ভাটি বাংলা ডেস্ক: ৫ নভেম্বর ২০২৪ , ৫:১১:৪৭ অনলাইন সংস্করণ
হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির আল্লামা শাহ মুহিবুল্লাহ বাবুনগরী লিখিত বক্তব্যে বলেছেন, দাওয়াত ও তাবলীগের মেহনত উম্মতে মুহাম্মদীর ওপর আল্লাহ প্রদত্ত দায়িত্ব।
ওলামায়ে কেরামের দাওয়াতের মাধ্যমেই আজ পুরো বিশ্বের প্রতিটি প্রান্তে কুরআন ও সুন্নাহর সহীহ বাণী পৌঁছেছে। আলোকিত হয়েছে সারা বিশ্ব।
দাওয়াতের উদ্দেশ্য হচ্ছে খালেকের সাথে মাখলুকের তায়াল্লুক সৃষ্টি করে দেয়া। আত্মভোলা মানবজাতিকে সঠিক পথের দিশা দেয়া। এই দায়িত্ব আমার আপনার এবং উম্মতে মুহাম্মদী সকলের। এই দায়িত্ব পালনের জন্যই মাওলানা ইলিয়াস (রহ.) তাবলীগের কাজ শুরু করেছিলেন।
দিল্লির নিজামুদ্দিন মারকাজের বর্তমান মুরব্বী মাওলানা সাআদ বিভিন্ন সময় কুরআন, হাদিস, ইসলাম, নবি-রাসূল (সা.), নবুওয়ত, সাহাবায়ে কেরাম এবং শরয়ী মাসআলা-মাসায়েল নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করেছেন। তার বক্তব্যগুলো কুরআন-সুন্নাহবিরোধী, যা মেনে নেয়া যায় না।
দ্বীনের বিভিন্ন বিষয়ে তার চিন্তাগত বিচ্যুতি ও বিচ্ছিন্নতা এবং অনেক বিষয়ে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাত ও জুমহুরের মুত্তাফাকা তথা ঐক্যমতসমর্থিত মাসআলা ও মাযহাবের খেলাফ করার কারণে শরীয়ত মতে মাওলানা সাআদের এতা’য়াত জায়েয নেই। বিতর্কিত মাওলানা সাআদের কারণে ছাত্রজনতা ও আলেম ওলামাদের কুরবানীর বদৌলতে অর্জিত স্বাধীন নতুন এই বাংলাদেশে বিশৃঙ্খলা তৈরি হোক এবং অন্তবর্তীকালীন সরকার বেকায়দায় পড়ুক তা’ আমরা চাই না। আমি আশা করি সার্বিক বিবেচনায় সরকার সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন । মহান আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে ইসলাম, দেশ, জাতি ও রাষ্ট্রের কল্যাণে কাজ করার তৌফিক দান করুন। মাওলানা সাআদের এ সব আপত্তিকর মন্তব্যের জন্য দারুল উলুম দেওবন্দসহ বিশ্ব আলেমদের কাছে তিনি চরম বিতর্কিত হয়েছেন। বিতর্কিত মাওলানা সাআদকে বাংলাদেশে আসতে দেয়া হবে না। আলেমরা দায়িত্ব নিয়ে তাকে সংশোধন করার চেষ্টা করেছেন। তিনি আলেমদের পরামর্শ গ্রহণ করে নিজের বক্তব্য সংশোধন করতে রাজি হননি। আল্লামা শাহ মুহিবুল্লাহ বাবুনগরী বলেন, দাওয়াতে তাবলিগ প্রতিষ্ঠা হয়েছে দারুল উলূম দেওবন্দ থেকে।
যারা মাওলানা সাআদের বিরোধীতাকারী আলেমদেরকে দেওবন্দি, হেফাজতি বলছে তারা গোমরাহিতে আছে।
হযরতজ্বী ইলিয়াছ (রহ.) বলে গেছেন, যদি তাবলীগ থেকে ইলম ও জিকির উঠে যায়, তাহলে দাওয়াতে তাবলিগের কাজে গোমরাহি ডুকে যাবে। অতএব সরকারের প্রতি আমার দাবি হলো, যতদিন মাওলানা সাআদ তার গোমরাহি বক্তব্য থেকে তাওবা না করবে, ততদিন তাকে বাংলাদেশে আসতে দেয়া যাবে না। টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমা আলেমদের তত্ত্বাবধানে শুরায়ি নেজামে পরিচালিত হবে। কাকরাইল মারকাজের কার্যক্রম ওলামায়ে কেরামে জিম্মাদারীতে চালু রাখতে হবে।
ওলামা মাশায়েখ বাংলাদেশের আহ্বানে আজ মঙ্গলবার রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে দাওয়াত ও তাবলীগ, মাদারেসে ক্বওমিয়া এবং দ্বীনের হেফাজতের লক্ষ্যে অনুষ্ঠিত ইসলামী মহাসম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে আল্লামা শাহ মুহিবুল্লাহ বাবুনগরী এসব কথা বলেন। আজকের মহাসম্মেলনে লাখো মুসল্লির ঢল নেমেছিল। সংগঠনের সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী আমিরের লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন। গতকাল গভীর রাত থেকেই সারাদেশ থেকে বিপুল সংখ্যক বাস যোগে সোহরাওয়ার্দী উদ্যোনের ইসলামী মহাসম্মেলনে লাখো মুসল্লি জড়ো হতে থাকেন। ভোর হতেই সোহরাওয়ার্দী উদ্যোগ কানায় কানায় ভড়ে যায়। সকাল ১০টার পর সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও আশপাশে তিল ধরার ঠাঁই ছিল না। এতে রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে প্রচন্ড যানজটের সৃষ্টি হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, হাটহাজারী মাদরাসার মহাপরিচালক মাওলানা খলিল আহমাদ কাসেমী। এতে নয় দফা ঘোষণা পাঠ করেন বেফাকের মহাসচিব মাওলানা মাহফুজুল হক।
মাওলানা জুনাই আল হাবিবের সঞ্চালনায় এতে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, আল্লামা আব্দুল হামিদ পীর সাহেব মধুপুর, আল্লামা আব্দুল রহমান হাফেজ্জী, আল্লামা নুরুল ইসলাম আদিব সাহেব হুজুর, মাওলানা ওবায়দুল্লাহ ফারুক, মাওলানা রশিদুর রহমান, আল্লামা শাইখ জিয়াউদ্দিন, আল্লামা শায়েখ সাজিদুর রহমান, মাওলানা সালাহউদ্দীন নানুপুরী, আল্লামা আব্দুল কুদ্দুস ফরিদাবাদ, আল্লামা নূরুল ইসলাম ওলিপুরী, মাওলানা আবু তাহের নদভী, মাওলানা মুহিউদ্দিন রব্বানী, মাওলানা আরশাদ রহমানি, মাওলানা মুস্তাক আহমদ, প্রিন্সিপাল মিজানুর রহমান চৌধুরী পীর সাহেব দেওনা, মাওলানা আনোয়ারুল করীম, মাওলানা মুফতি মোহাম্মদ আলী, মাওলানা মুফতি মনসুরুল হক, মাওলানা মুফতি দেলাওয়ার হোসাইন।