প্রতিনিধি ২১ সেপ্টেম্বর ২০২১ , ১১:৪৮:১৭ অনলাইন সংস্করণ
সুনামগঞ্জ প্রতিনিধিঃ সুনামগঞ্জ জেলার জামালগঞ্জ উপজেলার লম্বাবাক গ্রামের কাশেম আলীর ছেলে রজব আলী আউট সোর্সিংয়ের প্রজেক্ট চাকরীর সুবাদে ২০১৪ সালে তাহিরপুর উপজেলা ভূমি অফিসে নৈশপ্রহরী হিসেবে যোগদান করেন। গত ১৮ মাস আগে তাহার চাকুরী মেয়াদ শেষ হয়ে গেলেও তিনি রহস্যজনক ভাবে তাহিরপুর উপজেলা ভূমি অফিসে থেকে যান।
এ বিষয়ে তাহিরপুর উপজেলার আমবাড়ি গ্রামের মো. মুছলিম উদ্দিনের ছেলে দিলোয়ার হোসেন দুলাল গত ১৯ সেপ্টেম্বর সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক বরাবরে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযোগসূত্রে জানা যায়, সুনামগঞ্জ জেলার জামালগঞ্জ উপজেলার লম্বাবাক গ্রামের কাশেম আলীর ছেলে রজব আলী প্রজেক্ট চাকুরীর সুবাদে ২০১৪ সালে তাহিরপুর উপজেলায় নৈশ প্রহরী হিসেবে তাহিরপুর উপজেলা প্রশাসনে যোগদান করলে ও তিনি নৈশ প্রহরীর কাজ না করে ভূমি অফিসের কাজে যোগদান করেন। গত ১৮ মাস আগে তাহার চাকুরী মেয়াদ শেষ হয়ে গেলেও তিনি রহস্যজনক ভাবে তাহিরপুর উপজেলা ভূমি অফিসে থেকে যান।
রজব আলীর ইউএনও ও ভূমি অফিসে পরিচিতি থাকায় শুরু করেন অবৈধ ঘুষ বাণিজ্যের ব্যবসা। মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে ঐতিহ্যবাহী বাদাঘাট পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয়ের খেলার মাঠের ০.৭৬ একর “ খ “ তপশীলের ভূমি নামজারী করিয়ে দেন। নামজারী খতিয়ান নং ৪৩৩০। মৌজা- যশপ্রতাপ, জেএল নং-৯৭,দাগ নং- ৪৭৩৮। নামজারী করে রজব আলীর ঘনিষ্ট বন্ধু বুরহান উদ্দিন, পিতা- জয়নাল আবেদীন,সাং- রসুলপুর, উপজেলা-তাহিরপুর, জেলা- সুনামগঞ্জ এর নামে গত ১১/০২/২০২০ ইং তারিখে তাহিরপুর সাব-রেজিষ্ট্রি অফিসে রেজিষ্ট্রকৃত ৪০৩ নং দলিলে হস্তান্তর করেন। স্কুলের ছাত্র ছাত্রী, শিক্ষক, অবিভাবকগন সহ এলাকাবাসীর প্রতিবাদ চলমান আছে।
২য় ঘটনা: বাদাঘাট বাজারের মেইন রোডে ফুল মিয়া গংদের নামে ৫ লক্ষ টাকা ঘুষ নিয়ে অন্তত ৩০ জনের দোকান কোটা নামজারী করে দিয়ে এলাকায় বড় ধরনের ঝাগড়া বিবাদ সৃষ্টি করের এই রজব আলী।
৩য় ঘটনা: প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া ভূমিহীনদের ঘর থেকে ৫,০০০/- করে টাকা ঘুষ নিয়েছেন ঘর দিবেন এবং কাগজপত্র ঠিক করে দিবেন বলে। টাকা না দিলে ঘরের নাম ব্যøাক লিষ্টে দিয়ে দেন রজব আলী। এ ছাড়াও তাহিরপুর ইউএনও ও ভূমি অফিসে কোন কাজ রজব আলীর বিশেষ ইঙ্গিতে আটকে যায়। আবার রজব আলীর সাথে মিট করলে কাজ ছুটে যায়। কারন সবাই জানেন রজব আলী ইউএনও স্যার ও এসিল্যান্ড স্যারের বিশেষ লোক। ইউএনও স্যার ও এসিল্যান্ড স্যার অফিসের বাহিরে কোথাও ভিজিটে গেলে রজব আলী থাকে বিশেষ সঙ্গী। সাবেক ইউএনও পদ্মাসং সিংহ ২৫ লক্ষ টাকার ঘুষ দুর্নীতে ফেসে যায় রজব আলীর জন্য। বিষয়টি গণমাধ্যমে আলোচনায় আসে। এভাবে রজব আলীর মাধ্যমে অসংখ্য ঘুষ দুর্নীতে জড়িত ইউএনও ও এসিল্যান্ড। অথচ সেই রজব আলীর কোন চাকুরী নাই সরকারী নথিপত্রে। এখনও বহাল তবিয়তে রজব আলী। জনগন জানতে চায় রজব আলীর খঁটির জোড় কোথায় ? উপজেলায় মুখরোচক আলোচনা চলছে বহিরাগত লোক দিয়ে তাহিরপুর ইউএনও ও এসিল্যান্ড অফিস চলে।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত নৈশ প্রহরী রজব আলীর সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন তার চুক্তিভিত্তিক চাকুরীর মেয়াদ ১৮ মাস পূর্বে শেষ হঔের তিনি কাজে কর্মরত থাকলেও তিনি কোন বেতন নিচ্ছেন না। তবে এই চাকুরীটি প্রতি বছরের নবায়ন করা হয়।
এ ব্যাপারে অভিযোগকারী দিলোয়ার হোসেন দুলাল অভিযোগ দায়েরের সত্যতা নিশ্চিত করে জানান,এই রজব আলী দীর্ঘদিন ধরে তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও এসিল্যান্ড অফিসে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের মেয়াদ প্রায় ১৮ মাস পূর্বে শেষ হলে ও সে বহাল তবিয়তে থেকে সাধারন মানুষজনের জায়গা জমি নামজারি করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিলেও তার বিরুদ্ধে কোন আইন গত ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
এ ব্যাপারে তাহিরপুর উপজেলা ভূমি অফিসার(এসিল্যান্ড) মো. আলাউদ্দিনের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে ফোন বন্ধ থাকায় বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।
এ ব্যাপারে তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী রায়হান কবির রজব আলীকে এসিল্যান্ড অফিসের নৈশ প্রহরী বলে উল্লেখ করে জানান এমন অভিযোগের কপি উপজেলা প্রশাসনের নজরে আসেনি। আসলে তদন্ত সাপেক্ষে দোষী প্রমানিত হলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন অভিযোগ পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান,বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে দোষ প্রমানিত হলে দোষী ব্যক্তির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।