• লিড

    মুক্তিযোদ্ধা নরেশ চন্দ্র বর্মনের  ভিক্ষা করে জীবন চলে!

      প্রতিনিধি ১৯ নভেম্বর ২০১৯ , ১:৩৭:৪২ অনলাইন সংস্করণ

    ভাটি বাংলা ডেস্কঃ-
    মুক্তিযোদ্ধার ভূয়া সার্টিফিকেট ধারীরা যখন রাস্ট্রের বিভিন্ন পদে চাকুরী করার এখানে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা কেউ কেউ শিক্ষাবৃত্তিসহ অসম্মানজনক পেশায় জড়িত হয়ে জীবিকা নির্বাহ করার খবর সত্যিই দুঃখজনক ঘটনা। এমনি হ্নদয় বিদারক ঘটনা
    নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলার।
    মুক্তিযোদ্ধা নরেশ চন্দ্র বর্ম্মণ সকালে ছোট মেয়ে বাসনা রায়ের কাছ থেকে এক মুঠো চাল ভেজে নিয়ে চিবিয়ে খেয়ে হাতে ভিক্ষের ঝুলি নিয়ে বেরিয়ে পড়েন ভিক্ষা করতে।
    দিনভর এ বাড়ি থেকে ও বাড়ি, এক দোকান থেকে আরেক দোকানে ধর্না দিয়ে কিছু চাল আর দু’চার টাকা যা ভিক্ষা পান তাই দিয়ে আধ পেটা খেয়ে দিন কাটে তার। বেঁচে থাকার জন্য বয়সের ভারে ন্যূয়ে পড়া শরীরটাকে এভাবেই টেনে নিয়ে বেড়ান ’৭১’র ৬নম্বর সেক্টরের বীর মুক্তিযোদ্ধা নরেশ চন্দ্র বর্ম্মন।
    “স্বাধীনতা সংগ্রামের এই বীর সেনানী টাকা দিতে না পারায় আজও পাননি মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি। যুদ্ধাহত এই যোদ্ধা স্বীকৃতি পেতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।”
    নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলার চিড়াভিজা গোলনা এলাকার পুর্ণচন্দ্র বর্ম্মনের ছেলে নরেশ চন্দ্র বর্ম্মন।
    বঙ্গবন্ধুর ৭মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণের পরে গোটা দেশ তখন উত্তাল। বাবা-মা-ভাই-বোন আর পাড়া প্রতিবেশীদের সাথে টগবগে যুবক নরেশ চন্দ্র বর্ম্মনও পাড়ি জমান ভারতে। শরনার্থী হিসেবে আশ্রয় নেন জলপাইগুড়ি জেলার বাতাবাড়ি ক্যাম্পে।
    সেখান থেকে রায়গঞ্জ ইয়ুথ ক্যাস্পে নিয়ে গিয়ে করা হয় শারীরিক কসরত।
    এরপরে মুজিব ক্যাম্পে দেয়া হয় ২৮দিনের প্রশিক্ষন। প্রশিক্ষণ শেষে কালিগঞ্জের আব্দুল লতিফের নেতৃত্বে কালিগঞ্জ, বড়খাতা, ভুরুঙ্গামারী আর কুড়িগ্রামে পাক সেনাদের সাথে সম্মুখ যুদ্ধে অংশ নেন এই মুক্তিযোদ্ধা। স্বাধীনতার পরে স্বীকৃতির জন্য অনেকের কাছে দিনের পর দিন দিয়েছেন ধর্না। আশ্বাস দিয়েছেন অনেকেই। কিন্তু টাকা দিতে না পারায় আজও মেলেনি স্বীকৃতি।
    মুক্তিযুদ্ধের গল্প শুনে শুনে বড় হওয়া মেয়ে নিজেকে গর্বিত ভাবলেও যখন বাবা ভিক্ষে করতে বের হন তখন চাপা কান্নান তার বুক ফেঠে যায় বলে জানালেন বাসনা রানী রায় (১২)।
    জলঢাকা উপজেলা মুক্তিযুদ্ধো কমান্ডার আব্দুস সাত্তার বললেন, নরেস চন্দ্র হলেন একজন প্রকৃত মুক্তিযুদ্ধো ভারতীয় কল্যান ট্রাস্টে তার নাম আছে। সময় মতো হাজীর হতে না পারায় তার গেজেট হয়নি। আর হয়নি বলে আজ তার এই দুঃখ দূর-দশা।


    তার মুক্তিযুদ্ধোর স্বীকৃতি প্রদান করার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
    নীলফামারী জেলা প্রশাসক হাফিজুর রহমান চৌধুরী বলেন, নরেশ চন্দ্র বর্ম্মন একজন প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা। ভারতীয় তালিকায় তার নাম থাকার পরেও স্বীকৃতি না পাওয়ার বিষয় আসলেই দুঃখজনক।
    তবে তার আবেদনের প্রেক্ষিতে মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে স্বীকৃতির বিষয়টি নিশ্চিত করার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।

    আরও খবর

    Sponsered content