প্রতিনিধি ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩ , ১০:৫৭:১৪ অনলাইন সংস্করণ
সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি : সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার গৌরারং গ্রামে দিনে দুপুরে মোটর সাইকেল ছিনতাই করার অভিযোগ উঠেছে। ১৩ সেপ্টেম্বর বুধবার সন্ধ্যা ৭টায় গৌরারং গ্রামের সবুজ দাশের দোকানের সামনে সরকারী রাস্তায় এ ঘটনা ঘটে। জানা যায়,গৌরারং ইউনিয়নের আহমদাবাদ গ্রামের আতিকুর রহমান চৌধুরীর পুত্র মাহমুদ শাহাদাত চৌধুরী মাছুম (২৮) শহর থেকে বাড়ীতে ফেরার প্রাক্কালে গৌরারং গ্রামের আদম ব্যবসায়ী তারা মিয়া (৪৮) ও তার পুত্র মারুফ (২৪) তাকে মারপিটক্রমে আহত করে মোটর সাইকেলটি (যাহার ইঞ্জিন নং ১৬৭৩৪,চেসিস নং ৮০৮৬১,১৬০সিসি লাল-সাদা রং এর পালসার এনএস মোটর সাইকেল মূল্য ২ লাখ ২০ হাজার টাকা) জোরপূর্বকভাবে ছিনতাই করে নেয়। অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে অভিযুক্ত ছিনতাইকারী আদম ব্যবসায়ী তারা মিয়া (৪৮) মোটর সাইকেল ছিনতাই করার কথা অকপটে স্বীকার করে বলেন,মাহমুদ শাহাদাত চৌধুরী মাছুমের ফুফাতো ভাই শাহ আবু নাঈম এর কাছে আমার ছেলের মোটর সাইকেল ভাংচুরের ক্ষতিপূরনের ২৫ হাজার টাকা পাওনা রয়েছে। এ টাকা দেই দিচ্ছি করে ৩ মাস সময় ক্ষেপন করেছে শাহ আবু নাঈম। উক্ত শাহ আবু নাঈমের পক্ষে মাহমুদ শাহাদাত চৌধুরী সালিশে জিম্মাদার ছিল। তাই এমপি এডভোকেট পীর মিসবাহ সাহেব,বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু সুফিয়ান,জেলা পরিষদ সদস্য হোসেন আলী ও ইউপি চেয়ারম্যান শওকত আলীর নির্দেশে আমার টাকা উদ্ধারের লক্ষ্যে আমি মাহমুদ শাহাদাত চৌধুরী মাছুমের মোটর সাইকেল আটকাইয়া ইউনিয়ন পরিষদে রাখিয়াছি। ঘটনার ব্যাপারে সাবেক ইউপি সদস্য আয়না মিয়া বলেন, প্রায় দেড় মাস আগে একটি মারামারির ঘটনায় অজয়,নাহিদ ও শাহ আবু নাঈম নামে ৩ যুবকের উপর সামাজিক সালিশে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা হয়। আমি শাহ আবু নাঈমের পক্ষে ১৭ হাজার টাকা জরিমানার জিম্মাদার ছিলাম। শাহ আবু নাঈম এ টাকা না দেয়ায় তারা মিয়া নাঈমের মামাতো ভাই মাহমুদ শাহাদাত চৌধুরী মাছুমের মোটর সাইকেল আটকাইয়া রাখিয়াছে। এটা অত্যন্ত বাড়াবাড়ি বলে আমি মনে করি। কারণ টাকা পায় একজনের কাছে আরেক জনের মোটর সাইকেল আটকানোর অধিকার তাকে কে দিয়েছে আমি জানিনা। গৌরারং ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ শওকত আলী বলেন,সালিশে আমরা ৩ জনকে জরিমানা করেছিলাম। এর মধ্যে ২ জনে টাকা দিছে একজনে দেয়নি। টাকা উদ্ধারের জন্য আমি নিজেও চেষ্টা করেছি। তাই বলে কোন জিম্মাদারের মোটর সাইকেল আটক করবে তারা মিয়াকে আমি এ ধরনের কোন অনুমতি দেইনি। এছাড়া এমপি সাহেব সালিশে উপস্থিত ছিলেননা। তারা মিয়া এমপি সাহেবের নাম ভাঙ্গিয়ে অন্যায়ভাবে উনার দূর্নাম রটিয়ে যাচ্ছে। ছিনতাইকৃত মোটর সাইকেলের মালিক মাহমুদ শাহাদাত চৌধুরী মাছুম বলেন,তারা মিয়া ও তার ছেলে আমার ফুফাতো ভাই শাহ আবু নাঈমের কাছে সালিশের জরিমানার ১৭ হাজার টাকা পায় এটা সত্য কথা। সেদিনকার সালিশে আমি উপস্থিত ছিলাম এটাও সত্য। আমি তাদের টাকা পরিশোধের জন্য আমার ফুফাতো ভাইকে চাপপ্রয়োগ করে যাচ্ছি। কিন্তু তারা পিতাপুত্র উদ্দেশ্যমূলকভাবে আমার উপর হামলা করে আমার মোটর সাইকেলটি জোরপূর্বক ছিনতাই করে নিয়েছে। আমি প্রাণ বাঁচাতে গিয়ে এখনও তাদের কবল থেকে আমার মোটর সাইকেলটি উদ্ধার করতে না পেরে বাধ্য হয়ে থানাপুলিশে বিচারপ্রার্থী হয়েছি। গৌরারং গ্রামের লোকজন বলেন,তারা মিয়া আসলেই একজন মানবপাচারকারী চাঁদাবাজ সন্ত্রাসী। তার ছেলের উপর হামলার ঘটনায় সালিশের সিদ্বান্ত অনুযায়ী অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে বৈধ কোন পন্থা অবলম্বন না করে আইন হাতে তুলে নিয়ে আরেকজন নিরীহ লোককে মারপিট করে তার মোটর সাইকেল আটক করেছে। প্রকৃতপক্ষে টাকা পাবে ১৭ হাজার। অথচ সাংবাদিককে বলেছে তার পাওনা টাকা ২৫ হাজার। সালিশ হয়েছে দেড়মাস আগে অথচ সে বলছে ৩ মাস আগে। এই মিথ্যাবাদী চাঁদাবাজ সন্ত্রাসী তারা মিয়াকে গ্রেফতার করে অবিলম্বে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়া উচিত বলে আমরা এলাকাবাসী মনে করি। সুনামগঞ্জ সদর মডেল থানার ওসি ইখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী বলেন,মারপিটক্রমে মোটর সাইকেল ছিনতাই এর ঘটনায় একজনের দায়েরকৃত অভিযোগ তদন্তক্রমে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য এসআই তোরনকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। শেষ পর্যন্ত মোটর সাইকেল ছিনতাই এর ঘটনাটি কোনদিকে মোড় নেয় সেদিকে দৃষ্টি এখন সকলের।