• সারাদেশ

    প্রদীপ রায়, কামাল ও মেয়র বিশ্বজিৎ সহ ৭৭জনকে আসামি করে দ্রুত বিচার আইনে মামলা

      প্রতিনিধি ২০ নভেম্বর ২০২২ , ৩:১৭:৩৮ অনলাইন সংস্করণ

    স্টাফ রিপোর্টারঃ গত ১৪ নভেম্বর দিরাই আওয়ামী লীগের সম্মেলনে বিবদমান দু’গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনার ১ সপ্তাহ পর সুনামগঞ্জের দ্রুত বিচার আদালতে মামলা হয়েছে। প্রদীপ গ্রুপের প্রধান সদ্য ঘোষিত  উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ রায়, উপজেলা সভাপতি কামাল উদ্দিন ও পৌরসভার মেয়র  বিশ্বজিৎ রায়, জিয়াউর রহমান লিটন ও কলিম উদ্দিন সহ ৭৭ জনের নামে এ মামলাটি হয়।

    আজ রবিবার দ্রুত বিচার আইনে আদালতে দায়ের করা নালিশি মামলার বাদী মোশাররফ গ্রুপের অনুসারী চন্ডিপুর গ্রামের মশাহিদ মিয়ার ছেলে যুতিমা মিয়া।

    গত ১৪ নভেম্বর দিরাই আওয়ামী লীগের সম্মেলনে বিবদমান দু’গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনার ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে দেশ-বিদেশে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দেয়। সংঘর্ষের সময় একজন ডিলের আঘাতে নিহতে হলে পরবর্তীতে পুলিশ দাবি সে স্টোক করে স্বভাবিক মৃত্যু বরণ করে! দুইপক্ষের তুমুল সংঘর্ষের সময় কেন্দ্রীয় নেতাসহ স্থানীয় এমপি ও জেলা নেতৃবৃন্দকে বসার চেয়ার মাথায় দিয়ে আত্মরক্ষা করতে দেখা যায়, পুলিশ প্রহরায় নেতৃবৃন্দ পাশের বিল্ডিংয়ে আশ্রয় নেন এসময় স্টেইজের নিচ থেকে এবং সম্মেলন স্থলের আশেপাশের বিল্ডিংয়ের ছাদ থেকে প্রদীপ রায় গ্রুপের লোকেরা দেশীয় অস্ত্র দিয়ে নিচের নিজ অনুসারিদের সহায়তা করতে দেখা যায়। প্রিন্ট, অনলাইন ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় কল্যাণে ঘটনা ভাইরাল হলে আওয়ামীলীগের দলীয় সাধারণ সম্পাদক এবিষয়ে ব্রিফ করতে বাধ্য হোন।

    মামলার প্রধান আসামি দিরাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ রায় কুলঞ্জ ইউনিয়নের জারলিয়া ঘোড়ামারা বিলের ট্রিপল হত্যা আমলার অন্যতম আসামি এবং গ্রেফতার হয়ে হাজতবাস করেছেন এছাড়ও ভাটিপাড়া রুহেল মিয়া হত্যা মামলারও আসামি। সদ্য ঘোষিত উপজেলা সভাপতি কামাল উদ্দিনও ভাটিপাড়া রুহেল মিয়া হত্যা মামলার চার্জভূক্ত ২৮ নং আসামি এবং উক্ত মামলায় হাজতবাস করে জামিনে আছেন বলে জানা গেছে।

    উল্লেখ্যঃ দলীয় সূত্রে জানা যায় ১৯৯৮ সালে সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুস ছামাদ আজাদ ও তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত গ্রুপের মাঝে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন উপজেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান কমিটির সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ রায়ের ছোট ভাই যুবলীগ নেতা নান্টু রায়। নান্টু রায় হত্যার পর মোশাররফ মিয়া বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করলে সেই মামলার অন্যতম আসামি ছিলেন সামাদ আজাদ গ্রুপের অনুসারী কলিম উদ্দিনসহ ২৭ জন। সামাদ আজাদ এর মৃত্যুর পর বিবাদমান দুটি গ্রুপ সুরঞ্জিত-মতিউর (জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি) গ্রুপে রুপ নেয়। এ দুই গ্রুপের দ্বন্দ্বে ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে দিরাই উপজেলার জারলিয়া জলমহাল দখল নিয়ে সংঘর্ষ গুলিবিদ্ধ হয়ে মতিউর অনুসারী যুবলীগ নেতা বর্তমান কুলঞ্জ ইউপি চেয়ারম্যান একরার হোসেন গ্রুপের তিন ব্যক্তি নিহত হয়। তিন খুনের মামলায় সুরঞ্জিত গ্রুপের নেতা প্রদীপ রায়, তৎকালীন মেয়র ও উপজেলা চেয়ারম্যানসহ ৩৯ জনকে আসামী করা হয়।

    এদিকে, সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের মৃত্যুর পর তার অনুসারী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ রায় ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ মিয়ার মধ্যে দলের নেতৃত্ব নিয়ে দীর্ঘ দিনের সম্পর্কের বিচ্ছেদ ঘটে। বিবাদমান দুই নেতার অনুসারীরা বিগত কয়েক বছর ধরে আলাদা নির্বাচন ও দলীয় কর্মসূচি পালন করেন। সর্বশেষ গত ১৪ নভেম্বর দিরাই উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রদীপ- মোশাররফ গ্রুপের সংঘর্ষ মঞ্চে বসা কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দসহ উভয়পক্ষের অর্ধশতাধিক নেতা কর্মী আহত হন।

    এ ঘটনায় গত বৃহস্পতিবার দুপুরে প্রদীপ রায়ের অনুসারী কলিম উদ্দিন বাদী হয়ে দিরাই পৌরসভার সাবেক মেয়র মোশাররফ মিয়াকে প্রধান আসামী করে ৮১ জনের নামে সুনামগঞ্জ দ্রুত বিচার আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। ঘগটনার ১ সপ্তাহ পর প্রদীপ রাইয়কে প্রধান আসামি করে সাবেক মেয়র মোশাররফ মিয়ার ভাতিজা যুতিমা মিয়া ৭৭ জনকে আসামি করে আজ রবিবার মামলা দায়ের করেন।

    আরও খবর

    Sponsered content