• লিড

    সুনামগঞ্জের পুলিশ সদস্যের পরিবারের উপর হামলা ও মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগ শীর্ষ চাঁদাবাজ রুহেলর উপর

      প্রতিনিধি ১ মে ২০২০ , ৬:৪১:২৬ অনলাইন সংস্করণ

    সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি।। সুনামগঞ্জের নিরীহ এক পুলিশ সদস্যের চাকুরি খেতে চায় শীর্ষ চাঁদাবাজ রফিকুজ্জামান রুহেল ও তার সংগীরা। শুধু চাকুরি নয় তার পরিবারকে দীর্ঘ দিন ধরে জমি জমা নিয়ে বিরোধ নিয়ে মামলা হামলস দিয়ে হয়রানি করছেন। জায়গা জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে এক পুলিশ সদস্যের পরিবারের উপর হামলা ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় পুলিশ সদস্যের পিতাসহ গুরুতর আহত হয়েছেন অন্তত ৭জন। সোমবার (২৭ এপ্রিল) বেলা সাড়ে ১২ টায় সদর উপজেলার সুরমা ইউনিয়নের বাঘমারা গ্রামের মেজর ইকবাল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে এই ঘটনাটি ঘটে। এদিকে, কোনধরণের সংশ্লিষ্টতা ছাড়াই ঘটনাস্থলে উপস্থিত না থাকলেও পুলিশ সদস্য মোহাম্মদ হাফিজুর রহমান (মানিক) কে কাল্পনিকভাবে জড়িয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে হামলাকারী রফিকুজ্জামন রুহেল।

    স্থানীয় এলাকাবাসী জানায়, সদর উপজেলার সুরমা ইউনিয়নের বাঘমারা গ্রামের মনিরুজ্জামান ও আক্তারুজ্জামান তারা আপন দুই ভাই। তাদের মধ্যে জমিজামা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে ঝামেলা চলছে। মনিরুজ্জামানের ক্রয়কৃত ঘাসিগাঁও মৌজাস্থিত জেএল নং ৫২, খতিয়ান নং ৪১৩, দাগ নং ৩৬১৬ ও ৩৬১৮ মোট সাড়ে ৪২ শতক ভুমি দীর্ঘদিন যাবৎ ভোগাদিকার থাকলেও প্রতিপক্ষ একই গ্রামের আক্তারুজ্জামানের ছেলে রফিকুজ্জামান রুহেল ও খালিকুজ্জামান সাগর গং পেশি শক্তি ব্যবহার করে জমি দখলের চেষ্ঠা করে। তারই জের ধরে সোমবার বেলা সাড়ে ১২ টায় জোরপূর্বক জমিতে গাছ গাছালি ও মাটি কেটে নেয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ সদস্যের পিতা মনিরুজ্জমান তাতে বাঁধা দেয়ায় তার উপর হামলা করে রফিকুজ্জামান রুহেলসহ তার স্বজনরা। এতে পুলিশ সদস্যের পিতা মনিরুজ্জামান, বড় ভাই মোহাম্মদ আলী নয়ন, মাহবুবুর রহমান আপন, মুন্না, উজ্জল, অন্তর, আমিনা খাতুনসহ গুরুতর আহন হয়। এ ঘটনায় উভয় পক্ষে সদর থানায় পৃথক লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

    হামলার শিকার পুলিশ সদস্য হাফিজুর রহমানের পিতা মনিরুজ্জামান জানান, আমার জমিতে রোপনকৃত গাছ গাছালি ও জমি থেকে মাটি কেটে নিতে চেষ্টা করে প্রতিপক্ষ রুফিকুজ্জামান রুহেল ও তার স্বজনরা। তাতে আমি বাঁধা দিলে আমরা উপর হামলা করে রুহেলের ভাই খালেকুজ্জামন সাগরসহ অনেকে। এঘটনায় আমার ছেলেসহ ৭-৮জন আহত হই। আমরা রুহেলের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে আছি। আমার ছেলেসহ পরিবারের সবার নিরাপত্তা নিয়ে অনিশ্চিয়তায় ভুগছি। রুহেল বার বার হুমকি দিচ্ছে তার কথামতো জায়গা ছেড়ে না দিলে আমার ছেলে পুলিশ সদস্য মোহাম্মদ হাফিজুর রহমানের চাকুরি খেয়ে ফেলবে। তিনি বলেন, এ পর্যন্ত চাকরি খাওয়ার জন্য আমার ছেলের বিরুদ্ধে সে অসংখ্যবার মিথ্যা অভিযোগ দিয়েছে যা তদন্তে মিথ্যা প্রমানিত হয়েছে।

    এব্যাপারে একাধিকবার চেষ্টা করেও অভিযুক্ত রফিকুজ্জামান রুহেল’র বক্তব্য পাওয়া যায় নি।

    এ বিষয়ে সুনামগঞ্জে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(সদর সার্কেল) মোহাম্মদ জয়নাল আবেদীন বলেন, এ ঘটনায় পৃথক পৃথক দুইটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। অভিযোগগুলো তদন্তাধীন আছে। তবে আমরা ঘটনার তারিখ থেকে চারদিনের কল লিষ্ট দৃষ্টে দেখা যায় যে, ঘটনার সময় উক্ত স্থানে পুলিশ সদস্য হাফিজুর রহমান ছিলনা কিংবা প্রাথমিক তদন্তে ঘটনাস্থলে থাকার কোন সত্যতা পাওয়া যায়নি।

    উল্লেখ্য, রফিকুজ্জামন রুহেল নানান সময় পুলিশের মহাপরিদর্শকসহ বিভিন্ন স্থানে একের পর এক মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করে পুলিশ সদস্য হাফিজুর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যদেরকে হয়রানি করে আসছেন। যা সরজমিনে তদন্তে কোনটারই সত্যতা পায়নি পুলিশের তদন্তকারী কর্মকর্তারা। ২০১৮ সালে রফিকুজ্জামান রুহেলের ছোট ভাইয়ের স্ত্রী মোছা: সুমনা আক্তার সুর্বনাকে বাদী করে সদর থানায় পুলিশ সদস্য হাফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করা হয়। যা পরবর্তীতে এসআই রিপন চন্দ্র গোপ ঘটনাস্থল পরির্দশন করে ঘটনার সাথে পুলিশ সদস্য হাফিজুর রহমান কিংবা তার পরিবারের সদস্য জড়িত থাকার কোন প্রমানাদি না পেয়ে প্রতিবেদন দাখিল করেন। গত ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ তারিখে রফিকুজ্জামান রুহেল পুলিশ সদস্য হাফিজুর রহমানের পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে আরও একটি মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করেন এবং অভিযোগটি সদর থানার এসআই আব্দুল হান্নান সরজমিন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ঘটনার সত্যতা না পেয়ে পুলিশ সুপার বরাবরে লিখিত প্রতিবেদন দাখিল করেন এবং গত ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ তারিখে পুলিশের মহাপরিদর্শকসহ ৭টি স্থানে অভিযোগ দায়ের করেন রফিকুজ্জামান রুহেল। প্রতিটি অভিযোগেরই তদন্তপূর্বক ঘটনার সত্যতা পাওয়া যায়নি মর্মে প্রতিবেদন রয়েছে। শুধু তাই নয়, গত ৯ই এপ্রিল ২০১৯ তারিখে পুলিশ সদস্য হাফিজুর রহমানসহ তার পরিবারের বিরুদ্ধে বিজ্ঞ আদালতে ১০৭ ধারা একটি মামলা দায়ের করেন রফিকুজ্জামান রুহেল। পরবর্তী বিজ্ঞ আদালত ঘটনাটির কোন সত্যতা না পেয়ে গত ১৩ই মে ২০১৯ মামলাটি খারিজ করে দেয়।
    #

    আরও খবর

    Sponsered content