• অনিয়ম / দুর্নীতি

    সিলেটের বালুচর এলাকায় পাহাড় কাটার মহা উৎসবঃ দেখার কেউ নেই!

      প্রতিনিধি ২০ আগস্ট ২০২১ , ৭:৪৩:৪০ অনলাইন সংস্করণ

    তুহিনুর রহমান শাহজাহান – নিজস্ব প্রতিবেদক:  ভূমির ভারসাম্য রক্ষায় খুঁটি হিসেবে বিবেচিত পাহাড়-টিলা।

    বাংলাদেশে মোট ভূমির এক পঞ্চমাংশ পাহাড়ি অঞ্চল। বিশেষ করে পূর্বাঞ্চল ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলে আট ভাগ পাহাড়ি অঞ্চল অবস্থিত। বাকি দশ ভাগ অবস্থিত দেশের অন্যান্য অঞ্চলে। চট্টগ্রাম-সিলেট অঞ্চলে বেশ কিছু পাহাড় টিলা রয়েছে। প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্যের লীলানিকেতন এই টিলা পাহাড় দেশি বিদেশি পর্যটকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। অথচ এই টিলা পাহাড় ধ্বংস হচ্ছে। মানুষের আগ্রাসী থাবায় শত শত বছরের ঐতিহ্য আজ বিলীন হওয়ার পথে।

    ঐতিহ্য বিনষ্ট হওয়া সভ্যতা ধ্বংসের নামান্তর। নানা কারণে পরিবেশের ভারসাম্য ধ্বংস হচ্ছে সারাবিশ্বে। মানুষের অসচেতনতা, জলবায়ুর পরিবর্তন ইত্যাদি কারণে ধ্বংস হচ্ছে পরিবেশ।

    এই প্রেক্ষাপটে সিলেটের অবস্থা সবচেয়ে বেশি শোচনীয়। এখানে অবাধে কাটা হচ্ছে টিলা-পাহাড়।
    এ ব্যাপারে প্রচলিত আইনেরও প্রয়োগ নেই বললেই চলে। পাহাড় কাটার ফলে বনাঞ্চল ধ্বংস হচ্ছে, ভূমি ধসের ঘটনাও ঘটছে। পাহাড় কাটার ফলে পরিবেশের ভারসাম্য ধংস হচ্ছে, বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব ত্বরান্বিত হচ্ছে।
    তাছাড়া, পাহাড় পর্বত ধ্বংসের ফলে নদীর গতিপথ পরিবর্তিত হচ্ছে, জীববৈচিত্র্য বিনষ্ট হচ্ছে,
    পরিবেশে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে। সিলেটের ৫ নং টুলটিকর ইউনিয়নের বালুচরে চলছে অবাধে পাহাড়ের টিলা কাটার মহোৎসব।
    প্রাকৃতিক দুর্যোগ সংঘটিত হওয়ার পরেই সরকারের কর্তাব্যক্তিরা প্রতিশ্রুতি নিয়ে সামনে আসেন।

    কর্তৃপক্ষের দূরদৃষ্টির অভাব ও মানুষের প্রতি সংবেদনশীলতার ঘাটতির ফলে পাহাড় কাটা বন্ধ হচ্ছে না।

    পরিবেশ আইন লঙ্ঘন করে পাহাড় কাটার উৎসব চলছে।
    ২০০০ সালে সংশোধিত বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ১৯৯৫ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ছাড়া পাহাড় কাটা নিষিদ্ধ করেছে।

    আইনে বলা আছে, অনুমোদন ছাড়া পাহাড় কাটার জরিমানা প্রথম অপরাধে দুই বছরের কারাদণ্ড, দুই লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ড। পরবর্তী অপরাধে জরিমানা দশ বছরের কারাদণ্ড, দশ লক্ষ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হতে পারে।

    নির্বিচারে পাহাড় কাটার ফলে পাহাড়ের জীববৈচিত্র্য প্রতিনিয়ত হুমকির মধ্যে পড়ছে।

    প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং জীব-বৈচিত্র্যের সঙ্গে অসাধারণ ভৌগলিক স্বাতন্ত্র্যযুক্ত এই অঞ্চলের পাহাড়গুলো বিভিন্ন স্বার্থান্বেষী মহল, ব্যক্তি কর্তৃক নির্বিচারে ধ্বংস করা হচ্ছে।
    সরকারকে অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে যে, পাহাড় কাটা যেটি ভূমিধসের একটি বড় ঝুঁকি তৈরি করে, তার বিরুদ্ধে আইন কঠোরভাবে প্রয়োগ করা হয়েছে।

    এছাড়াও, এই জাতীয় অপরাধ বন্ধে স্থানীয় প্রশাসনের পাশাপাশি পরিবেশ অধিদপ্তরকে অবশ্যই এগিয়ে আসতে হবে।

    আরও খবর

    Sponsered content