প্রতিনিধি ১৭ নভেম্বর ২০২০ , ৯:৪৫:৫৯ অনলাইন সংস্করণ
মাহমুদ আহসান হাবিব ঠাকুরগাঁওঃ ঠাকুরগাঁও জেলায় বর্তমানে ১১০০ টাকার রাসায়নিক সার বিক্রি হচ্ছে ১৪০০ টাকায়। সার নিয়ে ডিলাররা নানা রকম কারসাজি চালালেও কৃষি বিভাগের কোনো তদারকি নেই। এদিকে রসিদের মাধ্যমে সার বিক্রির নিয়ম থাকলেও নিয়ম মানছেন না ডিলাররা।
বাংলাদেশের উত্তরের সবজির জন্য বিখ্যাত জেলা হিসেবে পরিচিত ঠাকুরগাঁও। এখান থেকে বিভিন্ন জেলাসহ বিদেশেও সবজি রপ্তানি করা হয়। সবজি উৎপাদনে প্রয়োজনীয় রাসায়নিক সারই এখানে বিক্রি হচ্ছে চড়া দামে।
কৃষকদের সেবায় প্রতিটি ইউনিয়নে দু-তিনজন উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা থাকলেও অদৃশ্য কারণে সরকারের নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে টিএসপি সার। ডিলারদের কাছে সরকারি দরে সার কিনতে গেলে বলা হয় টিএসপি সার নেই। আর বেশি দাম দিলে সার মেলে পর্যাপ্ত পরিমাণে।
ঠাকুরগাঁও জেলায় সরকারি মূল্য ডিলার পর্যায়ে ৫০ কেজির এক বস্তা ট্রিপল সুপার ফসফেট (টিএসপি) (সাদা-কালো) ১০০০ আর চাষি পর্যায়ে ১১০০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। কালো টিএসপি ১৪০০ থেকে ১৪৫০ টাকা, সাদা টিএসপি ১২৫০ থেকে ১৩০০ টাকা, ডিএপি সার ডিলার পর্যায়ে ৭০০ আর চাষি পর্যায়ে বিক্রি হচ্ছে ৮২০ থেকে ৮৫০ টাকা। নাইট্রোজেন জাতীয় সার (ইউরিয়া) ডিলার পর্যায়ে ৭০০ আর চাষি পর্যায়ে ৮০০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। ডিলার পর্যায়ে মিউরেট অব পটাশ (এমওপি) ৬৫০ আর চাষি পর্যায়ে ৭৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বিএডিসির একাধিক ডিলার বলেন,
বিএডিসির সাধারণ ডিলাররা প্রতি মাসে নন-ইউরিয়া সারের বরাদ্দ পান এক থেকে দেড় টন আর বাফারসহ বিএডিসির ডিলাররা মাসে বরাদ্দ পান ৬০-৭০ টন। তাই সারের বাজার তাদের হাতে। বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা ও ঠাকুরগাঁও সদরে বাফার ও বিএডিসির ডিলার কবীর এন্টারপ্রাইজের ম্যানেজার রফিকুল ইসলামের কাছে সার কিনতে গেলে তিনি প্রথমে টিএসপি সারের মূল্য চান ১৪০০ টাকা। টাকার রসিদ চাইলে তিনি তা দিতে অস্বীকার করেন।
খুচরা সার বিক্রেতা সাদেকুল ইসলাম বলেন, ডিলারদের কাছে ১৪০০ টাকায় কিনে বাইরে ১০-২০ টাকা লাভ করে বিক্রি করছি।
ঠাকুরগাঁও জেলার সদর উপজেলার হরিহরপুর এলাকার চাষি বেলাল হোসেন বলেন, এখনই ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা বেশি দিয়ে সারের বস্তা কিনতে হচ্ছে। মৌসুম শুরু হলে কী হবে বলতে পারছি না।
ঠাকুরগাঁও জেলার সদর উপজেলার রহিমানপুর ইউনিয়নের পাইকপাড়া গ্রামের কৃষক আব্দুল গনি বলেন, সার নিয়ে কর্মকর্তাদের মাঠ পর্যায়ে তদারকি নেই। ডিলাররা নিজেদের সুবিধার্থে সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছেন।
বিএডিসি ফার্টিলাইজার অ্যাসোসিয়েশনের জেলা শাখার সভাপতি এনামুল হক সরকার বলেন, সার ডিলারদের কোনো সিন্ডিকেট নেই, তবে সমিতি আছে। নিয়ম অনুযায়ী ডিলাররা সার উত্তোলন করে সরকারি দরে বিক্রি করছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আফতাব হোসেন বলেন, কেউ বেশি দামে সার বিক্রি করলে তার লাইসেন্স বাতিল করা হবে।