খন্দকার শহিদুল ইসলাম (জামালগঞ্জ উপজেলা প্রতিনিধি) ১২ ডিসেম্বর ২০২৩ , ১০:৫৫:০৭ অনলাইন সংস্করণ
দেশের নামকরা কম্পানির পরিবেশকের সাইনবোর্ড ব্যবহার করে কৌশলে মাদক কারবার করে আসছেন সুনামগঞ্জ জেলার জামালগঞ্জ উপজেলার পলক গ্রামের শামসুল হক শামসু। মেঘনা গ্রুপের বিভিন্ন পণ্যের প্যাকেটের ভিতর গাঁজা-নাসির উদ্দিন বিড়িসহ ভারতীয় মদ চিনি স্থানীয় বাজারগুলোতে পাচার করে আসছেন তিনি। গত ৮ জুলাই ২০২৩ইং কোম্পানির প্যাকেটে মাদক ভরে পাচারকালে শামসুকে গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ। পরে তাঁকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।
জামালগঞ্জ থানা পুলিশ ও জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) সূত্রে জানা গেছে, জামালগঞ্জের সাচনাবাজার ইউনিয়নের ফলক গ্রামের শামসুল হক ওরফে শামসু দীর্ঘদিন ধরে ভারত থেকে চোরাইপথে নানা ধরনের মাদক দেশে এনে ব্যবসা করে আসছিল। উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারসহ কিশোরগঞ্জ-ভৈরবেও এসব মাদক পাচার করছিলেন তিনি। স্থানীয় সব বাজারে রয়েছে তাঁর নিজস্ব এজেন্ট। তাঁর বিরুদ্ধে অন্তত ১০টি মাদকের মামলা রয়েছে।
মাদকসহ গ্রেপ্তার হয়ে জেলও খেটেছেন অসংখ্যবার এবং এক মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে দীর্ঘদিন জেল হাজতে ছিলেন,টাকার জোরে হাইকোর্ট থেকে জামিন নিয়ে এসে আবারও পুরানো কায়দায় ব্যবসায় কৌশল পালটিয়ে ব্যবসা করে আসছেন। কিন্তু প্রতিবারই অদৃশ্য শক্তির কারণে জামিনে ছাড়া পান তিনি। এ কারণে স্থানীয়রা তাঁকে ‘বুঙ্গা শামসু’ বলে ডাকেন। এই নামেই তিনি পুরো উপজেলায় পরিচিত।
এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দীর্ঘ দুই দশক ধরে ভারত থেকে চোরাপথে গাঁজা, মদ, ইয়াবা, নাসির উদ্দিন কমলা চিনি বিড়িসহ সকল ধরণের মাদকদ্রব্য এনে বিক্রি করছিলেন বুঙ্গা শামসু। কয়েক বছর আগে তিনি মাদক কারবারের গতানুগতিক কৌশল পরিবর্তন করে মেঘনা গ্রুপ, সিঙ্গার বাংলাদেশসহ প্রসিদ্ধ কম্পানির পরিবেশক হন। জামালগঞ্জ উপজেলার মেঘনা গ্রুপসহ কয়েকটি কম্পানির পরিবেশক হয়ে কৌশলে নতুন করে মাদক কারবার শুরু করেন। প্রসিদ্ধ কম্পানির প্যাকেটের ভেতরে মালপত্রের সঙ্গে কৌশলে এসব মাদক স্থানীয় বাজারগুলোতে এজেন্টদের মাধ্যমে বিক্রি করতেন তিনি,এজেন্টগণ হলেন পলক গ্রামের সুলেমান, সাচনা গ্রামের আব্দুল জব্বার,ও রহিমপুর গ্রামের হিমাংশু রায়। জানা গেছে, স্থানীয় থানা কর্তৃপক্ষ, প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তি ও কিছু মহলকে মাসিক উৎকোচ দিয়ে কৌশলে মাদক কারবার করে আসছেন শামসু।মাদক কারবার করে সুলেমান বর্তমানে আঙুল ফুলে কলাগাছ বনে গেছেন। প্রায় ২কোটি টাকা ব্যায়ে তার বাড়িতে উঠতে যাচ্ছে বিশাল অট্টালিকা। এই অট্টালিকার অর্থের উৎস কি?
গ্রামের রিপন দোলা মিয়া৷ ফকির শাহজাহান সহ একাধিক জনকে জিজ্ঞেস করে জানা যায়, তার একমাত্র ব্যবসা হচ্ছে ভারতীয় নিষিদ্ধ পন্যসামগ্রি চোরাই পথে এনে দেশের বিভিন্ন হাটবাজারে তার নিজস্ব সোর্সের মাধ্যমে বিক্রি করা। গত ১০ই ডিসেম্বর সকাল অনুমান ১১ঘটিকার সময় পার্শ্ববর্তী উপজেলা ইটনায় ৩০০ বস্তা ভারতীয় চিনি আটক এবং জামালগঞ্জ নৌ পুলিশের একটি টহল দল জামালগঞ্জ সদর ইউনিয়নের মান্নান ঘাট নদীতে দাওয়া দিলে ভারতীয় চিনিসহ নৌকা ডুবে প্রায় ২২ লক্ষ টাকার ক্ষতি সাধিত হয়েছে। এই বিষয়ে নৌ পুলিশের ইনচার্জ কে ফোন দিলে উনার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।