প্রতিনিধি ২৪ এপ্রিল ২০২২ , ৯:৪৭:০৬ অনলাইন সংস্করণ
শামীম আহমদঃ জাসদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রোকনুজ্জামান রোকন বলেন, বিচার বিভাগীয় তদন্তের মাধ্যমে হাওরে বাঁধ দিতে গিয়ে যে সিন্ডিকেট লুটপাট করছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। তিনি বলেন একটি বিশেষ কমিটির মাধ্যমে বরাদ্দ দিয়ে দূর্নীতিমুক্ত ভাবে হাওরবাসী ও কৃষকের উন্নয়নের জন্য ঐক্যবদ্ধ হওয়ার কোন বিকল্প নাই। ঈদের আগে ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের মুখে যেন হাসি ফুটে সেই ব্যবস্থা সরকারকে গ্রহণ করতে হবে। মানুষের অধিকার হরন করে জাতির কোন উন্নয়ন সমাজে বেশি কার্যকর হয় না। করোনাকালীন সময়ে কৃষকরা যে ভাবে আমাদেরকে সাপোর্ট দিয়েছে তাদের পাশে আমরা যদি না দাড়াই তাহলে জনগণ আমাদেরকেই প্রত্যাখান করবে। আজ ২৩ এপ্রিল ২০২২ইং রোজ শনিবার সকাল ১১ টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বাঁচাও হাওড়-বাঁচাও দেশ, বাঁচলে কৃষক-বাঁচবে দেশ ও বাংলাদেশ জাতীয় মানবাধিকার সমিতি’র যৌথ উদ্যোগে “হাওড়ে বাঁধের নামে লুটপাট বন্ধ কর, করতে হবে, দুর্নীতি ও লুটপাটমুক্ত বাংলাদেশ চাই” শীর্ষক নাগরিক মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সংগঠনের আহ্বায়ক ও সুনামগঞ্জ জেলা জাসদের সভাপতি এনামুজ্জামান চৌধুরী’র সভাপতিত্বে ও বাংলাদেশ জাতীয় মানবাধিকার সমিতির চেয়ারম্যান মোঃ মঞ্জুর হোসেন ঈসার সঞ্চালনায় প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ন্যাপের মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভূইয়া। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল- জাসদের যুগ্ম সম্পাদক মির্জা আনোয়ারুল হক, বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান হামদুল্লাহ আল মেহেদী, জাতীয় স্বাধীনতা পার্টির চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মিজু, ওয়ার্কার্স পার্টি ঢাকা মহানগর সভাপতি আবুল হোসাইন, জাসদের আইন বিষয়ক সম্পাদক এ্যাডভোকেট মোঃ সেলিম, জাতীয় কৃষক জোটের আন্তর্জাতিক সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন, আরট ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান আবদুর রহমান তপন, ন্যাচার ক্যাম্পেইন বাংলাদেশ এর সদস্য সচিব সাজ্জাদ সাজু, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি রাশিদুল হক ননী, বাংলাদেশ জাতীয় মানবাধিকার সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক লায়ন আল আমিন, জাতীয় আন্দোলনের সভাপতি মিতা রহমান প্রমুখ। আরো সংহতি প্রকাশ করেন- জাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি সাবেক সংসদ সদস্য নুরুল আক্তার, জাতীয় মুক্তি আন্দোলনের সভাপতি আব্দুল মোমেন। বক্তারা বলেন- বাংলাদেশের ৮৫টি বেশি নদনদীর পানি শুকিয়ে গেছে। এতে বাড়ছে সীমাহীন দূর্ভোগ। পাতালেও মিলছে না পানি, চাষাবাদে ঘটছে পরিবর্তন, তাপমাত্রায় পারদ উঠছে, এই সময় সুমানমগঞ্জসহ দেশের হাওর অঞ্চলের কৃষকের মাথায় হাত। যখন ফসল ঘরে উঠাবে তখন পানিতে ভেসে গেছে সব ফসল। নির্দিষ্ট সময় বাঁধ কখনো দেওয়া হয় না। যখন পানিতে সফল ডুবে যায় তখন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের টনক নড়ে। তখন এক শ্রেণীর সিন্ডিকেটের মাধ্যমে উন্নয়নের নামে চলে চরম লুটপাট। সাধারণ কৃষকরা বার বার হয় বঞ্চিত। অথচ রাষ্ট্রের কোটি কোটি টাকা তারা অপচয় করে। এভাবে আর কয় যুগ চলবে? এখান থেকে জাতিকে মুক্তি দিতে হবে। বাঁচলে কৃষক, বাঁচবে দেশ, বাঁচাও হাওর, বাঁচাও দেশ এটি এখন আর শ্লোগান নয়। এটি কৃষকের স্পন্দন। দূর্নীতি রুখে দিতে পারলেই দেশ উন্নয়নের দিকে এগিয়ে যেতে পারবে। কিন্তু কে দুর্নীতির রুখবে। যখন যারাই ক্ষমতায় থাকেন তাদেরই দোসরাই দূর্নীতির সাথে সরাসরি যুক্ত হয়ে যায়। মিলে মিশে লুটপাট করতে থাকে। এ যেন দেখার কেউ নেই, প্রতিবাদ করার কেউ নেই। কেউ কেউ যদি প্রতিবাদ করে তখন সে আরো নিঃস্ব থেকে নিঃস্ব হয়ে যায়। প্রতিবাদ কারীর পাশে রাষ্ট্র না দাঁড়িয়ে রাষ্ট্রের দায়িত্বে থাকা কর্তাব্যক্তির নির্দেশেই প্রতিবাদকারী জেল, জুলুম, হুলিয়া এমনকি গুম-খুনেরও শিকার হতে হয়। আমরা এখান থেকে মুক্তি চাই। হাওর বাসীকে বাঁচাতে হলে সুপরিকল্পিত পরিকল্পনা করে প্রথমেই দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে কঠোর থেকে কঠোর হতে হবে। সংশ্লিষ্ট সংস্থার ব্যক্তিবর্গ যদি দুর্নীতির সাথে যুক্ত থাকে তা যদি বিভাগীয় তদন্তের মাধ্যমে প্রমানিত হয় সঙ্গে সঙ্গে তার চাকুরীচ্যুতির পাশাপাশি চাকুরী শেষে যে পেনশন পায় তা সম্পূর্ণ বন্ধ করে দিতে হবে। ঠিকাদার সহ অন্যরা যদি দুর্নীতি করে ঠিকাদারের লাইসেন্স কালো তালিকাভূক্ত করে তার বিরুদ্ধে প্রচলিত আইনে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। বরাদ্দকৃত টাকা যথাযথ ভাবে দুর্নীতিমুক্ত ব্যবহার করতে হবে। আর তা অবশ্যই বর্ষার আগে ব্যবহার করতে হবে। পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার মাধ্যমে দেশের নদনদী নব্যতা ফিরিয়ে আনতে হবে। বন্ধ খাল সংস্কার করে পুনরায় চালু করতে হবে। নদনদীর হাওর-বাওরের পার্শ্বে অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের জন্য বিশেষ বরাদ্দ রাখতে হবে। এ বিষয়ে অচিরেই প্রধানমন্ত্রীর কাছে হাওর বাসীর পক্ষ থেকে স্মারকলিপি প্রদান করা হবে।