প্রতিনিধি ১১ জুলাই ২০২১ , ১১:৩৬:২১ অনলাইন সংস্করণ
মাহামুদ আহসান হাবিব,ঠাকুরগাঁও॥ ঠাকুরগাঁও সদর হাসপাতালে করোনা আক্রান্ত রোগীদের খাবারের অনিয়ম সংক্রান্ত সংবাদ প্রকাশের পরে ৩ সাংবাদিকের নামে মামলা করা হয়।
গত শুক্রবার সদর হাসপাতালের তত্তাবধায়ক ডা: নাদিরুল আজিজ চপল ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে এ মামলাটি করেন।
পুলিশ পরদিন শনিবার রাতে তানভির হাসান তানুকে গ্রেফতার করে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডালিম রায় তানুর ৫ দিনের রিমান্ড আবদেন করলে গতকাল রোববার ঠাকুরগাঁও সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্্েরট কোর্টের বিচারক আরিফুর রহমানের আমলী আদালত তার রিমান্ড আবেদন নামঞ্জুর করে জামিন মঞ্জুর করেন।
মামলা পরিচালনা করেন জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এ্যাড. আব্দুল হালিম, সিনিয়র এ্যাড. জাহাঙ্গীর আলম, এ্যাড. এমরান হোসেন চৌধুরী, ফজলে রাব্বি বকুল, এ্যাড. লিয়ন। তানু ইনডিপেনডেন্ট টিভি, দৈনিক ইত্তেফাক ও জাগো নিউজের জেলা প্রতিনিধি । মামলায় নিউজবাংলা টুয়েন্টিফোরের সংবাদদাতা রহিম শুভ ও দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিনের জেলা প্রতিনিধি আব্দুল লতিফ লিটুকেও অভিযুক্ত করা হয়েছে।
পরিবারের সদস্যরা জানান, সম্প্রতি তানভির হাসান তানু স্ব-পরিবারে করেনায় আক্রান্ত হন। তাই গ্রেফতারের পর অসুস্থবোধ করায় রাতে সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। হাসপাতালের বিছানায় হাতকড়া লাগানো অবস্থায় শুয়ে থাকতে দেখা যায় তাকে। তানুকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে সাংবাদিকদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। রাতেই প্রেস ক্লাবের পক্ষ থেকে ক্লাব চত্বরে প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়। অবশেষে গতকাল রোববার দুপুরে তানুকে ঠাকুরগাঁও সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আরিফুর রহমানের আদালতে তোলা হলে তার জামিন মঞ্জুর করে আদালত। অবিলম্বে তানভির হাসান তানুর বিরুদ্ধে দ্রুত মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন সাংবাদিক ও পরিবারের সদস্যরা।
উল্লেখ্য, গত ৫ জুলাই জাগোনিউজ টুয়েন্টিফোরসহ বেশকয়েকটি অনলাইন ও জাতীয় দৈনিকে “আধুনিক সদর হাসপাতালে করোনা রোগীদের খাবারে অনিয়ম” শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এতে জানানো হয় করোনাকালীন সময়ে করোনা রোগীদের দৈনিক ৩শ টাকা করে খাবার বরাদ্দ থাকলেও কর্তৃপক্ষ ৭০-৮০ টাকায় নি¤œমানের খাবার পরিবেশন করছেন যা ভর্তিকৃত রোগীরা অভিযোগ করেছেন। এরই প্রেক্ষিতে ৯ জুলাই সদর হাসপাতালের তত্তাবধায়ক ডা: নাদিরুল আজিজ চপল বাদী হয়ে তানুসহ ৩ সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে এ মামলা দায়ের করেন।
তবে মামলার এজাহারেই হাসপাতালে খাদ্য সরবরাহে ব্যাঘাত ঘটার কথাটি স্বীকার করে নেয়া হয়েছে। এতে বলা হয়, লকডাউনের কারণে খাদ্য সরবরাহে দুই-এক দিন ‘সামান্য ব্যত্যয়’ হয়েছে।
আবার সংবাদটিকে মিথ্যা, ভিত্তিহীন, বানোয়াট, জনরোষ সৃষ্টিকারী ও মানহানিকর উল্লেখ করে এজাহারে এ-ও দাবি করা হয় যে, এই সংবাদ প্রকাশের উদ্দেশ্য অসৎ। রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের ভাবমূর্তি বিনষ্ট ও সুনাম ক্ষুণ্ণ করা ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটিয়ে সরকারকে বেকায়দায় ফেলার মতো অভিযোগও আনা হয় মামলায়।
এমন দুর্বল অভিযোগ থাকার পরেও তড়িঘড়ি করে আসামি গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে ঠাকুরগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তানভীরুল ইসলাম বলেন, ‘মামলার এক নম্বর আসামি থানায় এসেছিলেন। পরবর্তীতে ঊর্ধ্বতনদের সঙ্গে কথা বলে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে’।