কুলেন্দু শেখর দাস, সুনামগঞ্জ: ১৯ ডিসেম্বর ২০২৩ , ৬:২৩:০৪ অনলাইন সংস্করণ
১৬ই ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবসে সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার ৫নং সরমঙ্গল ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্সে জাতীয় পতাকা উত্তোলন না করায় মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের মানুষজন সংক্ষুব্ধ হয়ে দিরাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
সোমবার দুপুরে ইউনিয়নের সরমঙ্গল গ্রামের মৃত সিবাজ উদ্দিনের ছেলে নজির আহমদ এ অভিযোগটি দায়ের করেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়,গত ১৬ই ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবসে উপজেলার ৫নং সরমঙ্গল ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্সে পরিষদের চেয়ারম্যান ও রাজাকার পূত্র মোয়াজ্জেম হোসেন জুয়েল জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেননি। তিনি বর্তমান পরিষদে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই প্রতিদিনতো নয়ই, বরং সরকারি কোন দিবসেও ত্রিশখাল শহীদ ও দুলাখ মাবোনের ইজ্জতের বিনিময়ে অর্জিত লাল সবুজের পতাকার এই বাংলাদেশে তিনি স্বাধীনতা বিরোধী শক্তির উত্তরসূরী বলেই জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেননি এমন ঘটনায় সংক্ষুব্ধ হয়েই তিনি এ অভিযোগটি দায়ের করেন।
অভিযোগে আরও জানা যায়, সরকারি নির্দেশনা উপেক্ষা করে বর্তমান চেয়ারম্যান তার মনগড়াভাবে পরিষদকে চালিয়ে যাচ্ছেন, যা অত্যন্ত গর্হিত কাজ বলে মনে হয়। পরিষদের অনেক সাবেক ও বর্তমান ইউপি সদস্য এবং এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, বিগত পরিষদগুলো দেশের Í
বিশেষ দিবস আসলে পরিষদের সদস্যদের নিয়ে মিটিং করে দিবসটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হতো।
কিন্তু রাজাকার পুত্র চেয়ারম্যান মোয়াজ্জেম হোসেন জুয়েল নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে পরিষদের সদস্যদের সাথে কোন রকম আলাপ আলোচনা কিংবা মিটিং না করেই তিনি একক সিদ্ধান্তে পরিষদের সকল কার্যক্রম পরিচালিত করে থাকেন।
যা আমরা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের একজন সন্তান হিসেবে আমাদেরকে ব্যথিত করে, এতে আমরা সংক্ষুদ্ধ হয়েছি। ইতিমধ্যে জাতীয় পতাকা উত্তোলন না করার ছবি ও ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে বলে তিনি অভিযোগপত্রে উল্লেখ করেন।
তিনি আরও উল্লেখ করেন, সুনামগঞ্জের প্রখ্যাত ইতিহাসবিদ প্রয়াত বজলুল মজিদ খসরু রচিত ‘রক্তাক্ত ৭১ সুনামগঞ্জ’ নামক বইয়ের ২০১ পৃষ্ঠায় দিরাই থানার রাজাকারদের তালিকার ৫৭নং-এ তার পিতা আব্দুল মতলিব মিয়ার নাম রাজাকার হিসেবে রয়েছে। সম্ভবত তার পিতার মতো বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধি শিবিরে থাকায় এসব দিবস পালন না করে এড়িয়ে যাচ্ছেন।
চেয়ারম্যান এক সময় শিবিরের সাথে যুক্ত ছিলেন, বর্তমান তিনি বিএনপি করেন। কিছু সংখ্যক রাজাকার, আল-বদর ও তাদের সহযোগি দোসররা এখনও স্বাধীনতার বিরোধীতায় লিপ্ত রয়েছে বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
এ ব্যাপারে সরমঙ্গল ইউপি চেয়ারম্যান মোয়াজ্জেম হোসেন জুয়েলের সাথে একাধিকবার মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ না করায় বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।
এ ব্যাপারে ব্যাপারে দিরাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মাহমুদুর রহমান খোন্দকার অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমরা তদন্ত করে তদন্ত রিপোর্টের উপর ভিত্তি করে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।