প্রতিনিধি ১২ জানুয়ারি ২০২২ , ৭:৪৭:৫৬ অনলাইন সংস্করণ
মোঃ বদরুজ্জামান বদরুল বিশেষ প্রতিনিধি। নেত্রকোণার কেন্দুয়ায় গ্রামীণ ঐতিহ্যবাহী মৃৎশিল্প হারিয়ে যেতে বসেছে। আধুনিকতার ছোয়ায় এবং শিল্পায়নের যুগে ধীরে ধীরে বিলীন হয়ে যাচ্ছে মৃৎশিল্প। তবে কেন্দুয়া উপজেলায় বংশ পরম্পরায় এই শিল্পকে আকঁড়ে ধরে বেঁচে আছেন অনেক পরিবার। তবে পুরুষ লোকজন আগের মতো আর এই কাজ বেশি করেন না। অনেকটা এখন নারী নির্ভর। কারণ এখন আর আগের মতো পোসয় না। তাই পুরুষ লোকজন অন্য কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করছেন।
অতীতে গ্রামের অনেক পরিবার রান্নার কাজে মাটির হারি-পাতিল ব্যবহার করতেন এবং মাটির হাড়ি-পাতিল ছাড়াও কলসী, দইয়ের খুটি, কড়াই, সরা, ব্যাংক, ঝাঁঝুর, চাড়ি, খাদা, রসের হাড়ি, কুপের পাটসহ সংসারের নিত্য প্রয়োজনে মাটির তৈরি জিনিস ব্যবহার করতেন।
কিন্তু বর্তমানে মাটির তৈরি জিনিসের কদর একেবারেই কমে গেছে। তাই এখন মানুষের সিলভারের হাড়ি-পাতিল, মেলামাইন ও প্লাষ্টিক জিনিসের চাহিদা অনেক বেড়ে গেছে। অপর দিকে আঠালো মাটির অভাব এবং বিভিন্ন ধরনের জ্বালানির দাম বৃদ্ধির ফলে পাল সম্প্রদায়ের লোকজন দিশে হারা হয়ে পড়ে এ পেশা ছেড়ে কিছু মানুষ অন্য পেশায় নিয়োজিত থেকে অনেক কষ্টে সংসার চালাচ্ছেন। উপজেলার মোজাফরপুর গ্রামের নিকিল চন্দ্র পাল, কল্পনা রানী পাল, স্বরসতী পাল, আরতী পাল এবং প্রিয়বালা পাল বলেন আগে আঠালো মাটি কিনতে হতো না এবং জ্বালানির দাম অনেক কম ছিল, সেই তুলনায় মাটির তৈরি জিনিসের চাহিদা ছিল অনেক বেশি। কিন্তু বর্তমানে এক ট্রলি আঠালো মাটি কিনতে প্রায় এক হাজার টাকা লাগে। তাছাড়া কাঠের গুড়া ধানের খড়ের দামও অনেক বেশি যা মাটির তৈরির জ্বালানি হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
উপজেলার মৃৎশিল্পের সাথে জড়িত পাল সম্প্রদায়ের লোকজন বলেন, গ্রামীণ ঐতিহ্যবাহী মৃৎশিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে সরকারী-বেসরকারি শিল্প উদ্দ্যোক্তাগণ অগিয়ে আসলে হয়তোবা এই শিল্পকে টিকিয়ে রাখা সম্ভব হবে।