প্রতিনিধি ৩১ জানুয়ারি ২০২০ , ২:০৯:৩০ অনলাইন সংস্করণ
শাল্লা প্রতিনিধি: ছায়ার হাওর। পিআইসি নং ১২৪। বাঁধের ডান দিকে ফসলি জমি এবং প্রায় ৪০০ মিটার দুরে মরা সুরমা নদী। আর বাম পাশে ফসলি জমিসহ সাবমারজেবল রাস্তা। এর কিছু অংশ মাটিতে ঢেকে গেছে। আর কিছু অংশ মাঠিতে ঢাকা না পড়লেও জনচলাচলে বিঘ্ন ঘটছে। স্থানীয়দের মন্তব্য স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্মাণ করা রাস্তাটি মাটি চাপা দিয়ে হাওর রক্ষা বাঁধ করে সরকারি টাকা লোপাট করছে একটি সিন্ডিকেট চক্র। আর এই সিন্ডিকেট চক্রের সাথে শাল্লার দায়িত্বে থাকা সাবেক শাখা কর্মকর্তা উপ- সহকারি প্রকৌশলী সমসের আলী মন্টুর যোগসাজস রয়েছে বলে মন্তব্য করছেন স্থানীয়রা। এদিকে ওই প্রকল্প নিয়ে এখনো রয়েছে নানা গাফিলতি। যার ফলে সময় পেরিয়ে গেলেও প্রকল্পের কাজ রয়েছে আটকে।
জানা যায়, খালিয়াজুুড়ি উপজেলার মুরাদপুর গ্রামের রন সরকারকে প্রথমে প্রকল্পের সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত করলে তিনি বাঁধের কাজ শুরু করেন। বাঁধের কাজে প্রায় ৩ লাখ টাকা ব্যয় করা হলেও পরবর্তীতে তাকে পিআইসি থেকে বাতিল করে ওই গ্রামের রঞ্জন সরকারকে সভাপতি ও জন্টু সরকারকে সদস্য সচিব করা হয়। রহস্যজনক ভাবে কমিটি বদল করায় একদিকে প্রকল্পের কাজ আটকে আছে। অন্যদিকে বইছে সমালোচনার ঝড়। শুধু তাই নয়, উপজেলায় এধরনের আরো অনেক বাঁধই রয়েছে যা অপ্রয়োজনীয়। আর এসব অপ্রয়োজনীয় বাঁধগুলো দেখিয়ে সরকারের লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে সিন্ডিকেট চক্রের লোকেরা।
সরজমিনে দেখা যায়, ১২৪ নং পিআইসি’র কাজ বন্ধ রয়েছে। পিআইসির কাজ বন্ধ থাকার বিষয়ে জানতে চাইলে সভাপতি রঞ্জন সরকার বলেন, আমি এখনো আমার প্রকল্পের সদস্য সচিব কে জানি না। এখনো পর্যন্ত একাউন্টও খুলতে পারি না। এই প্রকল্প নিয়ে ঝামেলা রয়েছে। ঝামেলা মিটমাট না হওয়া পর্যন্ত প্রকল্প কাজ বন্ধ থাকবে।
এ বিষয়ে রন সরকারের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, প্রথমে আমাকে এই পিআইসির সভাপতি করে কমিটি গঠন করে মাটি কাটার অনুমতি দেয়। আমি ব্যক্তিগত প্রায় ৩ লাখ টাকা খরচ করে বাঁধের কিছু অংশে কাজ করেছি। পরে ব্যাংকে একাউন্ট করতে গেলে জানতে পারি আমি কমিটিতে নাই। পরে জানতে পারি স্থানীয় সাংবাদিক পি.সি দাস(পীযুষ) ও এসও সমসের আলী আমার আবেদনের সদস্য সচিবকে সভাপতি ও সাংবাদিকের ভগ্নিপতি জন্টু সরকারকে সদস্য সচিব করে পিআইসি গঠন করে। তিনি আরো বলেন, এ নিয়ে সাংবাদিক পীযুষ আমাদের এখানে এসে আমাদেরকে বলে যায় যে, শুন আমি সাংবাদিক পি.সি দাস। আমি বলছি তোমরা কাজ করো। কাকে কত দিতে হবে সেটা আমি দেব। আর পি.সি দাসের জন্যই প্রকল্পের কাজ বন্ধ রয়েছে বলে জানান রন সরকার।
এ বিষয়ে শাল্লার সাবেক শাখা কর্মকর্তা ও উপ-সহকারি প্রকৌশলী সমসের আলী মন্টু বলেন, এই বিষয়ে আমি ইউএনও স্যারকে বলেছি। ইউএনও স্যার বলেছেন তিনিই এর সমাধান করবেন।
এ ব্যপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আল মোক্তাদির হোসেনের মুঠোফোনে বার বার যোগাযোগ করা হলেও ফোন রিসিভ করেননি।
এ বিষয়ে সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক আব্দুল আহাদের সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন আমি গত বৃহস্পতিবার শাল্লায় হাওর রক্ষা বাঁধ পরিদর্শন করেছি। তবে এই বিষয়ে আমাকে কেউ কিছু জানায়নি। আমি এখন জেনেছি, আর ইউএনওকে বলে দিচ্ছি এই ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য।