প্রতিনিধি ১১ জুন ২০২২ , ৩:১৮:৪৭ অনলাইন সংস্করণ
আল-হেলাল,সুনামগঞ্জ: পবিত্র জুমআর দিনে মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তার পরিবারের উপর হামলা লুটতরাজ ও বাড়ী ভাংচুরের ঘটনায় সামাজিক সালিশে দুই লক্ষ টাকা জরিমানা ও মুছলেকা প্রদানের রায় ধার্য্য করার মাধ্যমে তাহিরপুর উপজেলার বিরোধীয় দুটি পক্ষের বিরোধ নিস্পত্তি করা হয়েছে।
তাহিরপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামীলীগের কৃষি বিষয়ক সম্পাদক করুনাসিন্ধু চৌধুরী বাবুলের উদ্যোগে ৯ জুন বৃহস্পতিবার বিকেলে তাহিরপুর উপজেলা পরিষদের গণমিলনায়তন হলে উপজেলার লাকমা গ্রামবাসী বনাম বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল হোসেনের মধ্যকার এই বিরোধের নিস্পত্তি করা হয়। এসময় সুনামগঞ্জ কলেজ ছাত্র সংসদের সাবেক ভিপি বীর মুক্তিযোদ্ধা সাইফুর রহমান সমছু, উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান খালেদা বেগম,তাহিরপুর উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী মর্ত্তুজা,উপজেলা কমান্ড এর সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ রফিকুল ইসলাম, আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান সুনামগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি সাংবাদিক বাউল আল-হেলাল,উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আলমগীর খোকন,বীর মুক্তিযোদ্ধা রৌজ আলী, বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা কমান্ডের বীর আব্দুছ ছাত্তার ইদু,তাহিরপুরের উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়ন কমান্ড এর বীর মুক্তিযোদ্ধা আলকাছ মিয়া, বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল জলিল, বীর মুক্তিযোদ্ধা সুজাফর আলী,আওয়ামীলীগের কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান খেলু মিয়া ও সাংবাদিক জাহাঙ্গীর আলম ভূইয়াসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গরা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলায় বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল হোসেন ও তার পরিবারের উপর হামলা,বাড়ি ভাংচুর ও লুটতরাজের মামলায় ৪ আসামী কে আটক করেছিলো জেলা গোয়েন্দা পুলিশ। ২০২১ ইং সনের ২৬ জুন শনিবার রাতে সুনামগঞ্জ শহরের মধ্যবাজার থেকে তাদেরকে আটক করা হয়। আটককৃতরা হচ্ছে তাহিরপুর উপজেলার শ্রীপুর উত্তর ইউনিয়নের লাকমা গ্রামের মৃত আব্দুল খালেক এর পুত্র সাহাব উদ্দিন (৫০),আব্দুল আজিদ এর পুত্র সুলতান মিয়া (৪৫),মৃত আব্দুল মজিদ এর পুত্র মহর উদ্দিন (৬০),মৃত আব্দুর রহমানের পুত্র নুরুজ্জামান সুরুজ মিয়া (৫৫)। জেলা পুলিশ সুপার মোঃ মিজানুর রহমান বিপিএম এর নির্দেশে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের এসআই শামীম আকঞ্জি ও এসআই আব্দুল আলীম এর নেতৃত্বে একদল পুলিশ গোয়েন্দা নজরদারীর ভিত্তিতে তাদেরকে আটক করেন। এর আগে ২৫ জুন মামলাটি এফআইআর করেন তাহিরপুর থানার ওসি আব্দুল লতিফ তরফদার। বাংলাদেশ দন্ডবিধি আইনের ১৪৩/৪৪৮/৩২৩/৩৫৪/৪২৭/৩৮০ ধারায় তাহিরপুর থানায় ১৬ নং মামলা হিসেবে মুক্তিযোদ্ধার লিখিত অভিযোগটিকে এফআইআর করা হয়েছিলো বলে জানিয়েছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মোঃ নাজমুল হক।
জানা যায়, মুক্তিযোদ্ধা আবুল হোসেনের নামে সরকারের দেয়া বন্দোবস্তীয় জায়গা জোরপূর্বকভাবে অবৈধ দখলে নেয়ার লক্ষ্যে গ্রাম্য ফতোয়াবাজরা মসজিদে বসে পূর্ব পরিকল্পনা করে ঐ বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তার পরিবারের ৬ সদস্যের উপর হামলা ও বাড়ীঘর ভাংচুরসহ লুটতরাজ করেছে। ৪ ঠা জুন শুক্রবার জুমআর নামাজের পরপরই সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার শ্রীপুর উত্তর ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের লাকমা গ্রামে এই ঘটনা ঘটানো হয় মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে ও ফতোয়া জারী করে। আহত বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল হোসেন (৬৯) লাকমা পুর্বপাড়া গ্রামের মৃত আদু শেখ এর পুত্র। এ ঘটনায় অপরাপর আহতরা হচ্ছেন মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী মিলন বিবি (৫৫),পুত্র রেজুয়ান (১৭), কন্যা আমেনা আক্তার (৩৫),নাতিন সুইটি আক্তার (১৮),আনজুমা আক্তার (১৩) ও মুক্তিযোদ্ধার নাতি শিশু আবু সুফিয়ান (২) প্রমুখ। ঘটনার ব্যাপারে ২১ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত সন্ত্রাসী ফতোয়াবাজদের বিরুদ্ধে ৬ জুন রোববার রাতে তাহিরপুর থানায় মামলা দায়ের করেন ভূক্তভোগী মুক্তিযোদ্ধা। অভিযুক্তরা হচ্ছে লাকমা গ্রামের মৃত চান মিয়ার পুত্র বাচ্চু মিয়া (৬৫),মৃত শফি মেস্তরীর পুত্র বাবুল মিয়া (৪৫),মৃত লতু মিয়ার পুত্র আব্দুস ছাত্তার (৪৫),মৃত সিরাজের পুত্র মুক্তা মিয়া (৩০) ও রতন মিয়া (২৬),সুলতানের পুত্র শিব্বির মিয়া (২২), শফি মেস্তরীর পুত্র জামাল মিয়া (৩৬),আমান উল্লাহর পুত্র রিফাত মিয়া (৩০),মৃত আফছর উদ্দিনের পুত্র আব্দুল জহুর (৩৬),নাফরমানি পাগলার পুত্র সাদ্দাম (২৫),মৃত মন্তাজ মিয়ার পুত্র আলাল উদ্দিন (৫০),মৃত আবু তালিবের পুত্র দুলু মিয়া (৬৫),দুলুর পুত্র কামরুল (৩৫),মৃত মন্তাজ মিয়ার পুত্র শাফি উদ্দিন (৩৫),মৃত শফি মেস্তরীর পুত্র সুমন (২৫),জামাল মিয়ার পুত্র মইনুল (২০) ও সাদেক (৫০) প্রমুখ।
মামলার বিবরণে প্রকাশ,নাশকতাসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকান্ডে জড়িত থাকার ঘটনায় একাধিক মামলা মোকদ্দমার আসামী ও সাবেক মেম্বার বাচ্চু মিয়া জাল জালিয়াতির আশ্রয়ে,মুক্তিযোদ্ধা আবুল হোসেনের বন্দোবস্ত পাওয়া জমি অন্যের কাছে বিক্রয় করে দেয়। মুক্তিযোদ্ধা আবুল হোসেন এ ব্যাপারে বিভিন্ন মহলে অভিযোগ দায়ের করলে সন্ত্রাসী বাচ্চু ও তার গোত্রীয় লোকজন তাকে খুন করার চেষ্টা করে। গ্রামবাসী জানান,তাহিরপুর থানার বড়ছড়া মৌজার ১৯৮ নং জেএলস্থিত ১ নং খতিয়ানের এস.এ ৩/৯১৭,৩১/৮২১ নং দাগভূক্ত ২.০০ একর জমি সরকারের কাছ থেকে ১৯৮৯ইং সনে ১৬২৯/৮৯ নং বন্দোবস্ত মোকদ্দমামূলে গত ২২/০১/১৯৯৫ইং তারিখে ২৭৬ নং দলিল সম্পাদন এবং ৫৪১/৯৫-৯৬নং নামজারী মোকদ্দমামূলে বন্দোবস্ত প্রাপ্ত হয়ে যথারীতি ভোগ দখল করে যাচ্ছেন মুক্তিযোদ্ধা আবুল হোসেন। কিন্তু বাচ্চু ও তার বাহিনীর লোকজন বন্দোবস্তীয় জায়গা হতে ঐ মুক্তিযোদ্ধাকে উচ্ছেদ করে তার জায়গা ও সহায় সম্পত্তি গ্রাস করার অসদুদ্দেশ্যে বিভিন্ন অপতৎপরতায় লিপ্ত থেকে সময়ে সময়ে তাকে খুন করার নেশায় মেতে উঠে। এ ঘটনায় বাচ্চুগংদের বিরুদ্ধে তাহিরপুর থানায় জিডি নং ৪০৮ তাং ১৩/১১/২০১৪ইং দায়ের করেন ঐ বীর মুক্তিযোদ্ধা। গত বছরের ১লা জুন মঙ্গলবার বিকেল ৫ টার সময় লাকমা চকবাজারস্থ আব্দুল হাই এর চায়ের দোকানে এসে বাচ্চু ও তার বাহিনীর লোকজন মুক্তিযোদ্ধার জায়গা দখল করে নেয়ার ব্যাপারে তাকে দেশের প্রচলিত আইনের বিপরীতে কথিত সমাজের দোহাই দিয়ে সালিশ বিচারে বসার জন্য চাপপ্রয়োগ করে। মুক্তিযোদ্ধা আবুল হোসেন বাচ্চুগংদের প্রস্তাবে সাড়া না দেয়ায় তার জায়গা গ্রামের মসজিদের নামে জোরপূর্বক দখল করে নেওয়ার হুমকি দেয়। এর আগে মুক্তিযোদ্ধার বন্দোবস্তীয় জায়গায় তারা জোরপূর্বকভাবে ইসলামীয়া মহিলা মাদ্রাসা লাকমা নামে একটি মাদ্রাসাও স্থাপন করে জাল জালিয়াতির আশ্রয়ে। এ ঘটনায় ভীত মুক্তিযোদ্ধা সুনামগঞ্জ জেলার জেলা প্রশাসক মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেন এর কাছে প্রথমোক্ত ৫ জনের বিরুদ্ধে ১টি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। ফতোয়াবাজরা ঐ অভিযোগ দায়েরের সংবাদ জানতে পেরে ৪ ঠা জুন শুক্রবার বাদ জুমআ গ্রামের মসজিদে বসে মুক্তিযোদ্ধা ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে ধর্মীয় নানা ফতুয়া জারী করে সরলপ্রাণ তৌহিদী জনগনকে তার বিরুদ্ধে উস্কানী ও মসজিদের মাইকে ঘোষনা দিয়ে মুক্তিযোদ্ধা ও তার পরিবারের উপর হামলা ও তার বাড়ীঘর লুটতরাজ করার পরিকল্পনা গ্রহন করত: বেআইনী জনতাবদ্ধে মিলিত হয়ে পরিকল্পিত খুন ও লুটতরাজের লক্ষ্যে মুক্তিযোদ্ধা ও তার পরিবারের উপর অতর্কিত হামলা চালায়। ফতোয়াবাজ বাচ্চু,জামাল ও আব্দুস ছাত্তার, মুক্তিযোদ্ধার মেয়ে আমেনা বেগমের পরিবারবর্গকে নিয়ে বসবাসের জন্য নবনির্মিত আলাদা একটি বসতঘরে অনধিকার প্রবেশ করে প্রথমে তার মেয়ে আমেনা আক্তার কে চুলমুঠো ধরে শ্লীলতাহানী ঘটায়। আড়াই বছরের শিশু আবু সুফিয়ানসহ আমেনা আক্তারকে লোহার রড,বাঁশের লাঠি ও কাঠের রুইল দ্বারা মারপিটক্রমে শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম করে ঘরের মেঝেতে ফেলে দেয়। এই ঘটনাটি দেখে মুক্তিযোদ্ধার ছেলে রেজুয়ান তার স্মার্টফোনে ভিডিও ধারন করলে সন্ত্রাসী মইনুল,রতন ও বাবুলগং রেজুয়ানকে দৌড়িয়ে নিয়ে তার বসত ঘরের সামনে মেঝেতে ফেলে লোহার রড,কাঠের রুইল ও বাঁশের লাঠি দ্বারা এলোপাতাড়ি মারপিট করে শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম করে। প্রাণরক্ষার জন্য মুক্তিযোদ্ধার ছেলে রেজুয়ান তার হাতে থাকা স্মার্টফোনটি গোপন স্থানে ফেলে দিয়ে সন্ত্রাসীদের কাছে প্রাণভিক্ষা প্রার্থনা করে। এই সময় “আল্লাহর দোহাই লাগে আমার ছেলেকে মারিছনা”বলে ফতোয়াবাজদেরকে ক্ষান্ত করার চেষ্টা করলে সন্ত্রাসী মুক্তা,রতন,বাবুলগং মুক্তিযোদ্ধাকে খুন করার লক্ষ্যে ঘর হতে ধরে নিয়ে হাতে থাকা লোহার রড,বাঁশের লাঠি ও কাঠের রুইল দ্বারা এলোপাতাড়িভাবে মারপিটক্রমে ঘরের সামনে মেঝেতে ফেলে দেয়। সন্ত্রাসীদের কবল থেকে মুক্তিযোদ্ধাকে রক্ষার জন্য তার নাতিন আনজুমা আক্তার এগিয়ে গেলে রিফাত,রতন,ছত্তার,শাফি উদ্দিনগং মুক্তিযোদ্ধার নাতিন আনজুমা আক্তারকে মারপিট করতে থাকে। সন্ত্রাসীদের কবল থেকে স্বামী ও নাতিনকে রক্ষা করার জন্য মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী মিলন বিবি এগিয়ে আসলে ছাত্তার,বাবুল,সুলতান ও রতনগং মিলন বিবিকে চুলমুঠো ধরে নারীজাতীয় শ্লীলতাহানী ঘটায় এবং বেদম মারপিট করে বিবস্ত্র করে মেঝেতে ফেলে এলোপাতাড়ি মারপিটক্রমে জখম করে। সন্ত্রাসী বাবুল ও মুক্তা মুক্তিযোদ্ধার নাতিন সুইটি আক্তারকে এলোপাতাড়িভাবে মারপিট করে তার বসতঘরের দক্ষিণে পুকুরে ফেলে দেয়। পরে সুইটি আক্তার পুকুর হতে সাতড়িয়ে পাড়ে উঠে তাদের বসতঘরে গিয়ে আত্মরক্ষা করলে বখাটে সন্ত্রাসী মুক্তা,শিব্বির,সাদ্দাম ও সুমনগং বসতঘরে গিয়ে সুইটি আক্তারকে কাপড়ে টানা হেছড়া করে এবং চুলমুঠো ধরে শ্লীলতাহানী ঘটায়। এসব ঘটনার পাশাপাশি প্রতিপক্ষ শিব্বির ৫ হাজার টাকা মূল্যের ১টি গ্যাসের চুলা, রিফাত দেড় হাজার টাকা মূল্যের ১টা গ্যাস সিলিন্ডার,সাদেক পাতিল ও ১টা লোহার কড়াই, সন্ত্রাসী শিব্বির ছয়শত টাকা মূল্যের ১টি শাবল, মুক্তা মিয়া ছয়শত টাকা মূল্যের ২টা কুদাল, দেড়শত টাকা মূল্যের ১টি বটিদা ও চারশত টাকা মূল্যের ১টি লোহার দা,সুলতান পাঁচশত টাকা মূল্যের ১টি আরএফএল চেয়ার, সুমন চারশত টাকা মূল্যের ১টি সিলভারের কলসী,রতন দেড় হাজার টাকা মূল্যের ১টা মোবাইল ফোন,মইনুল দুই হাজার টাকা মূল্যের ২টি আরএফএল এর টোল ও লেফতোষক বালিশ,বাচ্চু মিয়া,সাহাব উদ্দিন,সুরুজ মিয়া,বাবুল মিয়া,জামাল মিয়া,আব্দুল জহুর,দুলু মিয়া ও কামরুলগং বারো হাজার টাকা মূল্যের ৩ বান্ডিল ঢেউটিন প্রকাশ্য দিবালোকে লুটতরাজ করে নেয়। ঘটনার পর মুক্তিযোদ্ধা ও তার পরিবারের লোকজন জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। ফতোয়াবাজদের দ্বারা ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে মুক্তিযোদ্ধার কন্যা আমেনা বেগম খোলা আকাশের নীচে মানবেতর দিন কাটায়। আমেনা তার কর্মহীন স্বামী ও সন্তানদেরকে নিয়ে যে বসতঘরটিতে বসবাস করতো প্রায় দেড়মাস আগে তৈরী করা ঐ নতুন বসত ঘরটি প্রতিপক্ষরা হামলা ভাংচুরের পর মাটির সাথে মিশিয়ে দিয়েছে। অসহায় মুক্তিযোদ্ধা আবুল হোসেন ও তার পরিবারের লোকজন আতংকের কারণে দীর্ঘদিন ভিটেবাড়ি ছাড়া হয়ে থাকেন। শ্রীপুর উত্তর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ খসরুল আলম ও ইউপি সদস্য মোঃ জম্মাত আলী বলেন,ঘটনার সঙ্গে জড়িত যেই থাকুকনা কেন তাদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করার দাবী জানিয়েছিলেন। বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ জেলা ইউনিটের সাবেক কমান্ডার হাজী নুরুল মোমেন,সাবেক ডেপুটি কমান্ডার আবু সুফিয়ান,তাহিরপুর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার রফিকুল ইসলাম ও আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী জাহান, বীর মুক্তিযোদ্ধা তার পরিবারের উপর হামলা ভাংচুর লুটতরাজের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন। তাহিরপুর থানার ওসি মোঃ আব্দুল লতিফ তরফদার বলেন,ঘটনাটি জানামাত্র আমি একজন এসআই পাটিয়ে ঘটনাস্থলে শৃঙ্খলা রক্ষা করেছিলাম এবং বীর মুক্তিযোদ্ধার দায়েরকৃত মামলাটির চার্জসীট আমরা বিজ্ঞ আদালতে দাখিল করেছি। সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন,বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তার পরিবারের উপর হামলা,বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটতরাজের খবরটি জানতে পেরে আমি তাৎক্ষনিকভাবে পুলিশ প্রশাসনকে বলে দিয়েছি এ ব্যাপারে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য। তিনি বলেন,অপরাধীরা যত শক্তিশালীই হউকনা কেন আমরা বীর মুক্তিযোদ্ধাকে যে জায়গা বন্দোবস্ত দিয়েছি তার এক ইি জায়গাও কোন ফতোয়াবাজ বা দখলবাজদের দখল করতে দেবনা। তিনি ক্ষতিগ্রস্থ বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল হোসেন ও তার পরিবারকে সকল প্রকার আইনগত সহযোগীতা প্রদানের জন্য পুলিশ প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছিলেন। এদিকে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আকম মোজাম্মেল হক এমপি মুক্তিযোদ্ধা আবুল হোসেন এর উপর হামলাকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন ও তার বন্দোবস্ত পাওয়া জায়গা উদ্ধার করে দেয়ার জন্য সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসককে নির্দেশ দিয়েছিলেন। ঘটনার প্রায় এক বছরের ব্যবধানে আসামীপক্ষকে নগদ ২ লাখ টাকা জরিমানা প্রদান ও ভবিষ্যতে মসজিদের মাইকে ঘোষনা দিয়ে কারো বাড়ীতে হামলা বা উস্কানীমূলক ঘটনা সংগঠিত করবেনা মর্মে ৩ শত টাকার ননজুডিসেয়েল স্টাম্পে অঙ্গীকারনামা প্রদানের কঠিন শর্তে দীর্ঘদিনের এই বিরোধের স্থায়ী নিস্পত্তি করে দেন উপজেলা চেয়ারম্যান। রায়ে দুপক্ষই সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন।