসেছেন রাতের খাদ্য সহায়তার কাজে।
    এই সুবিধাবঞ্চিত মানুষ গুলোর মাঝে বেশ কিছু নারী আছে যারা অন্ধকারে জগতে জড়িয়ে জীবন জীবিকার সন্ধান করে চলছে আর বেশকিছু শিশুরা অসামাজিক কাজে লিপ্ত । সমাজের মানুষেরা তাদের খুব ঘৃনার চোখেই দেখে থাকে।
    কিন্তু তাদের কেউ সহযোগিতা করছি না,যেন এই পথ ছেড়ে নিজেদের আলোর পথে আনতে পারে এবং নিজেদের ভাবতে পারে এই সমাজের অংশ।
    এই চিন্তা চেতনা থেকেই ইমজার সদস্যরা চাইছেন সমাজের সকলের সহযোগিতা নিয়ে তাদের কর্মসংস্থান করতে। ইতোমধ্যে তারা ১৫ দিনের খাদ্য সহায়তা দিয়ে বেশ কিছু মহিলাদের বাড়ীতে পাঠিয়েছেন এবং তাদের বলেছেন এই অন্ধকারের ঠিকানাটা যেন তারা চিরতরে ইতি টানে এমনকি তাদের আসত্ব করেছেন যে তাদের সৎ ভাবে সুন্দর কাজের মাধ্যমে সমাজে বাঁচার সুযোগ করে দিতে তারা সহযোগিতা করবেন ।
    এতো সাহসী ও মহৎ উদ্যোগ নেওয়ায় শ্রদ্ধা জানাই ইমজার সদস্যদের।
    সমাজের দায়বদ্ধতার দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে এই কার্যক্রম।

    ইমজার সদস্য গন বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছেন ছিন্নমূল শিশুদের উপরও। স্কুল / মাদ্রাসায় ভর্তি করিয়ে শিক্ষার আলোয় তাদের জীবনটাকে আলোকময় করতে।
    কেননা প্রতিটি শিশুর আছে নিরাপদ ভাবে বেড়ে উঠার অধিকার শিক্ষাগ্রহণের অধিকার তারাই তো আগামীর বাংলাদেশের স্বপনের কারিগর।
    আঁধারে আলো দেখানো ইমজার সেই সকল মানবিক যোদ্ধাদের সাথে যুক্ত হয়ে আমরাও পারি সমাজের অসহায় মানুষগুলোর সুন্দর আগামী গড়তে সহযোগিতা করতে।

    আমরা বিশ্বাস করি এমন একটি রাত আসবে যে রাতে সুরমা পাড়ে থাকবেনা ছিন্নমূল নামের অস্তিত্ব । যার বিরল স্বাক্ষী হয়ে থাকবে
    ক্নীনব্রীজ সংলগ্ন ঐতিহাসিক আলী আমজদে ঘড়ী।

    লেখকঃকলামিস্ট

    আরও খবর

    Sponsered content