ভাটি বাংলা ডেস্কঃ ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২১ , ২:৩৬:৫২ অনলাইন সংস্করণ
স্বাধীনতার ৫০ বছর পর বাতিল হলো সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান এর বীর উত্তম খেতাব। সরকারি এক প্রজ্ঞাপনে বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনি সহ তাদেরকে সহায়তা ও পৃষ্ঠপোষকতার অভিযোগে
মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সেক্টর কমান্ডার ও জেড ফোর্সের অধিনায়ক জিয়াউর রহমান এর বীর উত্তম খেতাব বাতিল করলো আওয়ামী লীগ সরকার।
যিনি ১৯৭১ সালের ২৬ শে মার্চ চট্টগ্রামের কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে বঙ্গবন্ধুর পক্ষে মহান স্বাধীনতার ঘোষণা দেন এবং দীর্ঘ ৯ মাসের মুক্তি সংগ্রামে একটি সেক্টরের অধিনায়ক হিসেবে সমরনায়কের দায়িত্ব পালন করেন। মহান মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বের স্বীকৃতি স্বরূপ তিনি বীর-উত্তম খেতাব লাভ করেন।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সপরিবারে নিহত হওয়ার পর নানা ঘটনা প্রবাহের মধ্য দিয়ে সেনাবাহিনীর প্রধান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। এরপর ১৯৭৭ সালের ২১ এপ্রিল তিনি বাংলাদেশের ষষ্ঠ রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন। ১৯৭৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর তিনি প্রতিষ্ঠা করেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)।
জিয়াউর রহমান ১৯৩৬ সালের ১৯ জানুয়ারি বগুড়ার গাবতলী থানার বাগবাড়িতে মাতুলালয়ে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা মনসুর রহমান কলকাতায় একজন কেমিস্ট হিসেবে সরকারি চাকরিতে নিয়োজিত ছিলেন। শৈশব ও কৈশোরের একটি সময় গ্রামে কাটিয়ে তিনি পিতার সঙ্গে কলকাতায় এবং দেশ বিভাগের পর করাচিতে চলে যান। শিক্ষাজীবন শেষে ১৯৫৩ সালে পাকিস্তান মিলিটারি একাডেমিতে অফিসার ক্যাডেট হিসেবে ভর্তি হন। ১৯৫৫ সালে তিনি কমিশন লাভ করেন।
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের বীর উত্তম খেতাব বাতিলের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে শনিবার ঢাকাসহ দেশের সকল মহানগর এবং রবিবার দেশের সকল জেলা সদরে প্রতিবাদ সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল কর্মসূচি ঘোষণা করেছে দলটি।
আজ বৃহস্পতিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে কর্মসূচি ঘোষণা করেন স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন।
তিনি বলেন, জিয়াউর রহমানের খেতাব বাতিলের মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধাদের অপমান করা হয়েছে। যেসব কারণে জিয়াউর রহমান বীর উত্তমের খেতাব কেড়ে নেওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়েছে, তার কোনটাই যুক্তি কিম্বা বাস্তবসম্মত নয়।
তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান বীর উত্তম খেতাব পেয়েছেন মুক্তিযুদ্ধে অসীম বীরত্বপূর্ণ ভূমিকা ও অবদানের জন্য। পরবর্তীকালে তার কোনো কার্যক্রমই ১৯৭১ সালে তার অবদানকে মিথ্যা করে দিতে পারে না। ফলে তার অর্জিত খেতাব বাতিল অসঙ্গত এবং রাজনৈতিক প্রতিহিংসামূলক।
এর আগে মঙ্গলবার (৯ ফেব্রুয়ারি) বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের মদদদাতা উল্লেখ করে সাবেক রাষ্ট্রপতি ও বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের মুক্তিযুদ্ধে অবদানের খেতাব ‘বীর উত্তম’ বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয় জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা)। স্বাধীনতার প্রায় ৫০ বছর পর জিয়াউর রহমানের খেতাব বাতিল হলে তাদের সব রাষ্ট্রীয় সুযোগ-সুবিধাও বাতিল হবে।