• সন্ত্রাসী/চাঁদাবাজি

    ছাত্রলীগ যুবলীগের চাঁদাবাজি ও ক্যাম্পাসে সশস্ত্র মহড়া: উত্তপ্ত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়

      ভাটি বাংলা ডেস্ক: ২২ অক্টোবর ২০২৪ , ৪:৪২:৫২ অনলাইন সংস্করণ

    দোকানে ছাত্রলীগ যুবলীগের চাঁদাবাজি ও ক্যাম্পাসে সশস্ত্র মহড়াকে কেন্দ্র করে রাত থেকেই উত্তপ্ত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি)।

     

    গতকাল রোববার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে স্থানীয় এক দোকানে হামলা, ককটেল বিস্ফোরণ ও ভাঙচুরকে কেন্দ্র করে হঠাৎ উত্তপ্ত হয়ে উঠে ক্যাম্পাস।

    জানা যায়, স্থানীয় যুবলীগ নেতা হানিফের লোকজন সাউথ ক্যাম্পাসের পাশে নতুন তৈরি একটি দোকানে চাঁদা দাবি এবং চাঁদা না দেওয়ায় কয়েকদিন হলো দোকানীকে হুমকি দিয়ে আসছিল।

     

    পরে ঘোষণা দিয়ে দোকানে হামলা ও ভাঙচুর করে। এরপর ক্যাম্পাসে ঝটিকা মিছিল বের হয়। এসময় তাদের হাতে দেশিয় অস্ত্র ও বিস্ফোরক দ্রব্য ছিল বলে জানায় কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী। ওই দোকানের পাশে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটালে আতঙ্কিত হয়ে উঠে আশেপাশে অবস্থান করে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা।

    পরে সাধারণ শিক্ষার্থীদের একটি দল বের হয়ে আসলে তারা হামলা করে। এসময় অন্তত চারজন শিক্ষার্থী আহত হয়।

     

    আহত শিক্ষার্থীরা হলেন, আইএমল বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের ইয়াসিন আরাফাত, আরবি বিভাগের আরবি বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের নাজমুল হাসান, লোক প্রশাসন বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের মোনায়েম শরীফ, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের আব্দুল্লাহ আল নোমান। পরে খবর ছড়িয়ে পড়লে ভোরে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা একত্রিত হয়ে যুবলীগ নেতা হানিফের ওয়াই-ফাই অপারেটিং অফিস ভাঙচুর করে। অফিসের পাশে থাকা খামার থেকে ৪টি গরু নিয়ে গিয়ে ক্যাম্পাসের জিরো পয়েন্টে জব্দ করে রাখে। তবে ঘটনা স্বাভাবিক হলে শিক্ষার্থীরা গরুগুলো ছেড়ে দেয়।

     

    সকাল সাড়ে ৭টার দিকে স্থানীয় ওই যুবলীগ নেতা হানিফের লোকজন এলাকায় মাইকিং করে স্থানীয় লোক জড়ো করে পুলিশ প্রশাসনের ক্যাম্পাস প্রবেশে বাধা সৃষ্টি করে। প্রক্টরের নেতৃত্বে জিরো পয়েন্ট থেকে রেলক্রসিং এলাকায় মিছিল নিয়ে গেলে হানিফের লোকজন জায়গা ছেড়ে পালিয়ে যায়। এরপর প্রক্টর ও স্থানীয়দের মধ্যস্ততায় পরিস্থিতি স্বভাবিক হয়।

    এর আগে পুলিশের অনুপস্থিতির বিষয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে ফোনে পুলিশ কর্মকর্তার প্রতি ক্ষোভ ঝারতে দেখা যায় প্রক্টর অধ্যাপক তানভীর মোহাম্মদ হায়দার আরিফকে।

    উপস্থিত শিক্ষার্থীরা জানান, বিশ্ববিদ্যালয়কে স্থানীয় সাধারণ বাসিন্দাদের ভুল বুঝিয়ে জিম্মি করে নিজের ব্যবসা টিকিয়ে রাখছে যুবলীগ নেতা হানিফ। সরকার পতনের পরেও সে থেমে নাই। এলাকার সাধারণ মানুষকে ব্যবহার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করতে চায় সে। আমরা আর এটা সহ্য করবো না। এসময় শিক্ষার্থীরা হানিফ গংয়ের সদস্যদের গ্রেফতার না করা হলে চট্টগ্রাম অচল করে দেয়ার ঘোষণাও দেন।

     

    প্রক্টর তানভীর মোহাম্মদ হায়দার আরিফ বলেন, আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছি। অ্যাপায়ন দোকানের মালিক কয়েকদিন আগেই হুমকির শিকার হয়ে থানায় অবগত করেন। কিন্তু প্রক্টর অফিস হামলার আগে এসম্পর্কে কিছুই জানতো না। খবর পেয়েই আমরা শিক্ষার্থীদের কাছে ছুটে এসেছি।

     

    এ বিষয়ে হাটহাজারী থানার ওসি হাবিবুর রহমান বলেন, শিক্ষার্থীরা যে অসহযোগিতার অভিযোগ করছে সেটা সঠিক নয়। আমরা ৬টা ১৮ মিনিটে খবর পেয়েছি এবং ৬টা ২৬ মিনিটে রেল ক্রসিংয়ের এখানে উপস্থিত হয়ে স্থানীয়রা উত্তেজিত হয়েছিল তাদেরকে নিবৃত্ত করার চেষ্টা করেছে। যাতে শিক্ষার্থীদের সাথে তাদের কোন ঝামেলা না হয়। আর আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম স্বাভাবিক করার জন্য সবরকম সহযোগিতা করেছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিস্থিতি এখন শান্ত।

    আরও খবর

    Sponsered content