প্রতিনিধি ১০ অক্টোবর ২০২২ , ৯:১১:২৫ অনলাইন সংস্করণ
হুমায়ূন কবীর ফরীদি, জগন্নাথপুর (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধিঃ জগন্নাথপুর এর মামব পাচারকারী চক্রের সদস্য আবুল(৫০) ও (৪০)কে গ্রেপ্তার করেছে থানা পুলিশ।
থানা সুত্রে জানাযায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ মিজানুর রহমান এর দিক নির্দেশনায় অত্র থানার একদল পুলিশ ৯ ই অক্টোবর বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে হবিগঞ্জ জেলা সদরের বাস স্ট্যান্ড সংলগ্ন মোহনপুর নামক এলাকা থেকে মানব পাচারকারী চক্রের সদস্য জগন্নাথপুর থানার মামলা নং-০৫, তারিখঃ-০৩/১০/২০২২ইং, ধারাঃ-মানব পাচার আইন ২০১২এর ৬(২)/৭/৮(১)(২)/১০(১) তৎসহ ৩০২/৩৪ এর এজাহার নামীয় আসামী জগন্নাথপুর উপজেলার শ্রীধরপাশা গ্রাম নিবাসী মৃত মোঃ আছদ্দর আলীর ছেলে মোঃ আবুল মিয়া(৫০) ও তাঁর স্ত্রী মোছাঃ আছমা বেগম(৪০) কে গ্রেপ্তার করেন। এসময় গ্রেপ্তারকৃত আসামীদ্বয় এর নিকট থেকে ১টি ভ্যানিটি ব্যাগ এবং ব্যাগের ভিতরে রাখা ৪ লাখ ১৫ হাজার,৫ শত টাকা,৭টি মোবাইল ফোন,১টি এটিএম কার্ড ২টি ব্যাংক চেক ও ১টি পাসপোর্ট জব্দ করা হয়েছে।
গ্রেপ্তারের সত্যতা নিশ্চিত করে জগন্নাথপুর থানার এসআই মোঃ জিন্নাতুল ইসলাম তালুকদার বলেন, গ্রেপ্তারকৃত মানব পাচারকারী চক্রের সদস্য জগন্নাথপুর থানার এজাহার নামীয় আসামী আবুল মিয়া ও আছমা বেগমকে আজ ১০ ই অক্টোবর আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, অসচ্ছল পরিবারে স্বচ্ছলতা ফিরিয়ে আনার লক্ষে জমিজমা বিক্রি করে সোনার হরিণের সন্ধানে স্বপ্নের শহর ইতালি যাওয়ার উদ্দেশ্য সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার শ্রীধরপাশা (পশ্চিম হাটি) গ্রাম নিবাসী হত-দরিদ্র কৃষক মোঃ তরিকুল ইসলাম এর ছেলে একওয়ান ইসলাম (১৯) প্রায় পনের মাস আগে একই গ্রাম নিবাসী মোঃ আবুল মিয়ার ছেলে মাফিয়া দালাল আলী হোসেন এর মাধ্যমে পাড়ি জমায় মধ্যপ্রাচ্যের দেশ লিবিয়ায়।
এখান থেকে একওয়ান ইসলামকে ইতালি পাঠানোর কথা বলে নানা অজুহাত দেখিয়ে শারীরিক নির্যাতন চালিয়ে লিবিয়া বসবাসরত কথিত মাফিয়া দালাল আলী হোসেন(২৫) ক্রমান্বয়ে একওয়ান এর পিতার কাছ থেকে ১৯ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েও ক্ষান্ত হয়নি। আরো টাকা দেওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করে। টাকা দিতে না পারায় একওয়ান এর উপর অমানবিক নির্যাতন চালানোর পাশা-পাশি খাওয়া -দাওয়া প্রায় বন্ধ করে দেয় দালাল আলী হোসেন গং দালালরা।
অবশেষে দালালদের অমানবিক নির্যাতনের শিকার একওয়ান খেয়ে না খেয়ে হাড্ডি সার হয়ে বিগত প্রায় ৩ মাস আগে লিবিয়া মৃত্যু বরন করে।
পরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় বিগত ২৯ শে সেপ্টেম্বর রোজ বৃহস্পতিবার একুয়ান ইসলাম (১৯) এর লাশ বাংলাদেশে আসে এবং ৩০ শে সেপ্টেম্বর রোজ শুক্রবার সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে লাশের ময়নাতদন্ত শেষে আছর এর নামাজের পর গ্রামের বাড়ী জগন্নাথপুর এর শ্রীধরপাশায় পৌঁছে এবং বিকাল ৫ ঘটিকার সময় শ্রীধরপাশা দারুলউলুম মাদ্রাসার ঈদগাহ ময়দানে নামাজে জানাজা শেষে মরহুম এর লাশ পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। এ ব্যাপারে
একওয়ান এর পিতা মোঃ তরিকুল ইসলাম একই গ্রাম নিবাসী মানব পাচারকারী শ্রীধরপাশা গ্রাম নিবাসী মৃত মোঃ আবুল মিয়া(৫০), আবুল মিয়ার স্ত্রী আছমা বেগম (৪০), আবুল মিয়ার ছেলে মোঃ আলী হোসেন (২৫) এবং দিরাই উপজেলার দৌলতপুর গ্রাম নিবাসী মৃত মোঃ ফিরোজ মিয়ার ছেলে মোঃ সালেহ আহমদ (৪৫) কে আসামী করে জগন্নাথপুর থানায় মামলা দায়ের করেছেন( মামলা নং-০৫, তারিখঃ-০৩/১০/২০২২ইং)।