প্রতিনিধি ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২০ , ১১:১৭:১৭ অনলাইন সংস্করণ
ছবি: সংগৃহীত।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলাকে মিথ্যা মামলা আখ্যায়িত করে তা প্রত্যাহার দাবিতে আয়োজিত মিছিলে লাঠিপেটা করেছে পুলিশ। এতে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীসহ বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হয়েছে।গণমাধ্যমে পাঠানো প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই দাবি করা হয়েছে দলের পক্ষ থেকে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিএনপি ও এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের উদ্যোগে আজ শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০টায় মিরপুর কাঁচাবাজারে বিক্ষোভ মিছিলের আয়োজন করা হয়। বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীর বক্তব্যের পরপরই মিছিল শুরু হলে পুলিশ অতর্কিতে ব্যাপক লাঠিচার্জ শুরু করে।এতে মিছিলে নেতৃত্বে থাকা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী, ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক আমিনুল হক, ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সিনিয়র সহ-সভাপতি কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ, সহ-সভাপতি ওমর ফারুক কাউসার এবং ছাত্রদল ঢাকা কলেজ শাখার সহ-সভাপতি সাইফুল ইসলাম তুহিনসহ বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী গুরুতর আহত হন। লাঠিপেটার আগে রিজভীর নেতৃত্বে বিএনপির মিছিল। মিছিলে পুলিশের হামলার তীব্র নিন্দা, প্রতিবাদ ও ধিক্কার জানিয়ে রিজভী বলেন, পুলিশের এই হামলা রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের এক নগ্ন উদাহরণ। পুলিশের এ ধরনের ন্যাক্কারজনক কর্মকাণ্ডে এটি পরিষ্কার, বাংলাদেশ নামক স্বাধীন দেশের পুলিশ এখন দলীয় কর্মীতে পরিণত হয়েছে। দেশকে বানানো হয়েছে পুলিশি রাষ্ট্র। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপর নির্ভর করেই বর্তমান অবৈধ শাসকগোষ্ঠী গায়ের জোরে জনগণের শোষকে পরিণত হয়েছে। তিনি পুলিশি হামলায় আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করেন এবং এ ধরনের হামলায় মনোবল না হারিয়ে আরো শক্তি নিয়ে বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী হওয়ার আহ্বান জানান।এর আগে মিছিলপূর্ব পথসভায় সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে রিজভী বলেন, ‘দেশনেত্রী খালেদা জিয়া বর্তমানে ভয়ানক অসুস্থ। তাঁর ডায়াবেটিস সম্পূর্ণ অনিয়ন্ত্রিত। খালি পেটেই ১৫ থেকে ২০ এর মধ্যে ডায়াবেটিস উঠানামা করছে। তিনি কিছুই খেতে পারছেন না, দাঁড়াতে পারছেন না। এই অবস্থায় তাঁকে জরুরি ভিত্তিতে মুক্তি দিয়ে তাঁর সুচিকিৎসা করা না গেলে যেকোন সময় অনাকাঙ্খিত কিছু ঘটে যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। কিন্তু দুর্ভাগ্য, দেশনেত্রীর মুক্তি ও সুচিকিৎসা নিয়ে দল এবং তাঁর পরিবার-পরিজনদের দাবিকে কোনো পাত্তা দিচ্ছে না সরকার। দেশবাসী মনে করে যে, খালেদা জিয়াকে তিল তিল করে নিঃশেষ করতেই বর্তমান সরকার ও সরকারপ্রধান উঠেপড়ে লেগেছে। দেশবাসী আরো মনে করে যে, দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রী খালেদা জিয়ার মুক্তি ছাড়া দেশে গণতন্ত্র ফিরে আসবে না। তাঁর মুক্তি ব্যতিরেকে মানুষের ভোটের অধিকারসহ সকল গণতান্ত্রিক অধিকার কবরস্থ হয়েই থাকবে।রিজভী আরো বলেন, খালেদা জিয়াকে কারাবন্দি করা হয়েছে অন্যায়ভাবে সাজানো মামলায়। বেআইনী শাসকগোষ্ঠী ‘গণতন্ত্রের প্রতীক’ দেশনেত্রীকে কারাগারে আটকে রেখেছে কেবল তাদের ব্যর্থতা, অনাচার ও দুঃশাসনের বিরুদ্ধে যাতে কেউ প্রতিবাদ করার সাহস না পায়। জনগণের দরকার নেই বরং জনগণকে ভয় দেখিয়ে চিরকাল রাষ্ট্রক্ষমতা দখলে রাখার জন্যই গুম, খুন, বিচার বহির্ভূত হত্যা বা রক্তপাতের মাধ্যমেই শাসন করা হচ্ছে।বর্তমান সরকারের দুর্নীতির বিবরণ দিয়ে রিজভী বলেন, মহাদুর্নীতি ও অবাধে লুটপাট কার্যকর রাখার জন্যই একদলীয় নব্য বাকশালী শাসন কায়েম করা হয়েছে। প্রতিনিয়ত দেশব্যাপী কেবল হাহাকার ও দীর্ঘশ্বাসের শোনা যাচ্ছে। জাতিকে বন্দিদশা থেকে মুক্ত করতে এবং হারানো গণতন্ত্র ফিরে পেতে ‘গণতন্ত্রের মা’ গণমানুষের প্রিয় নেত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির বিকল্প নেই।এ সময় অবিলম্বে খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানান রিজভী।
#কালের কণ্ঠ