• সুনামগঞ্জ

    জগন্নাথপুরের শংকরখালী নদীতে ডুবে রাজন মিয়া নামে এক যুবক নিখোঁজ

      কুলেন্দু শেখর দাস, সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি: ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ , ২:২২:৩৮ অনলাইন সংস্করণ

    সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার কুবাজপুর গ্রামে সুহেনা চৌধুরী নামে এক নারী তার দেবর ও ভাসুরদের যৌথ সহায় সম্পত্তি জাল দলিলের মাধ্যমে দখলে নিতে এক যুবককে শংকরখালী নদীর লেকের(ডোবা) পানিতে ফেলে হত্যা চেষ্টার খবর পাওয়া গেছে।

    লেকের পানিতে ডুবে নিখোঁজ যুবকটি নাম মোঃ রাজন মিয়া(২২)। সে কুবাজপুর গ্রামের আফরোজ মিয়ার ছেলে। শনিবার দুপুরে এ র্দূঘটনাটি ঘটে। খবর পেয়ে জগন্নাথপুর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লেকে(ডোবায় অভিযান পরিচালনা করে এখনো এই নিখোঁজ যুবকের সন্ধান মিলেনি।

    স্থানীয় ও একাধিক সূত্রে জানা যায়,কুবাজপুর গ্রামের মৃত নুর মিয়া চৌধুরীর ৫ ছেলে সন্তান রয়েছেন এবং সবাই তারা লন্ডন প্রবাসী । সন্তানরা হলেন বড় সন্তান শাহ শোভা চৌধুরী,শাহ শাবা চৌধুরী,৩নং- সন্তান মৃত শাহ কুতুব চৌধুরী,৪নং মৃত শাহনেওয়াজ চৌধুরী ও ৫নং শাহ ইদুজ্জা চৌধুরী।

    তাদের কুবাজপুর গ্রামে অনেক সহায় সম্পত্তি বোরো জমি, পুকুর ও ডোবা(লেক) রয়েছে। এই ৫ সন্তানের মধ্যে তাদের পিতা নুর মিয়া চৌধুরীর মৃত্যুর পরে প্রবাসীরা তাদের ৪ নম্বর ভাই শাহ নেওয়াজ চৌধুরীকে দেশের সহায় সম্পত্তি দেখেশুনে রাখার জন্য কুবাজপুর গ্রামের বাড়িতে পাঠিয়ে দেন। শাহ নেওয়াজ চৌধুরীর জীবদ্দশায় ৫ ভাইয়ের সম্পত্তি দেখাশোনা ঠিকমতোই চলছিল।

     

    কিন্তু শাহ নেওয়াজ চৌধুরীর মৃত্যুর পর তার স্ত্রী সুহেনা চৌধুরী কুবাজপুর গ্রামে তার বাবার বাড়ি হওয়ার সুবাদে সুহেনা চৌধুরী তার আপন ভাই রিজু মিয়া,গ্রামের এয়র মিয়ার ছেলে প্রভাবশালী খলিল চৌধুরী, সহোদর লুবন মিয়া ও ছাছির মিয়াকে নিয়ে প্রবাসীদের জায়গা জমি জাল দলিলের মাধ্যমে জোরপূর্বক দখল করতে শুরু করেছেন বলে জানা যায়।

     

    গত কয়েকদিন আগে সুহেনা চৌধুরী তার দেবর ও ভাসুরদের সহায় সম্পত্তি দখলে নিতে একটি সন্ত্রাসী বাহিনী তৈরী করেন এবং নামাংঙ্কিত ব্যক্তিদের মাধ্যমে জাল দলিল করে ইতিমধ্যে লেক (ডোবা ও কিছু জমি লীজের নামে দখল করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

     

    এই ঘটনার পূর্বে এই নিখোঁজ গরীবের সন্তান রাজন মিয়াকে খলির চৌধুরী বেদড়ক মারপিঠ করেছেন বলে স্থানীয় সূত্রে জানা যায়। সম্প্রতি লন্ডনে অবস্থানকারী সুহেনা চৌধুরীর দেবর ভাসুরগণ দেশে আসবেন এবং ঘরদরজা মেরামত ও সংস্কার করবেন বলে সুহেনাকে জানানো হয়। এতে সুহেনা দেশে আসতে সম্মতি প্রকাশ করলেও এই সুযোগে সুহেনা চৌধুরী ও তার ভাই রিজু মিয়া মিলে বাড়িতে রক্ষিত শতাধিক মন ধান,ঘরের আসববপত্র একটি ট্রাকে তুলে অন্যত্র সরিয়ে নেন।

     

    সুহেনা চৌধুরী এর পর থেকেই গত দেড়মাস নিখোঁজ ছিলেন বলে জানা যায়। এর পরই রাজন মিয়া নামে এই যুবকটিকে নিখোজেঁর একটি কাহিনী ঘটানো হয়। এই ঘটনার পর পরই খলিল চৌধুরীকে ঘটনাস্থল থেকে পালাতে সহযোগিতা করেন ছাতির মিয়া,এয়র মিয়া লুবন চৌধুরী ও নাইম মিয়া। এ ব্যাপারে খলিল চৌধুরীর (০১৭৩১৯৯৮৩৫৪) এই নম্বরে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও ফোনটি বন্ধ থাকায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

     

    এ ব্যাপারে জগন্নাথপুর থানার অফিসার ইনচাজর্ (ওসি) মোঃ আজিজুর রহমান বলেন,রাজন নামে এই ছেলেটি তার সাথে আরো তিনজনকে নিয়ে শংকরখালি নদী দিয়ে গরু পারাপারের সময় সে পানির ও সোতে ডুবে যায়। এ সময় খলিল চৌধুরী ছেলেটিকে উদ্ধারের চেষ্টার এক পর্যায়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাকে প্রথমে জগন্নাথপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেকে নিয়ে আসার পর আর অবস্থার অবনতি হলে তাকে সিলেট একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

    আর নিখোঁজ ছেলে রাজনের সন্ধানের জন্য সুনামগঞ্জ থেকে একটি ডুবুরি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে সন্ধ্যা পর্যন্ত অনুসন্ধান করলেও সন্ধ্যা হয়ে যাওয়ার কারণে আপাতত অভিযানটি স্থগিত করা হয়েছে বলে তিনি জানান।

    আরও খবর

    Sponsered content