প্রতিনিধি ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২২ , ২:৪৭:০০ অনলাইন সংস্করণ
হিজাব মামলার শুনানি চলছে ভারতের সুপ্রিম কোর্টে। সেখানে মঙ্গলবার মুসলিম পক্ষ জানিয়েছে, আরবি ভাষায় যথেষ্ট দক্ষ না হওয়ায় সুপ্রিম কোর্ট পবিত্র কুরআনের ব্যাখ্যা করতে অক্ষম। তারা যুক্তি দিয়েছেন যে, পবিত্র গ্রন্থের ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করে ইসলামে হিজাবের অপরিহার্যতা নির্ধারণের পরিবর্তে, আদালতের উচিত হিজাবকে একজন মহিলার গোপনীয়তা, মর্যাদা এবং পরিচয় রক্ষার জন্য কাপড় বেছে নেয়ার অধিকার হিসাবে দেখা।
কর্নাটকের শিক্ষাঙ্গনে হিজাব নিষিদ্ধ করা নিয়ে যে বিবাদ তৈরি হয়েছে তার আইনি নিষ্পত্তি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে সংশ্লিষ্ট মামলার নিয়মিত শুনানি হচ্ছে। তাতে শিখদের পাগড়ি পরে শিক্ষাঙ্গনে যাওয়ার বিষয়টি এলে আদালত মন্তব্য করে, পাগড়ি নিছকই ধর্মীয় পোশাক নয়। শিখেরা ছাড়াও উত্তর ও মধ্যভারতের বিস্তীর্ণ অংশের মানুষ পাগড়ি পরে থাকেন। জবাবে মুসলিম পক্ষ জানায়, মুসলিম মহিলাদের হিজাব পরার বিধান কোরানে উল্লেখ রয়েছে। তবে এটিও নিছক ধর্মীয় পোশাক নয়, এর সাথে নারীদের অধিকারও জড়িত।
এ প্রসঙ্গে মুসলিম পক্ষের সিনিয়র অ্যাডভোকেট ইউসুফ এইচ মুছালা এবং সালমান খুরশিদ বলেন, আদালত আরবি ভাষায় দক্ষ নয়। যে কারণে হিজাব নিয়ে পবিত্র কোরানের ব্যাখ্যা বুঝতে সমস্যা হতে পারে। পবিত্র কোরানেও কিন্তু হিজাবকে গোপনীয়তা, মর্যাদা এবং পরিচয় রক্ষার জন্য একজন মহিলার অধিকার রক্ষার পোশাক হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে। সোমবার বিচারপতি হেমন্ত গুপ্ত ও বিচারপতি সুধাংশু ধুলিয়ার বেঞ্চ এ বিষয়ে শুনানি করেন। বুধবারও চলবে হিজাব মামলার শুনানি।
আইনজীবী মুছালা সোমবারের শুনানিতে বলেছেন, ‘গোপনীয়তা দেহ এবং মনের উপর একটি অধিকার। বিবেকের অধিকার এবং ধর্মের অধিকার পরিপূরক। তাই যখন একজন মুসলিম মহিলা হিজাব পরতে চান, তখন এটি তার সম্মান এবং গোপনীয়তা রক্ষা করার পাশাপাশি তার ক্ষমতায়ন করে।’
সালমান খুরশিদের বক্তব্য, একজন মুসলিম মহিলার হিজাব পরা তার ধর্মীয় বিশ্বাস, বিবেকের কণ্ঠস্বর, সাংস্কৃতিক প্রয়োজনীয়তা বা পরিচয়, সম্মান এবং গোপনীয়তা রক্ষার জন্য ব্যক্তিগত বিবেচনার বিষয় হতে পারে।’ তিনি আরও বলেন, ‘ভারতের মতো সাংস্কৃতিকভাবে বৈচিত্র্যময় দেশে, সাংস্কৃতিক অনুশীলনকে সম্মান করতে হবে। মুসলিম নারীরা ইউনিফর্ম পরার নিয়ম থেকে বঞ্চিত হতে চান না। তারা তাদের সাংস্কৃতিক প্রয়োজন এবং ব্যক্তিগত পছন্দের সম্মানে একটি স্কার্ফ আকারে একটি অতিরিক্ত কাপড় পরতে চান।’ শীর্ষ আদালত মুছালার কাছে তার বক্তব্যের আরও বিশদ ব্যাখ্যা চেয়েছে।
সূত্র: টিওআই।