• জাতীয়

    চট্টগ্রামে কমিটির বিরোধেই পূজামন্ডপে ভাঙচুর

    কতিপয় উগ্রপন্থি হিন্দুর সাথে স্থানীয়দের হাতাহাতি ও উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। এ সময় কিছু লোক জয় শ্রীরাম স্লোগানে এলাকায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করে।

      ভাটি বাংলা ডেস্ক: ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ , ১:৪৪:৫৫ অনলাইন সংস্করণ

    নগরীর ফিরিঙ্গী বাজার সেবক কলোনিতে গণেশপূজা মন্ডপে ভাঙচুরের ঘটনায় পূজা কমিটি নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে বিরোধের তথ্য পেয়েছে পুলিশ।

     


    শনিবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে কিছু লোক পূজামন্ডপে ভাঙচুর চালায়। এ সময় গণেশের মূর্তি সামনে থাকা পূজার ঘট ও চেয়ার ভাঙচুর করা হয়। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের গণেশপূজা ছিল ওইদিন।


     

    ঘটনার প্রতিবাদে ওই এলাকায় তাৎক্ষণিক বিক্ষোভ মিছিল করেন সনাতন ধর্মাবলম্বী বিক্ষুব্ধরা। পরে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। তারা সেখানে অবস্থান নেন। সেনা সদস্যদের চারটি দল মন্দিরের বাইরে পাহারা দেয়। আর এর মধ্যেই সেখানে পূজার বাকি কাজ সম্পন্ন হয়।

    এদিকে পূজায় হঠাৎ করে ভাঙচুরের ঘটনায় বিস্ময় প্রকাশ করেন সেবক কলোনীর আশপাশের বাসিন্দারা। তারা বলছেন, সেবক কলোনীর ভেতর প্রতিবছরই বিভিন্ন পূজা হয়। সেখানে কখনো অপ্রীতিকর কিছু ঘটেনি। কারা কেন পূজায় ভাঙচুর করেছে তা নিয়ে রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে।

    এ বিষয়ে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিন পুলিশের দক্ষিণ বিভাগের উপ-কমিশনার মো. লিয়াকত আলী খান বলেন, ভাঙচুরের খবর পেয়েই সেখানে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ছুটে যায়।

     


    পরে পূজার বাকি আনুষ্ঠানিকতা শেষ হয়। কারা কেন ভাঙচুর করেছে তার তদন্ত শুরু হয়েছে।


     

    প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, পূজা কমিটি নিয়ে নিজেদের মধ্যে বিরোধের কারণে এমন ঘটনা ঘটেছে। কারা এই ঘটনায় জড়িত তাদের চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে। তিনি বলেন, নগরীর আর কোথাও কোন সমস্যা হয়নি, শান্তিপূর্ণভাবে গণেশপূজা শেষ হয়েছে।

    অপরদিকে নগরীর মোমিন রোডে শুক্রবার রাতে সংগঠিত অপ্রীতিকর ঘটনারও শান্তিপূর্ণ সমাধান হয়েছে বলে জানিয়েছেন নগর পুলিশ কর্মকর্তারা।

     


    ওই রাতে গণেশমূর্তি পরিবহনকালে কদম মোবারক এতিম খানা ভবনের তৃতীয় তলা থেকে পানি মারার অভিযোগে কতিপয় উগ্রপন্থি হিন্দুর সাথে স্থানীয়দের হাতাহাতি ও উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। এ সময় কিছু লোক জয় শ্রীরাম স্লোগানে এলাকায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করে। এতে দুই পক্ষ মুখোমুখি অবস্থানে চলে আসে।


    খবর পেয়ে তাৎক্ষণি সেনবাহিনী, পুলিশসহ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষকারী বাহিনীর সদস্যরা সেখানে ছুটে যান। রাতেই ওই ঘটনার প্রতিবাদে শনিবার চেরাগীর মোড়ে বিক্ষোভ সমাবেশ আয়োজন করে। সেখানে কয়েকজন যুবককে মারধরের অভিযোগ করা হয়।

    এই প্রেক্ষিতে পুলিশ কমিশনার হাসিব আজিজ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। পরিদর্শনকালে তিনি ঘটনার সাথে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন। এ সময় তিনি সবাইকে ধর্মীয় স¤প্রীতি বজায় রেখে দল-মত, ধর্ম-বর্ণ ও পেশা নির্বিশেষে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে একটি বাসযোগ্য, সুন্দর ও শান্তিপূর্ণ মহানগরী গড়ে তোলার আহ্বান জানান।

    তিনি বলেন, ধর্মীয় সম্প্রীতির দিক থেকে চট্টগ্রামের আলাদা ঐতিহ্য আছে। এই ঐতিহ্য ধরে রেখে সম্প্রীতির বন্ধনে আবদ্ধ হতে হবে। পুলিশ কমিশনারের আহ্বানে সারা দিয়ে বিক্ষোভকারীরা তাদের কর্মসূচি শেষ করেন। আর মধ্যদিয়ে ভুল বুঝাবুঝির অবসান হয়।

    তার আগে উপ-কমিশনারের অফিসে পূজা কমিটির নেতা, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধি ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের সাথে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে সবাই শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখার অঙ্গিকার করেন।

    আরও খবর

    Sponsered content