প্রতিনিধি ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩ , ২:১৫:২২ অনলাইন সংস্করণ
সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি: সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ উপজেলার ২ সহোদরের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজী ও চাঁদাবাজ বাহিনী গঠনের দায়ে সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক ও জেলা পুলিশ সুপারের কাছে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। অভিযুক্তরা হচ্ছেন উপজেলার সাচনাবাজার ইউনিয়নের দূর্লভপুর গ্রামের মোঃ হারিছ মিয়ার পুত্র মকবুল হোসেন আফিন্দী ও রুবেল আফিন্দী। মঙ্গলবার (৫ সেপ্টেম্বর) জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের কাছে পৃথক দুটি অভিযোগ দায়ের করেছেন একই গ্রামের মৃত হাজী মোঃ রজব আলীর পুত্র মোঃ ইয়াকবীর হোসেন। অভিযোগে প্রকাশ,সাচনাবাজার হতে জামালগঞ্জ উপজেলার ভীমখালি ইউনিয়নের নোয়াগাঁও বাজার পর্যন্ত এলাকার সুরমা নদীর উভয় পাড়ে উঠানামাকৃত মালামালের এল এস সি এবং নৌযানের বার্দিং চার্জ আদায় কেন্দ্র ঘাটটি ২০২৩-২৪ সনের জন্য সর্বোচ্চ ১ কোটি ৫ হাজার টাকায় ইজারা প্রাপ্ত হন ইয়াকবীর হোসেন। বাংলাদেশ আভ্যন্তরীন নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডাবিøউটিএ) এর একজন বৈধ ইজারাদার হিসেবে যথারীতি ব্যবসা পরিচালনা করে আসাবস্থায় মকবুল হোসেন আফিন্দী ও রুবেল আফিন্দী এলাকায় একটি চাঁদাবাজ বাহিনী গঠন করে তাকে নানাভাবে হয়রানী ও ক্ষতিগ্রস্থ করার জন্য উঠেপড়ে লেগেছে। মকবুল হোসেন নিজেকে যুবলীগের নেতা পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন মহলের নাম ভাঙ্গিয়ে চাঁদা আদায় করে থাকে। বালি পাথর ব্যবসায়ী ও কোন কোন ইজারাদারদের কাছ থেকে জোরপূর্বকভাবে চাঁদা আদায় করা তার নিত্য নৈমিত্তিক ব্যাপার। তাদের বিরুদ্ধে বিআইডাবিøউটি এর সাবেক ইজারাদার শাহ মোঃ রুবেল আহমদ কর্তৃক আমলগ্রহনকারী জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত জামালগঞ্জ জোনে দায়েরকৃত সিআর ২২/২০২৩ নং মামলা বিজ্ঞ আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। পূর্বের ইজারাদার শাহ রুবেল আহমদ এর বিরুদ্ধে মকবুল হোসেন,তার চাঁদাবাজ বাহিনীর বিভিন্ন লোকজনকে বাদী করে পৃথক ৩টি হয়রানীমূলক মামলা দায়ের করলে পিবিআইসহ পুলিশের বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার তদন্তে এসব মামলা মিথ্যা বলে প্রমাণিত হয়।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়,গত ২০ আগস্ট রবিবার সন্ধ্যা ৭টা ২০ মিনিটে দূর্লভপুর বাজারস্থ ইয়াকবীর হোসেনের পরিচালিত মেসার্স আর.এস কন্সট্রাকশনের অফিসঘরে বসে থাকাবস্থায় মকবুল হোসেন আফিন্দী,তার ভাই রুবেল আফিন্দীকে সাথে নিয়ে অনধিকার প্রবেশ করে,তার কাছে ১৫ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবী করে। অন্যথায় তাকে বিনিয়োগ ছাড়াই ২৫% শেয়ার দেয়ার জন্য আদেশ প্রদান করে। চাহিতো চাঁদা এক সপ্তাহের মধ্যে প্রদান না করলে বা শেয়ারের প্রস্তাব না মানলে মকবুল,ইয়াকবীরের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সরকারী দপ্তরে একটির পর একটি হয়রানীমূলক অভিযোগ দায়ের করত: তাকে অন্যায়ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ করবে বলেও হুমকী দেয়। হুমকীর ধারাবাহিকতায় মকবুল হোসেন আফিন্দী গত ৩ সেপ্টেম্বর জেলা প্রশাসকের কাছে এবং ২৪ আগস্ট জেলা পুলিশ সুপারের কাছে নিজে বাদী হয়ে এবং ৩০ আগস্ট মোঃ মিরাজ হাসানকে বাদী সাজিয়ে জামালগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ বরাবরে উদ্দেশ্যমূলকভাবে মিথ্যা ও কাল্পনিক ঘটনা সাজিয়ে ইয়াকবীরের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করে। এসব অন্যায় ও উদ্দেশ্যমূলক অভিযোগ দায়েরের পাশাপাশি মকবুল ও তার ভাই রুবেলগং নানাভাবে ভয়ভীতি প্রদর্শনের মাধ্যমে ইয়াকবীরকে চাঁদা দিতে বাধ্য করার প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।
অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে মকবুল হোসেন আফিন্দী বলেন,ইয়াকবীর হোসেন বিআইডাবিøউটি এর নামে সুরমা নদীতে চাঁদাবাজী করছে। তার ইজারাদার হিসেবে কোন বৈধ কাগজপত্র নেই। তাছাড়া রসিদ না দিয়ে টাকা উত্তোলন করার কারণে তার বিরুদ্ধে বালি পাথর ব্যবসায়ী শ্রমিকরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলন করে। আমি এ আন্দোলনে সমর্থন দেয়ায় এবং তার বিরুদ্ধে ডিসি এসপি ও এমপির কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করায় সে আমার বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ দায়ের করছে।
তবে ইজারাদার ইয়াকবীর হোসেনের বিরুদ্ধে মকবুল হোসেনের আনীত অভিযোগের কোন সত্যতা পাওয়া যায়নি।
ইজারাদার ইয়াকবীর হোসেন বলেন,বিআইডবিøউটিএর এ পর্যন্ত যতজন ইজারাদার ছিলেন সকলের কাছেই চাঁদা দাবী করতো মকবুল ও তার বাহিনী। অতীতের ইজরাদাররাও তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ও মামলা দায়ের করেছেন। সে আসলে একজন ধূর্ত দান্দাবাজ ও চিহ্নিত চাঁদাবাজ। আমি অবিলম্বে তাকে গ্রেফতারের জন্য পুলিশ প্রশাসনের কঠোর হস্তক্ষেপ কামনা করছি।