• সুনামগঞ্জ

    জগন্নাথপুরে পানি বন্দী গুচ্ছ গ্রামবাসী, শাহজালাল মহাবিদ্যালয়ে আশ্রয় কেন্দ্র

      প্রতিনিধি ২৩ মে ২০২২ , ২:১০:৪৯ অনলাইন সংস্করণ

    হুমায়ূন কবীর ফরীদি, জগন্নাথপুর (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধিঃ আকষ্মিক বন্যায় জগন্নাথপুর এর গুচ্ছ গ্রামবাসী পানি বন্দী হয়ে পড়েছেন। খাদ্য সংকট সহ নানামূখী সমস্যার সম্মূখীন হয়ে মানবেতর জীবন করছেন। ওদের জন্য সরকারি সহায়তা ও আশ্রয় কেন্দ্র প্রয়োজন। আজ ২০ শে মে বিকালে সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায় , গত কয়েক দিন ধরে টানা বৃষ্টিপাত ও উজান থেকে ধেয়ে আসা পাহাড়ি ঢলের পানিতে সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার ডাউকা, রত্না, কুশিয়ারা ও ঢালিয়া নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে নদীর পাড় উপচে ঢালিয়া নদীর তীরবর্তী বালিকান্দী মোকামপাড়া ও ডাউকা নদীর তীরবর্তী ঘুংঘিয়ার গাঁও এলাকার শেখ হাসিনার উপহার স্বরূপ জমি ও গৃহহীনদের প্রদান কৃত আশ্রয়ণ প্রকল্পের অর্থাৎ গুচ্ছ গ্রামের ঘর- বাড়ীতে পানি উঠে পড়েছে। বাড়ীর আঙ্গিনা ও বসত ঘর পানিতে টইটম্বুর। খড়কুটো অর্থাৎ লাকড়ি পানিতে ভিজে যাওয়ায় পুরাতন কাপড় ও বস্তা জালিয়ে পালং এর উপরে চুলা বসিয়ে কেউ কেউ রান্না – বান্নার কাজ করলেও অনেকে শুকনো খাবার খেয়ে পরিবার পরিজন নিয়ে গতকাল ১৯ শে মে থেকে দিনাতিপাত করছেন। যে হারে ক্রমান্বয়ে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে এতে বন্য কবলিত এই অসহায় হতদরিদ্র ৫৩ টি পরিবারের জন্য এমুহূর্তে খাদ্য ও আশ্রয় কেন্দ্র প্রয়োজন। এ ব্যাপারে বালিকান্দী মোকামপাড়া এলাকার গুচ্ছ গ্রাম নিবাসী সুমিত্রা, সুমী,সজল দাস, তুরন দাস, ফিরোজ মিয়া, বশর মিয়া ও কাজলী একান্ত আলাপকালে বলেন, গতকাল থেকে ঘরের ভিতরে পানি প্রবেশ করেছে। মাচায় ও পালংকের উপর বসে দিনাতিপাত করছি। চুলা ও লাকড়ী পানির নীচে তলিয়ে যাওয়ায় পালং ও মাচার উপর সকালের রান্না- বান্না করতে হচ্ছে জামা – কাপড় পুড়িয়ে। দুপুরে শুকনো খাবার খেয়েছি। রাত্রে খাওয়ার মতো শুকনো খাবারও আর নেই কিভাবে যে কি করব ভেবে পাচ্ছিনা। এক প্রশ্নের জবাবে তারা আরো বলেন, আপনি নিজে দেখতেছেন আমরা কোন অবস্থায় আছি। এই মুহূর্তে আমাদের আশ্রয় কেন্দ্র ও খাবারের ব্যবস্থা করার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুদৃষ্টি কামনা করছি। যে হারে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে একমাত্র উপরলাই ভরসা। ঘুংগিয়ারগাঁও গ্রাম এলাকার গুচ্ছ গ্রাম নিবাসী নূর মিয়া, মনোরঞ্জন, প্রতাব দাস ও মনির বলেন, বন্যার পানি আঙ্গিনায় উঠে পড়েছে। আরো ২/৩ ইঞ্চি বাড়লেই ঘরে পানি প্রবেশ করবে। যে হারে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে ভিষণ চিন্তায় আছি। কিভাবে যে কি করব। আমাদের সরকারি সহযোগিতা প্রয়োজন। এছাড়াও উপজেলার বিভিন্ন নদ-নদীর পানি হাওরে প্রবেশ করে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে পড়েছে এবং উপজেলার জগন্নাথপুর -পাগলা সড়কের পার্শ্ববর্তী কলকলিয়া ইউনিয়ন এর অন্তর্ভুক্ত কলকলি, খাসিলা গ্রাম এর বেশ কিছু বাড়ীর আঙ্গিনা সহ চিলাউড়া -হলদিপুর ইউনিয়ন এর নিম্নাঞ্চলে অবস্থিত বিভিন্ন বাড়ী- ঘরের আঙ্গিনায় ও বসত ঘরে ইতিমধ্যে পানি উঠেছে। এমনকি রাস্তা- ঘাট পানির নীচে তলিয়ে গেছে। যার ফলে হাজার হাজার মানুষ ভোগান্তিতে পড়েছেন। ক্রমান্বয়ে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিধায় বানের পানি কবলিত গ্রামবাসীর দুর্ভোগ লাগবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ এর জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগের প্রতি জোর দাবী জানিয়েছেন সচেতন মহল। এবিষয়ে জগন্নাথপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ সাজেদুল ইসলাম বলেন, গুচ্ছ গ্রামবাসী সহ বন্যার পানিতে দুর্যোগ কবলি মানুষের দুর্দশার কথা সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক মহোদয়কে অবহিত করেছি। জেলা প্রশাসন থেকে কিছু পেলে বন্যাকবলিত মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেব। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, কলকলিয়া ইউনিয়ন এর অন্তর্ভুক্ত মোকামপাড়া ও ঘুংগিয়ারগাঁও গ্রাম এলাকার গুচ্ছ গ্রামবাসীর জন্য স্থানীয় শাহজালাল মহাবিদ্যালয়ে আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত আশ্রয় কেন্দ্রে কেউ পৌঁছেননি।

    আরও খবর

    Sponsered content