প্রতিনিধি ৪ অক্টোবর ২০২২ , ১:৫৮:৪৯ অনলাইন সংস্করণ
সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি: সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার খুরমা উত্তর ইউনিয়নের সেওতরপাড়া প্রকাশিত (কাকুরা) গ্রামে ধারনবাজার হতে হাজী ইছাক আলী মহাজনের বাড়ীগামী রাস্তায় সিসি ঢালাই কাজে নিম্নমানের কংক্রিট ও বালু ব্যবহারসহ ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে ঠিকাদারের বিরুদ্ধে।
জানা যায়, স্থানীয় সংসদ সদস্য মুহিবুর রহমান মানিক এর বিশেষ বরাদ্দ থেকে এ রাস্তায় ৪ শত ৫৩ ফুট সিসি ঢালাই কাজের জন্য ৪ লাখ ৩৭ হাজার টাকা ব্যয়ে প্রকল্প গ্রহন করা হয়। কোটেশনে এই কাজ পেয়েছেন উপজেলা যুবলীগ নেতা সাইফ উদ্দিন। ইস্টমেট অনুযায়ী রাস্তার দৈর্ঘ্য ৪৫৩ ফুট, প্রস্থ্য ৬ ফুট ও টিকনেস ৫ ইঞ্চি করার কথা জানিয়েছেন ঠিকাদার সাইফ উদ্দিন। অভিযোগ উঠেছে, ৫ ইঞ্চি টিকনেসের স্থলে ৩ থেকে সাড়ে তিন ইঞ্চি টিকনেস দিয়ে দায়সাড়াভাবে ঢালাই করা হচ্ছে। সরকারি কাজে এক নম্বর ইট (কংক্রিট) ব্যবহারের বাধ্যবাধকতা থাকলেও প্রকল্পের কাজের জন্য নিম্নমানের ইট (কংক্রিট) ও বালু ব্যবহার করা হচ্ছে।
গাইড ওয়াল নির্মান না করে ও বেডে পরিমাণমত বালি না দিয়ে দায়সাড়াভাবে ঢালাই কাজ চলছে। প্রকল্পে কার্যস্থলের পাশে সাইন বোর্ড নেই। যার ফলে প্রকল্পের কাজের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তবে অদৃশ্য কারনে এই রাস্তার কাজে অনিয়মের বিষয়ে প্রকাশ্যে মুখ খুলতে নারাজ অনেকেই। এদিক রাস্তার কাজটির কোন প্রকল্প থেকে নেওয়া হয়েছে ভিন্ন ভিন্ন বক্তব্য প্রদান করায় নানা প্রশ্নের দেখা দিয়েছে। এ ব্যাপারে ইউনিয়নের আওয়ামীলীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট সামছুর রহমান জানান এলজিইডি থেকে প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। তবে ছাতক উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী কার্যালয় সুত্র জানায় এটি এলজিইডির কোন কাজ না। এ বিষয়ে খুরমা উত্তর ইউপি সদস্য নুর উদ্দিন এর সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি রিসিভ না করায় তার বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে জানতে খুরমা উত্তর ইউপি চেয়ারম্যান বিল্লাল আহমদ এর সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ প্রতিবেদকের সাথে অসৌজন্যমুলক আচরণ করেন। তিনি উত্তেজিত হয়ে বলেন, এই কাজ এলজিএসপির না। এইটা এলজিইিডির কাজ। আপনি ইউএনও’র কাছে রোববার (গতকাল) ফোন করে অভিযোগ করেছেন। তবে এখন আমার কাছে কেন কল দিয়েছেন। আগে দেননি কেন। সাংবাদিকতা জেনে আসুন তার পর সাংবাদিক হোন।
যদিও এ প্রতিবদেক ইউএনও’র কাছে কোন অভিযোগ করেননি। তবে এ বিষয়ে জানতে ইউএনও’ও সাথে মুঠোফোনে কথা বলেছেন এ প্রতিবদেক। এ বিষয়ে ছাতক উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী আফছর আহমেদ বলেন, আমি এখানে নতুন যোগদান করেছি। এছাড়াও এখন আমি মাঠে রয়েছি। অফিসে গিয়ে বিষয়টি খোঁজ খবর নিয়ে দেখবো। এ বিষয়ে ঠিকাদার সাইফ উদ্দিন স্থানীয় সংসদ সদস্য মুহিবুর রহমান মানিক এর বিশেষ বরাদ্দ থেকে কোটেশন এর মাধ্যমে কাজ পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এ ধরনের কংক্রিট দিয়েই বর্তমানে কাজ করা হয়। তিনি আরো বলেন ৬ ফুট প্রস্থ দিয়ে কাজ করার কথা থাকলেও ৮ ফুট প্রস্থ্য দিয়ে কাজ করার জন্য বলেছেন অ্যাডভোকেট সামছুর রহমান। গাইড ওয়ালের বিষয়টি বা কোটেশন নেই। এ বিষয়ে ছাতক উপজেলা নির্বাহী অফিসার নুরের জামান চৌধুরী বলেন, বিষয়টি আমি খোঁজ খবর নিয়ে দেখবো। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, জনপ্রতিনিধির বিরুদ্ধে আমি সরাসারি চিঠি দিতে পারিনা। তবে লিখিত অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি আরো বলেন আমি ইউএনও কে বলে দেবো সাংবাদকিরা যখন তথ্য চাইবেন তাদের তথ্য দিয়ে সহযোগীতা করবেন।