• আইন আদালত/সাজা

    পরীমনিকে রিমান্ড: দুই বিচারকের ব্যাখ্যায় সন্তুষ্ট নন হাইকোর্ট

      প্রতিনিধি ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২১ , ৮:০৮:১৮ অনলাইন সংস্করণ

    মাদক মামলায় ঢাকাই সিনেমার আলোচিত চিত্রনায়িকা পরীমনিকে দ্বিতীয় ও তৃতীয় দফা রিমান্ডে পাঠানোর ক্ষেত্রে ঢাকার দুই মহানগর হাকিমের ব্যাখ্যায় সন্তুষ্ট নন হাইকোর্ট।

    বনানী থানার মাদকের মামলায় পরীমনিকে দ্বিতীয় দফায় দুদিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন মঞ্জুর করেছিলেন ঢাকার মহানগর হাকিম দেবব্রত বিশ্বাস। পরে একই মামলায় মহানগর হাকিম আতিকুল ইসলাম তৃতীয় দফায় আরও একদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

    কী কী তথ্য-উপাত্তের ওপর ভিত্তি করে পরীমনিকে শেষ দুই দফা রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়েছিল, দুই হাকিমের কাছে সেই ব্যাখ্যা জানতে চেয়েছিলেন হাইকোর্ট।

    জামিনসংক্রান্ত রুল ও রিমান্ডের বৈধতা প্রশ্নে স্বতঃপ্রণোদিত রুল জারির এক আবেদনের শুনানিতে হাইকোর্টের এই বেঞ্চ গত ২ সেপ্টেম্বর এ আদেশ দেন। দুই হাকিমকে ১০ দিনের মধ্যে তাদের ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়।

    সে অনুযায়ী দুই মহানগর হাকিম তাদের লিখিত ব্যাখ্যা সুপ্রিমকোর্টের রেজিস্ট্রারের দপ্তরে জমা দেন। সেই ব্যাখ্যা বুধবার হাইকোর্টে উপস্থাপন করা হলে বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম দুই ম্যাজিস্ট্রেটের দাখিল করা ব্যাখ্যার অংশ পড়ে শোনান।

    তিনি বলেন, রিমান্ড নিয়ে হাইকোর্ট ও সুপ্রিমকোর্টের যে গাইডলাইন এবং আমাদের প্রচলিত আইন আছে, তারা এগুলোর বিরুদ্ধে। যে কারণে আমরা তাদের জবাবে আমরা সন্তুষ্ট নই।

    ‘এই মামলায় দ্বিতীয় ও তৃতীয় দফা রিমান্ড মঞ্জুর করার ক্ষেত্রে আমরা সন্তুষ্ট নই, যে কারণে পরবর্তী আদেশের জন্য ২৯ সেপ্টেম্বর তারিখ রাখলাম।’

    দুই মহানগর হাকিমের মধ্যে একজন পরীমনিকে রিমান্ডে পাঠানোর সিদ্ধান্তের পক্ষে যুক্তি দেখাতে গিয়ে এলএসডি নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রের আত্মহত্যা এবং ওই মাদকের ভয়াবহতা তুলে ধরেন।

    সেটি পড়ে শুনিয়ে বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম বলেন, আমরা তাকে শোকজ করেছি— কেন তিনি রিমান্ড মঞ্জুর করলেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কোন ছাত্র আত্মহত্যা করেছে সেটির বর্ণনা দিলেন।

    এর পর বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারক অপর ম্যাজিস্ট্রেটের ব্যাখ্যা পড়ে শোনান। সেখানে ম্যাজিস্ট্রেট বলেন, উপরোক্ত বিষয় সার্বিক বিবেচনায় দুদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করার আদেশের ক্ষেত্রে কোনো ত্রুটি-বিচ্যুতি নিতান্তই আমার ইচ্ছাকৃত নয়, সরল বিশ্বাসে কৃত ভুল।

    বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম বলেন, ‘এখানে যে ত্রুটি হয়েছে তা তিনি বিশ্বাসই করেন না। হাইকোর্টকে আন্ডারমাইন করা হয়েছে।’

    গত ৪ আগস্ট রাতে প্রায় চার ঘণ্টার অভিযান শেষে বনানীর বাসা থেকে পরীমনি ও তার সহযোগী দীপুকে আটক করে র্যা ব। এ সময় পরীমনির বাসায় বিভিন্ন ধরনের মাদক পাওয়া গেছে বলে জানায় র্যা ব। পর দিন ৫ আগস্ট র্যা ব-১ বাদী হয়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে পরীমনি ও তার সহযোগীর বিরুদ্ধে বনানী থানায় মামলা করে।

    এর পর তিন দফায় মোট সাত দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয় পরীমনিকে। প্রথম দফায় ৫ আগস্ট চার দিন, দ্বিতীয় দফায় ১০ আগস্ট দুদিন এবং ৩য় দফায় ১৯ আগস্ট একদিনের রিমান্ড মঞ্জুর হয় তার। বর্তমানে তিনি জামিনে রয়েছেন।

    সূত্রঃ যুগান্তর

    আরও খবর

    Sponsered content