প্রতিনিধি ৯ আগস্ট ২০২১ , ৬:৫৮:৩৬ অনলাইন সংস্করণ
মোঃ বদরুজ্জামান বদরুল,বিশেষ প্রতিনিধিঃ প্রতিপক্ষ দলের নাম যেখানে অস্ট্রেলিয়া সেখানে জয় পাওয়ার কথাতো চিন্তাই করা যায় না।আর সিরিজ জয় সেতো স্বপ্নের ব্যাপার। করোনার ভিতরে বাংলাদেশের সাথে সিরিজ শুরুর আগে সবাই ভেবেছিল বড় ব্যবধানে অস্ট্রেলিয়া সিরিজ জিতবে। কিন্তু হয়ে গেলো তার উল্টো। টাইগারদের কবলে পড়ে রীতিমতো নাস্তানাবুদ হলো অজিরা।যা হয়তো তারা নিজেরাও ভাবতে পারেনি। পাঁচ ম্যাচ সিরিজের শেষ টি-২০তে নিজেদের ইতিহাসে সর্বনিম্ন রানে অল আউট হওয়ার লজ্জা পেয়েছে সফরকারী অস্ট্রেলিয়া।
এদিন মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে প্রথমে ব্যাট করে ৮ উইকেটে ১২২ রান সংগ্রহ করে স্বাগতিক বাংলাদেশ। জবাবে, মাত্র ৬২ রানে গুটিয়ে যায় অস্ট্রেলিয়ার ইনিংস। ফলে ৬০ রানের বড় জয়ের পাশাপাশি ৪-১ ব্যবধানে সিরিজ নিজেদের করে নেয় রিয়াদ বাহিনী।
এর আগে, অস্ট্রেলিয়ার সর্বনিম্ন দলীয় সংগ্রহ ছিল ৭৯ রান। ২০০৫ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে এই লজ্জায় পড়েছিল তারা। সবমিলিয়ে মাত্র পঞ্চমবার একশ রানের নিচে অল আউট হলো সাবেক বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা।
স্বাগতিকদের হয়ে বল হাতে সফরকারীদের শিবিরে প্রথম আঘাত হানেন নাসুম।অস্ট্রেলিয়ার হয়ে রান তাড়া করতে মাঠে নামেন ড্যানিয়েল ক্রিস্টিয়ান ও ম্যাথু ওয়েড। নাসুম আহমেদের করা ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারের প্রথম বলেই বোল্ড হন ড্যানিয়েল ক্রিস্টিয়ান। আগের ম্যাচের সেরা খেলোয়াড় এদিন ফেরেন মাত্র ৩ রান করে।
সিরিজে অজিদের পক্ষে সর্বোচ্চ রান করা মার্শকেও অল্প রানেই ফেরান নাসুম। ম্যাকডারমটকে সঙ্গে নিয়ে দলের হাল ধরার চেষ্টা করেন ম্যাথু ওয়েড। কিন্তু অজি অধিনায়ককে ২২ রানের বেশি করতে দেননি বিশ্ব সেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান।
নিজের প্রথম ওভারেই ১৭ রান করা ম্যাকডারমটকে ফেরান রিয়াদ। এরপর মাত্র ৬ বলের মাঝে ৩ উইকেট হারিয়ে ম্যাচ থেকে ছিটকে যায় অজিরা। একই ওভারে অ্যালেক্স ক্যারি ও ময়জেস হেনরিকসকে আউট করেন সাইফউদ্দিন। এরপর টার্নারকে সাজঘরে ফেরান সাকিব। এর মাধ্যমে দেশের হয়ে টি-২০তে একশ উইকেটের মাইলফলক স্পর্শ করেন তিনি।
অস্ট্রেলিয়ার শেষ তিন ব্যাটসম্যানের কেউই ক্রিজে টিকে থাকতে পারেননি। শেষ ২০ বলে ছয় উইকেট হারায় দলটি। শেষ পর্যন্ত ১৩.৪ ওভারেই অল আউট হয় অজিরা। বাংলাদেশের পক্ষে একাই ৪ উইকেট তুলে নেন সাকিব। এছাড়া সাইফউদ্দিন ৩টি ও নাসুম দুটি করে উইকেট শিকার করেন।
এর আগে, টস জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মাহমুদ উল্লাহ রিয়াদ। দলের হয়ে ইনিংস শুরু করতে মাঠে নামেন মাহেদী হাসান ও মোহাম্মদ নাইম। ওপেনিং জুটিতে পরিবর্তন আনার সাফল্য হাতেনাতে পায় বাংলাদেশ।
মাহেদী ও নাইমের ব্যাটে উড়ন্ত সূচনা পায় লাল সবুজের দল। প্রথম তিন ওভারে কোনো উইকেট না হারিয়েই ৩৩ রান সংগ্রহ করেন দুই ওপেনার। অস্ট্রেলিয়া প্রথম সাফল্যের দেখা পায় পঞ্চম ওভারে। অ্যাস্টন টার্নারকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে অ্যাস্টন অ্যাগারের তালুবন্দী হন ১৩ রান করা মাহেদী।এরপর বাজে শট খেলে অ্যাগারের দ্বিতীয় ক্যাচে পরিণত হন নাইম। ড্যানিয়েল ক্রিস্টিয়ানের করা স্লোয়ার বলে রিভার্স সুইপ খেলতে গিয়ে আউট হন এই ওপেনার।
এর আগে তিনি ২৩ বলে ২৩ রান করেন। পরের ওভারে অ্যাডাম জাম্পার বলে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়ে সাজঘরে হাঁটা দেন সাকিব আল হাসান। টাইগার অলরাউন্ডার করেন ২০ বলে ১১ রান।
দ্রুত দুই উইকেট হারানোর পর ২৪ রানের ছোট জুটি গড়েন রিয়াদ ও সৌম্য। কিন্তু অল্প সময়ের ব্যবধানে দুজনই আউট হয়ে সাজ ঘরে ফেরেন। অ্যাগারের বলে আউট হওয়ার আগে রিয়াদ করেন ১৯ রান। অন্যদিকে ১৬ রান করা সৌম্যকে ফেরান ক্রিস্টিয়ান। সোহান করেন ৮ রান।শেষ দিকে আফিফ ১০ রান করেন। রানের খাতা খোলার আগেই রান আউট হন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে দুটি করে উইকেট শিকার করেন ড্যান ক্রিস্টিয়ান ও নাথান এলিস। এছাড়া একটি করে উইকেট তুলে নেন অ্যাস্টন টার্নার, অ্যাস্টন আগার ও অ্যাডাম জাম্পা।