• মুক্ত কলাম

    আ.লীগের ভারতে পালানো রহস্য

    আ.লীগ নেতাদের আস্তানা ত্রিপুরা-মেঘালয়-কলকাতা-আসাম গণহত্যাকারীদের সীমান্ত দিয়ে পালানোর সুযোগ কারা করে দিচ্ছে?

      স্টালিন সরকার এর কলাম ৫ অক্টোবর ২০২৪ , ২:৪৫:২৯ অনলাইন সংস্করণ

    কমিউনিস্ট নেতা নিকোলাই চশেস্কু ২২ বছর উন্নয়নের নামে রুমানিয়াকে পুলিশি রাষ্ট্র করে জনগণের ওপর পৈশাচিক নির্যাতন চালিয়েছিল। ১৯৮৯ সালে জনগণ রাস্তায় নামলে গণবিক্ষোভ ঠেকাতে দমন-পীড়নের পথ বেছে নেয়। ২২ ডিসেম্বর বিক্ষুব্ধ জনতা রাজধানী বুখারেস্টে কমিউনিস্ট পার্টির সদর দফতর ঘেরাও করলে গণহত্যা করে নিকোলাই চশেস্কু স্ত্রী এলিনাকে নিয়ে হেলিকপ্টারে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে ধরা পড়েন।



    ২৫ ডিসেম্বর মাত্র দুই ঘণ্টার বিচারে স্ত্রীসহ তাকে মৃত্যুদ- দেয়া হয়। রুমানিয়ার কসাই নিকোলাই চশেস্কু হেলিকপ্টারে পালাতে গিয়ে ধরা পড়লেও ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে বাংলাদেশের কসাই শেখ হাসিনা গণহত্যা করে বোন শেখ রেহানাকে নিয়ে হেলিকপ্টারে নির্বিঘ্নে পালিয়ে যান ভারতে।



    গত দুই মাসে সীমান্ত দিয়ে ভারতে পালিয়ে গেছেন গণহত্যা ও লুটের দায়ে অভিযুক্ত সাবেক মন্ত্রী-এমপি-নেতা-বিতর্কিত আমলা, পুলিশ কর্মকর্তা-গণমাধ্যমকর্মী, আওয়ামী লীগের উপনেতা-পাতি নেতাসহ কয়েক শ’ অলিগার্ক।

    ব্যাংক হিসাব জব্দ, পাসপোর্ট বাতিল ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী গ্রেফতার অভিযানের মধ্যেও হত্যা মামলার এত সংখ্যক আসামি সীমান্ত দিয়ে পালিয়ে যায় কিভাবে? এ নিয়ে সর্বত্রই চলছে বিতর্ক।

    আওয়ামী লীগ নেতাদের ভারতে পালানো নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে রাজনৈতিক বিশ্লেষক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ ইউটিউব মিডিয়ায় প্রশ্ন তুলে বলেছেন, ‘ফৌজদারি অপরাধ করে বিপুল সংখ্যা ব্যক্তি সীমান্ত দিয়ে পালালো কিভাবে? তাদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা রয়েছে, পাসপোর্ট বাতিল ও ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করা হয়েছে। তারপরও এতগুলো গোয়েন্দা সংস্থা, পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি থাকার পরও সীমান্ত দিয়ে পালালো নির্বিঘেœ। গণমাধ্যমে খবর বের হয়েছে, বেশ কয়েকটি সীমান্ত দিয়ে আওয়ামী লীগের বিতর্কিত ও ফৌজদারি অপরাধে অভিযুক্ত অপরাধী দুর্নীতিবাজ রাজনীতিক-দলবাজ আমলা-হাসিনার সেবাদাস পুলিশ কর্মকর্তারা ভারতে পালিয়েছেন।


    এরা যে সব সীমান্ত দিয়ে পালিয়েছেন সেগুলোতে দালাল ছাড়াও থানার ওসি, প্রশাসনের লোক, স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও বিএনপি নেতারা টাকার বিনিময়ে সীমান্ত পার করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।


    তদন্ত কমিশন গঠন করে ওই সব ঘটনা তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। তদন্ত করে যারা আওয়ামী লীগ নেতাদের ভারতে পালাতে সহায়তা করেছেন তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে যারা দেশে ঘাপটি মেরে রয়েছেন তারাও একই প্রক্রিয়ায় টাকার বিনিময়ে সীমান্ত দিয়ে ভারতে পালিয়ে যাবেন।

    সোশ্যাল মিডিয়ায় ভারতে পালিয়ে যাওয়া নেতাদের নানা খবর ও ভিডিও প্রচার হচ্ছে এবং নেটিজেনরা তা নিয়ে তীব্র প্রতিবাদ করছেন।

    ‘আমি অপার হয়ে বসে আছি ওহে দয়াময়/পারে লয়ে যাও আমায়’ বাউল সাধক ফকির লালনের এই গান ক্ষমতাচ্যুত অওয়ামী লীগের নেতা ও হাসিনার অলিগার্করা জপছেন।

    হত্যা, লুট, গুম, দুর্নীতি, রাহাজানিসহ নানা অপরাধে অভিযুক্ত নেতারা গ্রেফতার এড়াতে যেকোনো উপায়ে ভারতে যাওয়ার জন্য অপার হয়ে অপেক্ষা করছেন।

     


    জানা যায়, আওয়ামী লীগের ৮১ সদস্যবিশিষ্ট কেন্দ্রীয় কমিটির কয়েকজন সদস্যসহ সাবেক মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী, সাবেক সিটি মেয়র, পৌরমেয়র, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান, দুর্নীতিবাজ পুলিশ কর্মকর্তা, আমলা, জেলা-উপজেলা পর্যায়ের আওয়ামী লীগের বহু পাতি নেতা সীমান্ত দিয়ে পালিয়ে গেছেন।


     

    শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, মোজাম্মেল বাবু, শ্যামল দত্ত, সিরাজগঞ্জের জান্নাত আরা হেনরি, চট্টগ্রামের এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরীসহ কয়েকজন গ্রেফতার হলেও বিপুল সংখ্যা ব্যক্তি টাকা খরচ করে পালিয়ে গেছেন।

     

    ব্রাহ্মণবাড়িয়া, আখাউড়া-আগরতলা সীমান্ত, সিলেটের জৈন্তাপুর সীমান্ত, ময়মনসিংহের ধোবাউড়া, শেরপুর, সাতক্ষীরা, রাজশাহী, কুষ্টিয়া, লালমনির হাট, খুলনার বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে পালিয়ে গিয়ে ভারতের কলকাতা, ত্রিপুরা, আগরতলা, আসাম ও মেঘালয় রাজ্যের বিভিন্ন শহরে অবস্থান নিয়েছেন।

     

    সীমান্ত পার হতে তারা বিপুল টাকা খরচ করছেন। সীমান্তের পুলিশ, বিজিবি, আওয়ামী লীগ এমনকি বিএনপির স্থানীয় প্রভাবশালী নেতাদের সহায়তায় গণহত্যাকারী অপরাধীরা ভারতে চলে যাচ্ছেনÑ এমন খবর গণমাধ্যমে প্রকাশ পাচ্ছে। পালাতে গিয়ে সীমান্তে কেউ কেউ বিজিবি-পুলিশ ও স্থানীয় জনতার হাতে ধরা পড়লেও বিপুল সংখ্যক বিতর্কিত নেতা সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে গিয়ে নতুন করে দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র শুরু করেছেন।

     

    প্রশ্ন হচ্ছে, বিতর্কিত ও বিভিন্ন থানায় খুনের মামলায় অভিযুক্ত আসামিদের পালিয়ে যাওয়ার সুযোগ পায় কেমন করে?

     

    ২১ আগস্ট আনন্দবাজার পত্রিকার খবরে বলা হয়েছে, অর্থের বিনিময়ে সীমান্ত পার হয়ে এসে ‘প্রভাবশালী’ বাংলাদেশিরা ভারতে আশ্রয় নিচ্ছে। কলকাতা থেকে প্রকাশিত পত্রিকাটির অনলাইন সংস্করণে প্রকাশিত প্রতিবেদনে দাবি করা হয়Ñ বাংলাদেশ থেকে ‘নিরাপদে’ ভারতে পৌঁছে দিতে একাধিক চক্র কাজ করছে। আশ্রয়প্রার্থী ব্যক্তির আর্থিক সঙ্গতি ও সামাজিক পরিচিতি বুঝে টাকা নিচ্ছে চক্র। সংবাদে বলা হয়, ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) ইতোমধ্যে চক্রের কয়েকজন সদস্যকে গ্রেফতার করেছে এবং বাকিদের আইনের আওতায় আনতে অভিযান চলছে। প্রভাবশালীদের কাছ থেকে মাথাপিছু এক লাখ রুপি করে দর হাঁকানো হয়।

    এ ছাড়া তারা যতদিন ভারতে ‘নিরাপদ আশ্রয়ে’ থাকবেন, ততদিন বিএসএফ ও পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের নজর এড়িয়ে থাকতে মাসে ১০ লাখ রুপি করে দিতে হবে।

    ৭ আগস্ট বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার বিজয়-পরবর্তী পরিস্থিতিতে কিছুু দুর্নীতিবাজ ও দুষ্কৃতকারী ব্যক্তি দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে।

    এ অবস্থায় কেউ যাতে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে না পারে, সে জন্য সীমান্তে বিজিবির টহল ও গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।

    সীমান্ত দিয়ে পালিয়ে যাওয়া রোধে তথ্য দিয়ে সহায়তা করার অনুরোধ জানিয়েছে বিজিবি।

    এদিকে সীমান্ত দিয়ে পালিয়ে যাওয়া আওয়ামী লীগ নেতা, বিতর্কিত পুলিশ কর্মকর্তা, আমলাকে সংগঠিত করার চেষ্টা করছে ভারত। গণমাধ্যমে খবর বের হয়েছে, ঢাকার কসাইখ্যাত হাসিনার আওয়ামী লীগের পুনর্বাসন প্রক্রিয়া ঠিক করছে দিল্লির শাসকরা।

    বাংলাদেশের রাজনীতিতে আওয়ামী লীগ আবার কিভাবে ফিরে আসতে পারে তা নিয়ে নয়া পরিকল্পনা শুরু করেছে দিল্লি। ২০ সেপ্টেম্বর ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক রুদ্ধদ্বার বৈঠকে এ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনাও হয়েছে।

    এতে ভারতের বাংলাদেশ বিষয়ক বিশেষজ্ঞ, সাংবাদিক, বর্তমান ও অবসরপ্রাপ্ত কূটনীতিক, অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশন (ওআরএফ), বিবেকানন্দ ফাউন্ডেশন ও ইনস্টিটিউট অব ডিফেন্স স্টাডিজ অ্যান্ড অ্যানালাইসিসের (আইডিএসএ) প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন।

    গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, দিল্লিতে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে মূল আলোচ্য বিষয় ছিলÑ ‘বাংলাদেশে চলমান ভারতীয় প্রকল্প ও রি-সেটেল আওয়ামী লীগ (আওয়ামী লীগের পুনর্বাসন)’। বৈঠকে বাংলাদেশে চলমান ভারতীয় প্রকল্পগুলোর সঠিক ও বাধাহীন বাস্তবায়নের ওপর ব্যাপক জোর দিতে বলা হয়।

    পাশাপাশি ভারতের সাথে শেখ হাসিনা সরকারের মধ্যকার হওয়া সমঝোতা স্মারকগুলো (এমওইউ) পুনর্বিবেচনা করা হলেও সম্পাদিত চুক্তিগুলো থেকে বর্তমান সরকার যেন সরে না যায় সেটি নিশ্চিত করার তাগিদ দেয়া হয়। রুদ্ধদ্বার ওই বৈঠকের ‘মিনিটস অব দ্য মিটিং’ জার্মানির বন-ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য মিরর এশিয়া প্রথমে প্রকাশ করে। অতঃপর বিভিন্ন গণমাধ্যমে সে খবর প্রকাশ করা হয়।

    ওই গণমাধ্যমের খবরে একটি সূত্রের বরাত দিয়ে জানানো হয়, সেখানে উপস্থিত একজন প্রতিনিধি জানান, তারা ধারণা করছেনÑ দুই থেকে তিন বছরের মধ্যে বাংলাদেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে বিএনপির ক্ষমতায় আসার সম্ভাবনা প্রবল।

    কিন্তু বিএনপি ঠিকই পাঁচ বছরের মধ্যে নানা অজনপ্রিয় কর্মকা-ে জড়িয়ে পড়বে। বাংলাদেশের দ্বি-দলীয় রাজনৈতিক বাস্তবতায় তখন জনগণের সমর্থন আওয়ামী লীগের দিকে ঘুরে যাবে। আলোচনায় ২০০৯ সালে শেখ হাসিনার ‘ভূমিধস’ জয়ের উদাহরণ টানা হয়।

    আওয়ামী লীগকে ভারতের পুনর্বাসন প্রকল্প নিয়ে ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেন, ‘ভারতের ত্রিপুরা, আসাম, মেঘালয় ও পশ্চিমবঙ্গে পলাতক আওয়ামী লীগ নেতারা ছড়িয়ে পড়েছে। সেখান থেকে আওয়ামী লীগকে সাংগঠনিকভাবে সক্রিয় করার চেষ্টা হচ্ছে।

    কারণ দিল্লিতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আওয়ামী লীগের পুনর্বাসনের পরিকল্পনা নিয়ে বৈঠক করেছে। সেখানে পরিকল্পনা হয়, আওয়ামী লীগের ব্যানার ব্যবহার না করেই দলকে সক্রিয় রাখা যায় কি-না।

    প্রশ্ন হচ্ছে, আওয়ামী লীগের এত বিপুল সংখ্যক বিতর্কিত নেতা ফৌজদারি অপরাধে অভিযুক্ত, পালিয়ে গেল কিভাবে? তারা কিভাবে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ভারতে গেল, কারা সীমান্ত পার হতে সহায়তা করল; তদন্ত করে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

     

    এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট শেখ মুজিবুর রহমান হত্যাকা-ের প্রতিবাদে আওয়ামী লীগ নেতারা গর্তে ঢুকে গেলেও আবদুল কাদের সিদ্দিকী প্রতিবাদ করেন এবং ভারতে পালিয়ে যান। অতপর ভারতের ‘র’ এর সহায়তায় তিনি সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তোলার চেষ্টা করেন।

     

    কিন্তু জিয়াউর রহমানের দৃঢ় নেতৃত্বে বাংলাদেশের সেনাবাহিনীর কাদের সিদ্দিকীর দেশবিরোধী অপচেষ্টা ঠেকিয়ে দেয়। অতপর কাদের সিদ্দিকী দীর্ঘদিন ভারতে বসবাস করে ১৯৯২ সালে দেশে ফেরার সুযোগ পান।

     

    বিজিবির অবস্থান তুলে ধরে ৩ অক্টোবর বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ৭ আগস্ট থেকে সীমান্ত পেরিয়ে পালানোর চেষ্টার সময় ২২ জনকে গ্রেফতার করেছে।

    ওই ২২ জনের মধ্যে উচ্চপদস্থ চারজন রয়েছেন। ভারতে সাথে বাংলাদেশের প্রায় চার হাজার ২০০ কিলোমিটার সীমান্ত।

    কোনো দালাল যদি অর্থের বিনিময়ে কাউকে সীমান্ত পার করে দিতে চায়, অনেক ক্ষেত্রে সেটি সম্ভব হতে পারে। তবে বিজিবির সব ধরনের চেষ্টা আছে।

    যখন জানা গেল, টাকার বিনিময়ে সীমান্ত পার করে দেয়া হচ্ছে, তখন সম্ভাব্য দালাল বা আশেপাশের এলাকাবাসীকে বলেছি, কেউ যদি চুক্তি করে টাকা দেয়, তা হলে বিজিবি দ্বিগুণ অর্থ পুরস্কার দেবে।

    তাদের পালানোর রোধ করে আইনের আওতায়, বিচারের আওতায় আনা আমাদের জাতীয় ও নৈতিক দায়িত্ব। বিগত সরকারের কোনো আলোচিত ব্যক্তিকে বিজিবির পক্ষ থেকে ‘আশ্রয়-প্রশ্রয়’ দেয়া হলে কোনো ছাড় দেয়া হবে না।

    এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পালানো নিয়ে আমারও প্রশ্ন, উনি কোন দিক দিয়ে গেলেন। সেটি যাওয়ার সময় তথ্য পেলে অবশ্যই তাকে আটক করা হতো।

    এর আগের দিন ২ অক্টোবর কারওয়ান বাজারের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক (মুখপাত্র) লে. কর্নেল মো. মুনীম ফেরদৌস বলেন, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ভারতে অবস্থানের বিষয়ে আমি কিছু জানি না। সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বৈধভাবে গেছে নাকি অবৈধভাবে গেছে সে সম্পর্কে র‌্যাবের কাছে কোনো তথ্য নেই। এখানে র‌্যাবের কোনো ধরনের উদাসীনতা বা গাফিলতির বিষয় নেই। গণমাধ্যমকর্মীরা জানতে চাইলে পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ মহাপরিদর্শক (চলতি দায়িত্বে) মো. শাহ আলম বলেন, আমি গণমাধ্যমে খবর দেখেছি, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ বেশ কয়েকজন কলকাতার একটি পার্কে দেখা গেছে। তারা কীভাবে গেছেন সে তথ্য ইমিগ্রেশন পুলিশে নেই।

     

    এতটুকু নিশ্চয়তা দিতে পারি, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ যাদের দেখা গেছে তারা কেউ ইমিগ্রেশন ক্রস করেননি। ইমিগ্রেশনে তাদের দেশত্যাগের কোনো তথ্য নেই। ইমিগ্রেশনে যেহেতু তথ্য নেই, অবশ্যই অবৈধ পথে গেছেন।

     

    বিতর্কিত নেতাদের সীমান্ত দিয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়া নিয়ে দেশজুড়ে চলছে সমালোচনা-বিতর্ক। যাদের নির্দেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নজিরবিহীন দমন-পীড়ন চালানো হয়েছে, গণহত্যা করা হয়েছে, ঢাকার রাজপথ রক্তে রঞ্জিত করা হয়েছে এবং যাদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা রয়েছে তারা সীমান্ত দিয়ে পালায় কিভাবে? দেশে এত বিপুল সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, গোয়েন্দা সংস্থা বিশেষ করে সীমান্তে বিজিবি থাকার পরও বিতর্কিত ব্যক্তিরা সীমান্ত দিয়ে পালালো?

    এ ছাড়া আওয়ামী লীগ নেতাদের পালাতে যারা সহায়তা করছে তাদের চিহ্নিত করে গ্রেফতার করা হচ্ছে না কেন? এ নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়াও নেটিজেনরা প্রশ্ন তুলেছেন, আওয়ামী লীগ নেতাদের পালানোর দায় কার?

    আরও খবর

    Sponsered content