ওই প্রতিবেদন প্রকাশ করে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বলেন, পৃথিবীর বৃহত্তম গণতান্ত্রিক দেশ ভারত। বহু ধর্মের সহাবস্থান সেখানে। আমরা দেখছি, সেখানে ধর্মীয় স্থান ও সংখ্যালঘুদের ওপর আক্রমণ বাড়ছে। প্রতিবেদনটি প্রকাশের পরপরই ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচি আজ শুক্রবার সাংবাদিকদের বলেন, ওই প্রতিবেদনে তথ্যের অভাব আছে। ভারতের ধর্মীয় স্বাধীনতা নিয়ে সে দেশের সরকারি কর্তাদের মন্তব্যও অনভিপ্রেত।
প্রতিবেদনটি প্রসঙ্গে বাগচি আরও বলেন, আন্তর্জাতিক সম্পর্কে ভোটব্যাংকের রাজনীতি অনুসৃত হচ্ছে। এটা নিতান্তই দুর্ভাগ্যের বিষয়। উদ্দেশ্যমূলক ও পক্ষপাতদুষ্ট মতামত পরিহার্য হওয়া মঙ্গলের। ভারত বহুত্ববাদী একটি দেশ। এ দেশে মানবাধিকার ও ধর্মীয় স্বাধীনতা সম্মান পায়। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনায় ভারত সব সময় সে দেশের উদ্বেগের বিষয়গুলো তুলে ধরে। জাতি ও বর্ণগত যেসব আক্রমণ ঘটছে, বন্দুকের যথেচ্ছ ব্যবহার হচ্ছে, হেট ক্রাইম বেড়ে যাচ্ছে, সেসব নিয়ে ভারত তার উদ্বেগের কথা জানিয়ে আসছে।
বস্তুত, ভারতের গণতন্ত্রের অবনমন, মানবাধিকার হরণ, ঘৃণা ভাষণ, সংখ্যালঘুদের প্রতি আক্রমণ–সংক্রান্ত যেসব অভিযোগ আন্তর্জাতিক স্তরে ওঠে এবং এ–সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ হয়, সব সময় ভারত আনুষ্ঠানিকভাবে তার বিরুদ্ধাচরণ করে। ফ্রিডম হাউস, ভি ডেম ইনস্টিটিউট অথবা জাতিসংঘের বিভিন্ন কমিটির প্রতিবেদনের বিরুদ্ধেও ভারত সব সময় সরব থেকেছে। এ ক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি। কিন্তু ঘটনা হলো, বিভিন্ন রাজ্যে সংখ্যালঘুদের হয়রানি ও হেনস্তার ঘটনা বন্ধ হচ্ছে না। হিজাব-হালাল বিতর্ক অব্যাহত রয়েছে। জোর করে নিরামিষ খাওয়ানো হয় সরকারি শিক্ষালয়ে। হিন্দু উৎসবের সময় জবরদস্তি মাছ-মাংসের দোকান বন্ধ করে দেওয়া হয়। আজানের মাইক বন্ধ করার মতো ঘটনাও ঘটে চলেছে। সেই সঙ্গে রয়েছে গোরক্ষার নামে গোরক্ষক বাহিনীর তাণ্ডব। এর মধে৵ নতুন করে শুরু হয়েছে মন্দির-মসজিদ বিতর্ক। এই আবহে যুক্তরাষ্ট্রের এই প্রতিবেদন ভারতের অসন্তুষ্টির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।