প্রতিনিধি ১৪ ডিসেম্বর ২০২২ , ১২:৫৬:৫৮ অনলাইন সংস্করণ
আল-হেলাল: সুনামগঞ্জ জেলার নবাগত জেলা প্রশাসকের সাথে জেলা শহরে কর্মরত সাংবাদিকদের মতবিনিময় সভা সম্পন্ন হয়েছে। ১৩ ডিসেম্বর মঙ্গলবার বিকালে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক দিদারে আলম মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরী,অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোঃ জাকির হোসেন,অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা) শেখ মহি উদ্দিন। সভায় গণমাধ্যমকর্মীরা ফসলরক্ষা বাঁধে অনিয়ম, অবকাঠামোগত উন্নয়ন,অবৈধ ক্রাশার মেশিনকে আইনের আওতায় আনা,এসসি গার্লস স্কুলে ভর্তি পরিক্ষায় অনিয়ম, অপ্রয়োজনীয় অতিরিক্ত পিআইসি গঠনের নামে রাষ্ট্রীয় অর্থের অপচয় রোধ,বাঁধের কাজে কৃষি সম্প্রসারন,মৎস্য বিভাগ ও সংবাদকর্মীদের মতামত গ্রহন, গানের সম্রাট বাউল কামাল পাশাসহ জেলার ৫ প্রধান লোককবির প্রতিকৃতি ও ভাস্কর্য্য শিল্পকলা একাডেমিসহ সংশ্লিষ্ট সকল জায়গায় সাঁটানো,আশ্রায়ন ও পূণর্বাসন প্রকল্পের সকল কাজে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান,বাউল শিল্পী ও প্রতিবন্দ্বীসহ পিছিয়ে পড়াদের সম্পৃক্ত করাসহ নানা বিষয় তুলে ধরেন।
এ সময় জেলা প্রশাসক সব বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের আশ্বাস প্রদান করেন। সভায় সাংবাদিকদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন দৈনিক সুনামকণ্ঠের সম্পাদক বিজন সেন রায়, দৈনিক সুনামগঞ্জের ডাক সম্পাদক অধ্যক্ষ শেরগুল আহমেদ, দৈনিক সুনামগঞ্জের খবরের সম্পাদক পঙ্কজ দে,দৈনিক সমাচার প্রতিনিধি মো. মিজানুর রহমান মিজান,বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা বাসস’র প্রতিনিধি আল হেলাল,দৈনিক মানবকণ্ঠ প্রতিনিধি শাহজাহান চৌধুরী, দৈনিক যুগান্তর প্রতিনিধি মাহবুবুর রহমান পীর,দৈনিক সুনামগঞ্জের সময় পত্রিকার সম্পাদক মোঃ সেলিম আহমদ, দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিন প্রতিনিধি মাসুম হেলাল, দৈনিক জনকণ্ঠ প্রতিনিধি এমরানুল হক চৌধুরী,সুনামগঞ্জ রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক হিমাদ্রি শেখর ভদ্র মিঠু,আরটিভির জেলা প্রতিনিধি (পশ্চিম) বিন্দু তালুকদার, আরটিভি প্রতিনিধি (পূর্ব) শহিদনুর আহমেদ ও সাংবাদিক কে এম শহিদুল ইসলাম প্রমুখ। এসময় উপস্থিত ছিলেন সুনামগঞ্জ রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি লতিফুর রহমান রাজু,সুনামগঞ্জ প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি রওনক বখত,দৈনিক আমাদের অর্থনীতির জেলা প্রতিনিধি শাহাবুদ্দিন আহমেদ,প্রথম আলো প্রতিনিধি এডভোকেট খলিল রহমান,দৈনিক জালালাবাদ প্রতিনিধি জসিম উদ্দিন,ইনডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশন প্রতিনিধি জাকির হোসেন,দৈনিক সুনামকন্ঠ পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার আকরাম উদ্দিন, দৈনিক বাংলা প্রতিনিধি মোশাহিদ রাহাত,দৈনিক সোনালী খবর জেলা প্রতিনিধি ফরিদ মিয়া, দৈনিক বিজনেস বাংলাদেশ প্রতিনিধি দিলাল আহমদ,দৈনিক বাংলাদেশ টুডে প্রতিনিধি এ.কে মিলন,দৈনিক স্বাধীন বাংলা পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি মো. বাবুল মিয়া,ডিবিসির জেলা প্রতিনিধি আসাদ মনি,দৈনিক আমার সংবাদ প্রতিনিধি গাজী আফজাল হোসেন,দৈনিক বাংলাদেশ সমাচার প্রতিনিধি সজিব আহমেদ,দৈনিক খোলাকাগজ প্রতিনিধি আব্দুল বাছির ও দৈনিক সকালবেলা প্রতিনিধি সামিয়ান তাজুল প্রমুখ। সভায় ক্রমান্বয়ে সুনামগঞ্জ জেলায় কর্মরত প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা নিজেদের পরিচিতি জেলা প্রশাসকের কাছে উপস্থাপন করেন এবং ২০২২ সালে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থতা সম্পর্কে পরিত্রাণ এবং দ্রæত কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পরামর্শমুলক বক্তব্য রাখেন।
শুরুতে সুনামগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ শেরগুল আহমেদ জেলার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হাওড়রক্ষা বাঁধ সম্পর্কে সুস্পষ্ট মতামত প্রকাশ করেন। তিনি বলেন,বার বার হাওর রক্ষা বাঁধ নির্মাণে বরাদ্দের সিংহভাগ দূর্নীতির মাধ্যমে লুপাট করা হয়। তিনি এসময় বলেন, আমার জানামতে গত বছর ১ শত ২০ কোটি টাকা বরাদ্দ প্রদান করা হয়। প্রতি বছর যেহেতু বাঁধ নির্মাণের জন্য চাহিদা মোতাবেক কোটি টাকার উপরে বরাদ্দের সুপারিশ করা হয়। বাঁধ হয়তো আংশিক বা সামান্য মেরামতের উপযোগী হয়ে যায়। সেখানে প্রতি বছর শত কোটি টাকার বরাদ্দ মানেই দূর্নীতির আশ্রয় নেওয়া হচ্ছে বলেই আমি মনে করি। সরকারের টাকা অপচয়,অপ্রয়োজনীয় বাঁধ নির্মাণ রোধ,টেকসই বাঁধ নির্মাণ ও সঠিক বরাদ্দের বিষয়টি তদারকি করার অনুরোধ জানানো হয় জেলা প্রশাসককে।
দৈনিক সুনামগঞ্জ প্রতিদিন পত্রিকার বার্তা সম্পাদক আল-হেলাল মারাত্মক দুর্যোগ ও প্রতিকূলতার মাঝেও এবার সুনামগঞ্জ জেলায় বোরো ধানের বাম্পার ফলন ও মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি এই দুটি প্রাকৃতিক নেয়ামতকে জেলাবাসীর জন্য সুসংবাদ হিসেবে উল্লেখ করে বলেন,পাহাড়,সমতল ও হাওরের সুনামগঞ্জ এই ৩ ভাগে বিভক্ত জেলায় পাহাড়ী সুনামগঞ্জ এলাকায় কোন বাঁধের প্রয়োজন নেই। অথচ প্রতিবছরই যেখানে আদৌ কোন বোরো ফসল নেই সেসব এলাকায় বাঁধের নামে অপ্রয়োজনীয় পিআইসি গঠন করে সরকারের টাকা লুটপাট করা হয়। সকলের সাথে পরামর্শ করে বাঁধের প্রকল্প গ্রহনের জন্য তিনি আহবাণ জানান।
সভায় সাংবাদিকদের কাছে সকল ভাল কাজের সহযোগিতা চেয়ে সুনামগঞ্জের নবাগত জেলা প্রশাসক দিদারে আলম মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরী বলেন,একটা বড় দুর্যোগের মধ্যে দিয়ে জেলাবাসীকে পথ চলতে হচ্ছে। জেলা প্রশাসন সবকিছু যে ঠিকমতো পূণর্বাসনের আওতায় নিয়ে আসতে সক্ষম হয়েছে তা নয়। তবে অনেক কাজ হয়েছে। এখন যেখানে যা ঘাটতি রয়েছে এখন সেসব জায়গায় আমরা কাজ করতে চাই। আমাদের উদ্দেশ্য হতে হবে একটাই আমরা সকলে মিলে জেলাবাসীর সেবা করবো। ঐক্যবদ্ধভাবে ৪১ এর রুপকল্প বাস্তবায়নে সকলকে নিয়ে কাজ করতে চাই।