প্রতিনিধি ১০ মার্চ ২০২০ , ১১:২০:৫৬ অনলাইন সংস্করণ
ওহিদুল ইসলাম, কানাইঘাট থেকে: কানাইঘাটে শব্দ দোষণ ও ধুলোবালির কারণে জনসাধারণের চলাচল সহ পরিবেশের ব্যাপক ক্ষতি করে পাথর ভাঙ্গছে কয়েকটি ক্রাশার মিল। এনিয়ে জনমনে দেখা দিয়েছে ক্ষোভ। ইতিমধ্যে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষথেকে কয়েক দফা অভিযান ও জরিমানা আদায় করলেও কাজের কাজ কিছুই হচ্ছেনা বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী। যে কারণে কানাইঘাট-সুরইঘাট রাস্তা দিয়ে অন্যান্য যানবাহন চলাচলে মারাত্মক দূর্ভোগের সৃষ্ঠি হচ্ছে।
জানাযায়, উপজেলার লক্ষীপ্রসাদ পশ্চিম ইউপির কানাইঘাট-সুরইঘাট রাস্তার পার্শ্বে অবৈধভাবে পাথর ভাঙ্গছে কয়েকটি ক্রাশার মিল। এতে সুরইঘাট বিজিবি ক্যাম্প এবং সুরইঘাট বাজার এলাকার আশপাশ জুড়ে ধুলোবালি ও শব্দ দোষনের কারণে এলাকার পরিবেশ মারাত্মক হুমকির সম্মূখীন। এছাড়া সীমান্ত এলাকার জনসাধারণের যানবাহনে যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম কানাইঘাট-সুরইঘাট রাস্তা। এতে উক্ত রাস্তার পার্শ্বে প্রভাবশালী পাথর ব্যবসায়ী উপজেলার সাউদগ্রাম গ্রামের ছয়ফুল আলম প্রথমে একটি ক্রাশার মিল স্থাপন করে সেখানে পাথর ভাঙ্গা শুরু করেন। এতে প্রতিদিন ছয়ফুল আলমের স্টোন ক্রাশার ডাম্পিং থেকে রাস্তায় বড় বড় ট্রাক ভর্তি করে পাথর লোড করা হয়।
এলাকাবাসী জানান, সাউদগ্রামের ছয়ফুল আলম প্রতিদিন লোভাছড়া কোয়ারী থেকে বড় বড় ট্রাক, ট্রলি ও ট্রাক্টর দিয়ে পাথর এনে কানাইঘাট সুরইঘাট রাস্তার পার্শ্বে পাথর মওজুদ করে তার ক্রাশার মিল থেকে পাথর ভেঙ্গে বড় বড় ট্রাক, ট্রলি ও ট্রাক্টর যোগে বিভিন্ন জায়গায় সরবরাহ করে। এতে অতিরিক্ত পাথর নিয়ে ট্রাক ও ট্রলি চলাচলের কারণে রাস্তাঘাট ভেঙ্গে বিভিন্ন জায়গায় বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া প্রচলিত আইন অনুযায়ী নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে পাথর ভাঙ্গার কাজ না করে লোহা দিয়ে মেশিন তৈরি করে ডিজেল চালিত ভাবে পাথর ভাঙ্গছেন ব্যবসায়ীরা। এছাড়া উল্লিখিত স্থানে প্রভাবশালী ছয়ফুলের ক্রাশার মিল দেখে স্থানীয় আরো কয়েকজন পাথর ব্যবসায়ী এখানে আরো কয়েকটি ক্রাশার মিল স্থাপন করে পাথর ভাঙ্গছেন। এতে এলাকার পরিবেশ মারাত্মক ভাবে দুষিত হচ্ছে। এলাকার লোকজন ধুলাবালির কারণে নানা রোগে ভোগান্তিতে পড়ছেন। ধুলাবালি ও শব্দের কারণে বিশেষ করে শিশু কিশোর’রা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে বেশি।
সরেজমিনে গেলে দেখা যায়, উল্লিখিত রাস্তার পার্শ্বে সাউদ গ্রামের ছয়ফুল আলমের ক্রাশার মিল ছাড়াও কালীনগরের হোসন আহমদ, সিলেটের দাসপাড়ার আমীর কামাল, ছাতকের উস্তার আলী, উত্তর লক্ষীপ্রসাদের কামাল মেম্বার ও সাতপারী গ্রামের কালা মঈনুলের একটি করে ক্রাশার মিল রয়েছে। এ সময় ছয়ফুল আলম বলেন, সম্প্রতি উপজেলা প্রশাসনের পক্ষথেকে অভিযান পরিচালনা করে তার উপর ২০ হাজার টাকা ও কালা মঈনুলের উপর ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। অভিযানের পর কয়েকদিন তাদের ক্রাশার মেশিনগুলো বন্ধ ছিল। বর্তমানে তারা সবদিক ম্যানেজ করে আবার নতুন ভাবে ক্রাশার মিলগুলো দিয়ে পাথর ভাঙ্গছেন। এছাড়া কানাইঘাটের খেয়াঘাট এলাকায় ক্রাশার মেশিনের পরিধি দিন দিন বেড়েই চলেছে। তাছাড়া উপজেলার মুলাগুল এলাকায় লোভাছড়া নদীর এপারে অপারে গড়ে উঠেছে আরো বেশ কিছু ক্রাশার মিল।
এবিষয়ে জানতে চাইলে কানাইঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ বারিউল করিম খান বলেন, অবৈধ ভাবে যারা ক্রাশার মিল দিয়ে পাথর ভাঙ্গছে। তাদের উপর বিভিন্ন সময় উপজেলা প্রশাসনের পক্ষথেকে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। তিনি বলেন, সুরইঘাট এলাকার কয়েকটি ক্রাশার মিলে সম্প্রতি অভিযান চালিয়ে জরিমানা করা হয়েছে।