প্রতিনিধি ২১ জুন ২০২০ , ২:৫১:১৯ অনলাইন সংস্করণ
মোঃ হুমায়ূন কবীর ফরীদি, জগন্নাথপুর (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধিঃ মরনব্যাধী করোনাভাইরাস এর সংক্রমণ প্রতিরোধে জগন্নাথপুর এর দুইটি এলাকায় লকডাউনের মধ্যেও সামাজিক দুরত্ব বজায় না রেখেই মূখে মাস্ক ছাড়াই জনবহুল স্থানে অবাধে চলাফেরা করছেন জনসাধারণ। এমনকি অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে অবাধে চলছে যানবাহন।যার ফলে করোনার ঝুঁকি আরো প্রকোট হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
জানা যায়, সম্প্রতিকালে সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলায় মহামারী করোনা ভাইরাস সংক্রমণে আক্রান্ত হন সর্বমোট ৬২ জন। তমধ্যে জগন্নাথপুর পৌরসভা এলাকায় আক্রান্ত হয়েছেন ৩৭ জন। সুস্থ হয়েছেন ৬ জন। এছাড়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় আরো ৯ জন সুস্থ হয়েছেন। সস্প্রতি জগন্নাথপুর পৌরসভা ও উপজেলার সৈয়দপুর-শাহারপাড়া ইউনিয়নে দিনদিন আক্রান্ত সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় গত ১৬ জুন জগন্নাথপুর পৌরসভা ও সৈয়দপুর-শাহারপাড়া ইউনিয়ন কে রেড জোন হিসাবে চিহ্নিত করে লকডাউন ঘোষনা দিয়ে ১৭ জুন থেকে লকডাউন কার্যকর করতে মাঠে নামে স্থানীয় প্রশাসন। পরে প্রশাসনের পক্ষ থেকে স্থানীয় গণমাধ্যম কে জানানো হয়, সম্ভাব্য রেড জোন হিসেবে জগন্নাথপুরের এই দুই এলাকা কে চিহৃিত করা হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসনের ঘোষনা অনুয়ায়ী, লকডাউন এলাকায় সকাল ১০ থেকে বিকেলে ৪ টা পর্যন্ত নিত্যপণ্যের দোকান খোলা থাকবে। বিকাল ৪ টার পর থেকে ঔষধের দোকান ছাড়া সব ধরনের দোকানপাট বন্ধ থাকবে এবং লকডাউন ঘোষিত এই দুই এলাকায় যানবাহন চলাচল সম্পূর্ণ ভাবে বন্ধ থাকবে। অপ্রিয় হলেও সত্য যে লকডাউন এলাকায় সামাজিক দুরত্ব বজায় না রেখেই জনসাধারণ চলাচল করছেন।কেবলমাত্র মিনিবাস ছাড়া সবধরনের যানবাহন অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে চলাচল করছে। শহরের পৌর পয়েন্ট, রানীগঞ্জ রোড,জগন্নাথপুর পশ্চিম বাজার এলাকার ইকড়ছই এলাকা, ইকড়ছই-চিলাউড়া সড়ক, জগন্নাথপুর-সিলেট সড়কে পৌরসভার একাংশ, ডাক বাংলো সড়ক,জগন্নাথপুর-কেশবপুর সড়ক, জগন্নাথপুর-হবিবপুর সড়ক সহ পৌরসভার প্রতিটি সড়কে এবং সৈয়দপুর-শাহারপাড়া ও জগন্নাথপুর – পাগলা সড়ক( পৌরসভার আওতাধীন অংশে) এলাকায় অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে যানবাহন চলাচল করছে। এসব এলাকার মধ্যে জগন্নাথপুর-পাগলা সড়কের ইকড়ছই, ইকড়ছই মাদ্রাসা পয়েন্ট, মুক্তিযাদ্ধা মোড, রানীগঞ্জ রোড এলাকায় অবৈধ শত শত যানবাহনের জট লেগেই থাকে।
ছোটখাটো যানবাহনের একাধিক চালক জানান, পেটের দায়েই তারা লকডাউনের মধ্যে যানবাহন নিয়ে বেড়িছেন। গাড়ীর চাঁকা না ঘুরলে সংসার চলেনা। অভাব অনটনের সংসারে পরিবারের লোকজন এর মূখে দুমুঠো ভাত দেওয়ার তাগিদে গাড়ী নিয়ে রাস্তায় নেমেছি।এক প্রশ্নের জবাবে তাঁরা বলেন, সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে গাড়ী চালানোর চেষ্টা করছি। কিন্তু যাত্রী সাধারণ মানছেন না।এতে তাদের কিছুই করার থাকছেনা।
জগন্নাথপুর উপজেলা স্বাস্হ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মধু সুধন ধর বলেন, গত ৪৮ ঘন্টায় জগন্নাথপুরে কেউ করোনা আক্রান্ত হননি। তবে সম্প্রতি জগন্নাথপুরে ৬২ জন করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন।তমধ্যে জগন্নাথপুর পৌরসভায় আক্রান্ত ৩৭ জন। তারমধ্যে ৬ জন সুস্থ। এছাড়া জগন্নাথপুরের বিভিন্ন ইউনিয়নে আরো ৯ জন সুস্থ হয়েছেন।
জগন্নাথপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মাহফুজুল আলম মাসুম জানান, করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে জগন্নাথপুরের দুইটি এলাকা কে সম্ভাব্য রেড জোন হিসেবে চিহ্নিত করে লকডাউন ঘোষনা করে তা বাস্তবায়নে আমরা কাজ করছি।
তিনি আরো বলেন, আমাদের নিজেদের নিরাপদ জীবন গড়তে সবাইকে লকডাউন মেনে চলার জন্য আহবান জানান। অন্যতায় কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।