আপাতত ভারতই হাসিনার ‘আশ্রয়স্থল’ : জয়

আপাতত নয়াদিল্লিতেই থাকছেন বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ডয়চে ভেলেকে দেয়া একটি সাক্ষাৎকারে হাসিনা-পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয় বলেছেন, ‘ভারত থেকে অন্য কোথাও যাওয়ার পরিকল্পনা নেই তার।’

বস্তুত, মঙ্গলবার নয়াদিল্লিতে সর্বদলীয় বৈঠকের পর বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের দেয়া বার্তায় ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর ইঙ্গিত দিয়েছেন, রাজনৈতিক আশ্রয়ের নির্দিষ্ট সুরাহা না-হওয়া পর্যন্ত ভারতেই থাকবেন হাসিনা। আপাতত হাসিনার ব্রিটেনে যাওয়ারও সম্ভাবনা নেই। কারণ, সে দেশের অভিবাসননীতি অনুযায়ী অন্য দেশ থেকে ব্রিটেন সফরে গিয়ে কেউ রাজনৈতিক আশ্রয় চাইতে পারেন না। এর মধ্যে হাসিনা-পুত্র সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘তিনবারের মতো আমাদের পরিবারের বিরুদ্ধে ক্যু হলো। তৃতীয়বারের মতো সব কিছু হারিয়ে বিদেশে থাকতে হলো।’ তিনি আরো বলেন, আমি আর মা বাদে পরিবারের সবাই অনেক দিন ধরে বিদেশে আছেন। আমরা এখানে (বিদেশে) সেটল্‌ড। আমাদের এখানে জীবনের কোনো অসুবিধা নেই। আমরা এখানে থাকতে অভ্যস্ত।’

জয় ওই সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, তার মা হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দেয়ার ২৪ ঘণ্টা আগে সিদ্ধান্ত নিয়ে নিয়েছিলেন। জয় বলেন, ‘আমরা শুধুমাত্র জানতাম যে তিনি ঘোষণা দেবেন (করবেন) যে তিনি পদত্যাগ করছেন।

সংবিধান অনুযায়ী, একটি ট্রানজিশন অফ পাওয়ার হয়, সেটাই ছিল তার প্ল্যান (পরিকল্পনা)। তবে যখন তারা (আন্দোলনকারীরা) গণভবনের দিকে মার্চ শুরু করল, তখন আমরা ভয়ে বললাম যে, আর সময় নেই। তোমায় (হাসিনা) এখনই বেরিয়ে যেতে হবে।’’

কোটা সংস্কার আন্দোলনের মধ্যে সোমবার দুপুরে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে বোন শেখ রেহানাকে নিয়ে ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন হাসিনা। তার ছেলে জয় সংশ্লিষ্ট সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, ভারত থেকে কোথায় যাবেন হাসিনা, সে নিয়ে এ পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনা ভালো আছেন। এখন দিল্লিতে আছেন। আমার বোন তার কাছে আছেন। আমার মামাতো বোন দিল্লিতে থাকেন। তিনিও (হাসিনা) ভালো আছেন। তবে তার খুবই মনখারাপ।’

জয় আরো বলেন, ‘তিনি (হাসিনা) খুবই দুঃখিত যে দেশের জন্য তার বাবা জান (প্রাণ) দিয়েছেন। পুরো পরিবার জান (প্রাণ) হারিয়েছেন।

যে দেশের জন্য তিনি জেল খেটেছেন, পরিশ্রম করেছেন, এত উন্নতি করেছেন, সেই দেশের মানুষ তাকে এভাবে অপমান করে বের করে দেবে, তার উপর আক্রমণ করতে যাবে, এটা আমরা কেউই কল্পনা করতে পারিনি।’
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা