সুনামগঞ্জের বিশ্বম্ভরপুর উপজেলায় সমন্বিত ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে কৃষি যান্ত্রিকীকরণ প্রকল্পের আওতায় সরকারি ভর্তূকিতে কৃষকদের জন্য বরাদ্দকৃত ধান কাটার মেশিন নিয়ে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে উপজেলা কৃষি অফিসার নয়ন মিয়ার বিরুদ্ধে।
বিশ্বস্থ সূত্রে জানা যায়, কাগজেপত্রে কৃষকের নামে বরাদ্দকৃত কম্বাইন্ড হারভেস্টার ধান কাটার মেশিন উপকারভোগী কৃষককে না দিয়ে দেওয়া হয় চেয়ারম্যান ও প্রভাবশালীদের কে। এতে করে কৃষকরা শুধু বঞ্চিতই নন বরং রীতিমতো প্রতারিত হচ্ছেন দিনের পর দিন। এ কাজে সহায়তা করে স্থানীয় মধ্যস্বত্তভোগী দালালচক্র। অভিযোগে প্রকাশ উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের আলীপুর গ্রামের কৃষক আতাউর রহমানের নামে ২০২১-২২ অর্থ বছরে একটি কম্বাইন হারভেস্টার অনুমোদন হয়।
কিন্তু তার চাহিদামতো মেশিন না পেয়ে তিনি তা গ্রহন করেননি। অথচ আতাউর রহমানের নামে বরাদ্দকৃত মেশিনটি উত্তোলন করা হয়েছে। এ বিষয়ে আতাউর রহমানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন,আমার নামের মেশিনটি কে নিয়েছে বা ব্যবহার করছে আমি জানিনা। আমি কোন চুক্তিপত্রে সই স্বাক্ষর করিনি।
তবে এতটুকু জানি কাগজেপত্রে একজনের নামে বরাদ্দ দেখানো হলেও বাস্তবে কর্মকর্তাদের সাথে যোগসাজশে মেশিন ব্যবহার করছে অন্যজন। অফিস কর্তৃক বিতরনকৃত তালিকায় দেখা যায় একই পরিবারের পিতাপুত্র ও চাচার নামেও রয়েছে মেশিন। কাগজেপত্রে মেশিন গ্রহন করলেও বাস্তবে তাদের কাছে নেই কোন মেশিন। অফিসের কাগজেপত্রে দেখা গেছে ফতেপুর ইউনিয়নের খিরধরপুর গ্রামের কৃষক শাহজামালের নামে একটি মেশিন বিতরন করা হয়েছে বাস্তবে তার কাছে আদৌ কোন মেশিন দেখা যায়নি।
ইউনিয়নের রাজিনপুর গ্রামের গুল আহমদ এর নামে কাগজেপত্রে একটি মেশিন বিতরন করা হয়েছে। বাস্তবে তার হেফাজতেও কোন মেশিন পাওয়া যায়নি। জানতে চাইলে গুল আহমদ বলেন,আমার মেশিন কোথায় আছে আমি তা পরে জানাবো। এছাড়াও শুধুমাত্র প্রত্যয়নের বিনিময়ে উত্তোলন করা হচ্ছে সরকারি ভর্তুকির টাকা। কৃষি অফিসার বিল ভাউচারে স্বাক্ষর করেন কোম্পানীর কাছ থেকে ৮-১০ লক্ষ টাকা ঘুষ হাতিয়ে নিয়ে। সম্প্রতি ইউনিয়নের বসন্তপুর গ্রামের কৃষক মোঃ রফিক মিয়ার নামে বরাদ্দকৃত হারভেষ্টার মেশিন নিয়ে কৃষি অফিসার নয়ন মিয়ার দুই নম্বরী কার্যক্রমের প্রতিবাদে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে থলের বিড়াল বেরিয়ে পড়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সহ সংশ্লিষ্ট দপ্তর প্রধান বরাবরে লিখিত অভিযোগ করেছেন ঐ কৃষক। অভিযোগের সূত্র ধরে বেরিয়ে আসছে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। ভুক্তভোগীরা অফিসার নয়ন মিয়ার দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি দাবি করেন। অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চেয়ে নয়ন মিয়ার মুঠোফোনে দুদিন ধরে একাধিকবার কল করেও ফোন রিসিভ না করায় তার বক্তব্য জানা যায়নি। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিমল চন্দ্র সোম বলেন,অভিযোগ শুনেছি তৎপ্রেক্ষিতে তদন্ত কমিটিও গঠন করে দিয়েছি। শেষ পর্যন্ত বিষয়টি কোনদিকে মোড় নেয় সেদিকে দৃষ্টি এখন সকলের।