প্রতিনিধি ২২ নভেম্বর ২০২১ , ৫:৫৯:১৭ অনলাইন সংস্করণ
স্টাফ রিপোর্টারঃ প্রথম দুই টি-২০ হেরে আগেই পাকিস্তানের কাছে সিরিজ হাতছাড়া করে স্বাগতিক বাংলাদেশ। নিজ মাঠে হোয়ইটওয়াশের লজ্জা এড়াতেও ব্যর্থ রিয়াদ বাহিনী।সোমবার মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ টি-২০তে টস জিতে আগে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ১২৪ রানে থেমে যায় বাংলাদেশের ইনিংস । জবাবে ৫ উইকেট হারিয়ে জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছে যায় সফরকারী পাকিস্তান। নিজের দ্বিতীয় ওভারে মাত্র একটি বল করেই মাঠের বাইরে চলে যান পেসার তাসকিন আহমেদ। বাবর আজমের জোরালো শট ঠিক মতো আটকাতে পারেননি এই পেসার। বাঁহাত দিয়ে তাকে ডানহাত চেপে ধরতে দেখা যায়। কিছুক্ষণ পর ফিজিও আসার পর তার সঙ্গে মাঠ ছাড়েন তাসকিন। অসামাপ্ত ওভার শেষ করেন অভিষিক্ত পেসার শহিদুল ইসলাম। তবে পরে আবার মাঠে নামেন তাসকিন। পাওয়ার প্লে শেষ হতেই আমিনুল ইসলামকে বোলিংয়ে আনেন মাহমুদউল্লাহ। তরুণ এই লেগ স্পিনার দিলেন আস্থার প্রতিদান। বাবর আজমকে ফিরিয়ে ভাঙলেন ৩২ রানের জুটি। বেশ নিচু হয়ে যাওয়া বলে টাইমিং করতে পারেননি পাকিস্তান অধিনায়ক। সহজ ক্যাচ তালুবন্দি করেন মোহাম্মদ নাঈম শেখ। অভিষেকে উইকেট তুলে নেন শহিদুল ইসলাম। মোহাম্মদ রিজওয়ানকে বোল্ড করে জুটি ভাঙেন এই পেসার। লম্বা সময় ক্রিজে থাকা পাকিস্তানের কিপার-ব্যাটসম্যান খেলতে চেয়েছিলেন থার্ড ম্যানে। ব্যাটের কানায় লেগে বল আঘাত হানে স্টাম্পে। ভাঙেন ৪৯ বল খেলা ৫১ রানের জুটি। ৪৩ বলে দুই চার ও এক ছক্কায় ৪০ রান করেন রিজওয়ান। বোলিংয়ে আসেন অধিনায়ক নিজেই। স্রেফ ৮ রানের পুঁজি নিয়েও জাগান জয়ের আশা। প্রথম বল ছিল ডট। পরের বলে ডিপ মিডউইকেটে ধরা পড়েন সরফরাজ আহমেদ। তৃতীয় বলে লং অনে মোহাম্মদ নাঈম শেখের হাতে ধরা পড়েন থিতু ব্যাটসম্যান হায়দার আলি। চতুর্থ বলে ছক্কায় ওড়ান ইফতেখার আহমেদ। ম্যাচে তখনও নাটকীয়তার বাকি। পরের বলেই থার্ড ম্যানে ধরা পড়েন ইফতেখার! নানা ঘটনা পেরিয়ে শেষ বলে চার মেরে পাকিস্তানের জয় নিশ্চিত করেন মোহাম্মদ নওয়াজ। এদিকে শুরুতে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তৃতীয় ডেলিভারিতেই উইকেট পান শাহনেওয়াজ দাহানি। আগের ম্যাচের সর্বোচ্চ স্কোরার নাজমুল হোসেন শান্তকে এবার ম্যাচের দ্বিতীয় ওভারেই মাঠের বাইরে পাঠিয়ে দেন এই পেসার। দাহানির প্রথম বলটি ছিল ৯০ মাইল গতির। অফ স্টাম্পের বাইরের সেই শর্ট ডেলিভারি বাউন্ডারিতে পাঠান শান্ত। তৃতীয় বলটিও দাহানি করেন গতিময়। এবার ফুল লেংথের বল। শান্ত ফ্লিক করার চেষ্টায় ওভারব্যালান্সড হয়ে মিস করেন লাইন। বল উড়িয়ে দেয় বেলস। আনন্দে লাফিয়ে ওঠেন দাহানি। ৫ বলে ৫ রানে আউট শান্ত। পাওয়ার প্লে শেষ হতেই আক্রমণে এলেন উসমান কাদির। দ্বিতীয় বলেই উইকেট পেলেন এই লেগ স্পিনার। ফিরিয়ে দিলেন শামীম হোসেনকে। সপ্তম ওভারে কাদিরের হাতে বল তুলে দেন বাবর আজম। । তিনিই ভাঙেন ৩০ রানের জুটি। বেরিয়ে এসে লেগ স্পিনারকে ছক্কায় ওড়াতে চেয়েছিলেন শামীম। সহজ ক্যাচ মুঠোয় বন্দি করেন ইফতেখার আহমেদ। ২৩ বলে চারটি চারে ২২ রান করেন শামীম। শামীম হোসেনের মতো আফিফ হোসেনও পারলেন না ইনিংস বড় করতে। বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যানের সম্ভাবনা ইনিংস থামল উসমান কাদিরের বলে ক্যাচ দিয়ে। দ্বাদশ ওভারে লেগ স্পিনারকে দুটি ছক্কা হাঁকান আফিফ। কিন্তু রানের গতি ধরে রাখতে পারেননি পরে। পঞ্চদশ ওভারে কাদির আক্রমণে ফেরার পর আবার ছক্কার চেষ্টায় ছিলেন তিনি। কিন্তু টাইমিং করতে পারেননি, সহজ ক্যাচ গ্লাভসে জমান মোহাম্মদ রিজওয়ান। ভাঙে ৪৩ রানের জুটি। দুই ছক্কায় ২১ বলে ২০ রান করেন আফিফ। উইকেট বেশ ভালো ছিলো। এমন উইকেটে একজন ওপেনার খেললেন ১৯তম ওভার পর্যন্ত। তবুও ছুঁতে পারলেন না পঞ্চাশ। মন্থর এক ইনিংস খেলে ফিরলেন মোহাম্মদ নাঈম শেখ। রান নিয়মিতই পান নাঈম। কিন্তু তার সমস্যা স্ট্রাইক রেট। সেটা দেখা গেল আবারও। ৪৭ রান করতে খেললেন ৫০ বল। দুটি করে ছক্কা ও চার থাকা এই ইনিংসে ডট বল ২২টি। মোহাম্মদ ওয়াসিমের নিচু ফুলটস বল কাজে লাগাতে পারেননি নাঈম। ব্যাটের কানায় লেগে অনেক ওপরে উঠে যাওয়া ক্যাচ মুঠোয় জমান বোলার নিজেই। ক্রিজে গিয়েই চার মারলেন নুরুল হাসান সোহান। পরের বলেই থার্ড ম্যানে ধরা পড়লেন এই কিপার-ব্যাটসম্যান। ২ বলে সোহানের রান ৪। শেষদিকে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের ১৪ বলে ১৩ রানের কল্যাণে নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ৭ উইকেট হারিয়ে ১২ রানে পুঁজি পেয়েছে বাংলাদেশ দল। পাকিস্তানের হয়ে উসমান কাদির ও মোহাম্মদ ওয়াশিম সর্বোচ্চ ২টি উইকেট তুলে নেন। সংক্ষিপ্ত স্কোর: বাংলাদেশ: ২০ ওভারে ১২৪/৭ (নাঈম ৪৭, শান্ত ৫, শামীম ২২, আফিফ ২০, মাহমুদউল্লাহ ১৩, সোহান ৪, মেহেদি ৫*, আমিনুল ৩; নওয়াজ ১-০-২-০, দাহানি ৩-০-২৪-১, ওয়াসিম জুনিয়র ৪-০-১৫-২, রউফ ৪-০-০০-১, ইফতেখার ৪-০-১৩-০, কাদির ৪-০-৩৫-২) পাকিস্তান: ২০ ওভারে ১২৫/৫ (রিজওয়ান ৪০, বাবর ১৯, হায়দার ৪৫, সরফরাজ ৬, ইফতেখার ৬, খুশদিল ০*, নওয়াজ ৪*; মেহেদি ৪-০-১৯-০, তাসকিন ৩.১-০-১৬-০, নাসুম ৪-০-২০-০, শহিদুল ৩.৫-০-৩৩-০, আমিনুল ৪-০-২৬-১, মাহমুদউল্লাহ ১-০-১০-৩)