• ক‌্যাম্পাস

    সিলেটের এডিশনাল ডিআইজি জয়দেব ভদ্রের বাংলাদেশ ফিমেইল একাডেমি দিরাই পরিদর্শন

      প্রতিনিধি ২৮ জানুয়ারি ২০২১ , ৯:৪২:৫৮ অনলাইন সংস্করণ

    স্টাফ রিপোর্টার।। গতকাল সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার পৌর সদরে অবস্থিত “বাংলাদেশ ফিমেইল একাডেমি (BFA)” পরিদর্শনে এসেছিলেন সিলেট রেঞ্জের এডিশনাল ডিআইজি জয়দেব ভদ্র। সুনামগঞ্জ পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান দিরাই থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আশরাফুল ইসলাম।
    এসময় উপস্থিত ছিলেন একাডেমির অধ্যাক্ষ নাজমা বেগম, একাডেমির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি জামিল চৌধুরীর ছেলে এনাম চৌধুরী, দিরাই উপজেলা জাসদের সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন সহ শিক্ষক ও ছাত্রীবৃন্দ।
    সিলেট রেঞ্জ এডিশনাল ডিআইজি জয়দেব ভদ্র এখানে দাঁড়িয়ে বলে গেলেন উনার জীবনের গল্প। যিনি নিজগুনেই দেশে বিদেশে নন্দিত ও একজন আলোকিত মানুষ।
    পুলিশ ডিপার্টমেন্টে একজন সৎ ও নিষ্ঠাবান হিসাবে রয়েছে যশ ও শুনাম। ছোটবেলা থেকেই উনি নিজেই ছিলেন সুবিধা বঞ্চিত শ্রেণির একজন।
    ধারদেনা ও অন্যের সহায়তায়- অদম্য ইচ্ছাশক্তি এবং মনোবলে লেখাপড়ার প্রতিক্ষেত্রে রেখেছেন মেধার স্বাক্ষর। নিজ বাড়ি থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক লেখাপড়া করতে যেয়ে এমনকি পরীক্ষার সময় বৃষ্টির দিনে নিজের ছাতা নেই এমনকি প্রতিবেশীদের কাছেও ছাতা না পেয়ে বৃষ্টিতে ভিজে কিভাবে প্রতিকূলতা জয় করে আজকের জায়গায় এসেছেন তা সাবলীল ভাবে বললেন জয়দেব ভদ্র! উপস্থিত সুবিধা বঞ্চিত শ্রেণির মেয়ে শিশু আর শিক্ষক ও অতিথি’রা শুনছিলেন মন্ত্রমুগ্ধের মতো। অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে দেখেছেন পুলিশ ডিপার্ট্মেন্টের চৌকস কর্মকর্তার জীবন কাহিনি। বাংলাদেশ ফিমেল একাডেমির শিক্ষক শিক্ষার্থীদের সামনে এমন বাস্তব উদাহরণ বর্ণনা করায় তাদের মনোবল ও আত্মবিশ্বাস যেনো হয়েছে আকাশচুম্বী।
    এডিশনাল ডিআইজি জয়দেব ভদ্র’র সফলতার অনন্য উচ্চতায় নিজেদেরকে নিয়ে যেতে প্রত্যেকে উজ্জীবিত হয়ে নিয়েছেন দৃপ্ত শপথ।
    জয়দেব ভদ্র’র পরিদর্শন ও বক্তব্য দিরাই ফিমেল একাডেমির শিক্ষক শিক্ষার্থীদের সাহস ও এগিয়ে যাওয়ার প্রেরণা আরও সুদৃঢ় হয়েছে।
    জয়দেব ভদ্র’র উনার নাতিদীর্ঘ আলোচনায় আরও বলেন- নিজের তিক্ত অভিজ্ঞতা থেকে উনার চিন্তা মননে ছিল এ সমাজের অবহেলিত পিছিয়ে পরা মানুষের জন্য কিছু করা।আর সেই অদম্য উদ্যোগ নিয়ে ১৯৯০ খ্রিষ্টাব্দে খুলনা থেকে প্রায় ৬০ কিলোমিটার দূরে একটি প্রত‍‍্যন্ত এলাকায় অবস্থিত মাহমুদ কাঠি গ্রামে,(পাইকগাছা  উপজেলা) উনার কিছু সহযোগী বন্ধুদের নিয়ে গঠন করেন একটি পাঠাগার। যার নাম দেয়া হয় অনির্বাণ লাইব্রেরী।  তখন তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। প্রথমে বাড়ি বাড়ি গিয়ে পুরাতন বই সংগ্রহ করে পাঠ কার্যক্রম শুরু হয়।
    তারপরের গল্প কেবল একটি স্বর্ণালি ইতিহাস।  এই লাইব্রেরী অন্যসব লাইব্রেরীর চেয়ে আলাদা, এর মাধ্যমে সামাজিক আন্দোলন, গরীব অসহায়- দের শিক্ষা, চিকিৎসা, গরীব মেয়েদের বিবাহ সহায়তা সহ নানাবিধ উন্নয়ন কার্যক্রম পরিচালিত হয়। এখন এই প্রতিষ্ঠাটির মাধ্যমে অনেক মানুষেরই সপ্ন পুরন হচ্ছে। আজ এই প্রতিষ্ঠানটির খ‍্যতি সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পরেছে, বর্তমানে সারা বিশ্বে অনির্বাণ সদ‍স‍্য ও শুভাকাংকী রয়েছে অগনিত। ইতিমধ্যে এই লাইব্রেরী বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক প্রথম শ্রেণির লাইব্রেরী হিসাবে স্বীকৃতি পেয়েছে । বর্তমানে প্রায় এক কোটি টাকা ব‍্যয়ে একটি  বিল্ডিং স্হাপন হয়েছে।
    আজ ফিমেল একাডেমির মেয়েদের প্রায় চল্লিশ হাজার টাকা মূল‍্যের শিশুতুষ বই উপহার দিয়েছেন এই গুণী পুলিশ কর্মকর্তা। পাশাপাশি সুবিধা বঞ্চিত মেয়ে শিশুদের জন্য মাথা গুজার ঠাঁই, অন্নবস্ত্র, শিক্ষা ও চিকিৎসার ব্যবস্থা করে দেওয়ার জন্য বাংলাদেশ ফিমেল একাডেমির প্রতিষ্ঠাতা সমাজ হিতৈষী জামিল চৌধুরীর ভুয়সী প্রশংসা করেন।
    এছাড়াও একইদিন বিকেল তিনটায় ফিমেল একাডেমিতে আসেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোঃ আব্দুল করিম ও সিলেট জেলা যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোঃ মিজানুর রহমান। পরিদর্শন ও মতবিনিময় সভায় অতিরিক্ত সচিব আব্দুল করিম ঘোষণা দেন
    যুবউন্নয়ন অধিদপ্তরের একটি ট্রেনিং সেন্টার ফিমেইল একাডেমিতে প্রতিষ্ঠিত হবে। যেটা পরিচালনা করবে বাংলাদেশ ফিমেইল একাডেমি, যার মাধ্যমে  এখানের শিক্ষার্থী ছাড়াও অত্র এলাকারবেকার যুবক যুবতিরা উপকৃত হবেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন ফিমেইল একাডেমির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি জামিল চৌধুরী, জাসদ দিরাই  উপজেলা সাধারণ সম্পাদক জনাব আমিনুল ইসলাম আমিন ও অধ্যক্ষ নাজমা বেগম প্রমুখ সহ শিক্ষক শিক্ষার্থী ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।

    বক্তব্য রাখছেন বাংলাদেশ পুলিশের সিলেট রেঞ্জের এডিশনাল ডিআইজি জয়দেব ভদ্র।

    আরও খবর

    Sponsered content