• অনিয়ম / দুর্নীতি

    ইজারাবিহীন ধোপাজান চলতি নদী হতে পাথর উত্তোলন করছে মালেক মেম্বার ও তার সহযোগীরা

      প্রতিনিধি ৯ জানুয়ারি ২০২২ , ৮:২৫:০৩ অনলাইন সংস্করণ

    আল-হেলাল,সুনামগঞ্জ থেকে: সুনামগঞ্জের সীমান্তবর্তী ধোপাজান চলতি নদী হতে প্রতিদিন কমপক্ষে অর্ধকোটি টাকা মূল্যের বালি পাথর উত্তোলন করছে একটি চোরাচালানী সিন্ডিকেট চক্র। অথচ ধোপাজান চলতি নদী বালি পাথর মহালটির ইজারা বন্ধ রেখেছে সরকারের খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়। এমনকি ভূমি মন্ত্রণালয়ও এই বালিপাথর মহালটি ইজারা প্রদান থেকে বিরত রয়েছে গত ২ বছর পূর্ব থেকেই। প্রতিনিয়ত বেআইনীভাবে উত্তোলিত পাথর ট্রলিযোগে বহনের কারণে যেমন এলাকার পরিবেশ দূষণ অব্যাহত রয়েছে তেমনি সরকারী রাস্তাঘাটের ক্ষতিসাধন অব্যাহত রয়েছে। তারপরও সবকিছু ম্যানেজ করে মোটা অংকের টাকা ঘুষ বিনিময়ের মাধ্যমে ইজারাবিহীন ধোপাজান চলতি নদী বালু পাথর মহাল থেকে প্রকাশ্য দিবালোকে পাথর উত্তোলনের মহোৎসব চলছে। অনুসন্ধানে জানা যায়,টাস্কফোর্সের অভিযান চালিয়ে সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসন,বিজিবি,ভূমি ও পুলিশ প্রশাসন সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার জাহাঙ্গীর নগর ইউনিয়নের ঢলুরা ৪৮ শহীদ মিনার সংলগ্ন ধোপাজান চলতি নদীর পূর্বপাড়ে সরকারী খাস খতিয়ানের জায়গায় বেআইনীভাবে স্তুপীকৃত কিছু বালি পাথর জব্দ করত: নীলাম প্রদান করে। প্রায় ৯৩ হাজার ফুট পাথর ৫০ লাখ টাকায় নীলাম প্রদান করা হয় জাহাঙ্গীরনগর ইউনিয়নের ইউপি সদস্য নতুন গুদীগাঁও নিবাসী চোরাকারবারী আব্দুল মালেক কে। নীলামের মোটা অংকের টাকা পরিশোধ করতে গিয়ে আব্দুল মালেক মেম্বার প্রায় ২০ জন পাথর ব্যবসায়ীদের নিয়ে একটি সিন্ডিকেট গঠন করেন। আগামী ১৭ জানুয়ারি পর্যন্ত নীলামকৃত পাথর সরিয়ে নেওয়ার কথা বলে মাত্র ৪/৫ দিনের মধ্যে নীলামকৃত পাথর সরিয়ে নেন তিনি ও তার সিন্ডিকেট। প্রশাসন নীলামকৃত পাথর ব্যতিত নদী হতে কোন পাথর উত্তোলনের অনুমতি না দিলেও নীলামের কাগজ ও দীর্ঘ সময়কে পুজি করে প্রতিদিন বেপরোয়াভাবে নদী হতে পাথর উত্তোলন করে এই সিন্ডিকেট। সরজমিনে গিয়ে জানা যায়, পাথর উত্তোলনে নিয়োজিত একজন দিনমজুর প্রতিদিন কমপক্ষে ২৫ ফুট পাথর উত্তোলন করে। ভোর থেকে মাগরিব পর্যন্ত ৫ হাজার দিনমজুর সরাসরি পাথর উত্তোলনে জড়িত রয়েছে। ৫ হাজার মজুর উত্তোলন করে ১,২৫,০০০ ফুট পাথর। গড়ে প্রতিফুট পাথরের মূল্য ৫০ টাকা। একজন পাথর উত্তোলনকারী ২৫ টুকরীতে ২৫ ফুট পাথর উত্তোলনের মাধ্যমে ১২৫০ টাকা আয় করে। জনপ্রতি ১২৫০ টাকা হিসেবে পাচ হাজার জন পাথর উত্তোলনকারী আয় করে ৬২,৫০,০০০ (বাষট্রি লক্ষ প াশ হাজার) টাকা। আব্দুল মালেকের সিন্ডিকেট চক্রের সদস্যরা দিনমজুরদের কে পাথর উত্তোলনের কাজে ব্যবহার করে তাদেরকে ১২৫০ টাকার স্থলে এক হাজার টাকা পরিশোধ করে উত্তোলিত পাথর ক্রয় করে নদীর পূর্বপাড়েই ডাম্পিং করে সাথে সাথে ট্রাক ট্রলির মাধ্যমে নদীর পাড় থেকেই অন্যত্রে বিক্রয় করে হাতিয়ে নেয় লক্ষ লক্ষ টাকা। ধোপাজান চলতি নদী হতে বেআইনীভাবে উত্তোলিত এসব পাথর প্রতিদিন প্রায় ২ শতাধিক ট্রলি দ্বারা ডলুরা হতে হালুয়ারঘাট রোডে বহন করে ক্রাশার মেশিন ও সুরমা নদীতে নৌকাযোগে দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্রয় করা হয়। প্রকাশ্য দিবালোকে পাথর উত্তোলনের এ মহোৎসব পরিচালিত হলেও পাথর উত্তোলনকারী সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে রহস্যজনক কারণে নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসন। গত ৮ নভেম্বর থেকে একটানা বিরতিহীনভাবে চলছে পাথর উত্তোলন। আব্দুল মালেক ও তার সিন্ডিকেটচক্ররা দাবী করছে আমরা জেলা প্রশাসনের কাছ থেকে মোটা অংকের নগদ টাকায় জব্দকৃত পাথর ক্রয় করেছি। যে টাকা সরকারকে দিয়েছি সেই টাকা তুলতে হলে নদী হতে পাথর উত্তোলন না করলে আমাদের টাকা উত্তোলনতো দূরের কথা লাভের মুখ দেখাও সম্ভব নয়। তাই নীলাম বিক্রয়ের মাধ্যমেই প্রশাসন আমাদের কাছে ধোপাজান চলতি নদী বালি পাথর মহালটি বিক্রয় করে দিয়েছে। সুতরাং সাংবাদিকরা যতই লেখালেখি করুকনা কেন সরকার আমাদের পাথর উত্তোলনে কোন অসুবিধা করছেনা এবং ভবিষ্যতেও করবেনা। নীলামের নাম ও সময় ভাঙ্গিয়ে কেন এবং কার হুকুমে প্রতিদিন ধোপাজান চলতি নদী হতে পাথর উত্তোলন করছেন জানতে চাইলে কথিত নীলাম গ্রহীতা আব্দুল মালেক বলেন,আমরা ১২ জন ব্যবসায়ী মিলে নদীর সমস্ত পাথর ক্রয় করে নিয়েছি। তাই প্রকাশ্য দিবালোকেই পাথর উত্তোলন ও বিক্রয় করে যাচ্ছি।

    আরও খবর

    Sponsered content