• সারাদেশ

    হৃদয়কে গুলি করে চ্যাংদোলা করে নিয়ে যায় পুলিশ

      নিউজ ডেস্কঃ ১৭ আগস্ট ২০২৪ , ৪:৪৯:০৬ অনলাইন সংস্করণ

    বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর ৫ আগস্ট বিকালে গাজীপুরের কোনাবাড়িতে সাধারণ মানুষের সঙ্গে বিজয় মিছিলে অংশ নেন টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলার হেমনগর ডিগ্রি কলেজের এইচএসসির ছাত্র হৃদয়। তারপর সে নিখোঁজ হয়। বিভিন্ন হাসপাতাল ও মর্গে খোঁজাখুঁজি করেও তার সন্ধান মেলেনি। হৃদয় গোপালপুর উপজেলার আলমনগর মধ্যপাড়ার কৃষক লাল মিয়া ও রেহেনা বেগম দম্পতির একমাত্র ছেলে।

    এদিকে, সামাজিক যোগাযোগেরমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া এক ভিডিওতে দেখা যায়, ওইদিন বিকালে কাশিমপুর রোডের শরীফ জেনারেল হাসপাতাল (প্রা:) লি.-এর গেটসংলগ্ন স্থানে ১০-১২ জন পুলিশ একজনকে ঘেরাও করে বুকে বন্দুক ঠেকিয়ে প্রথমে গুলি করে। পরে তার দেহ চ্যাংদোলা করে নিয়ে যায়।

    হৃদয়ের পরিবারের দাবি, পরনের পোশাক ও প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনামতে নিশ্চিত হয়েছি যে, গুলিবিদ্ধ ছেলেটি আমাদের হৃদয়। কিন্তু অনেক খোঁজাখুঁজির পরও তার সন্ধান মেলেনি। হৃদয় ২০২২ সালে এসএসসি পাসের পর হেমনগর ডিগ্রি কলেজে ভর্তি হয়। পড়াশোনার পাশাপাশি দরিদ্রতার কারণে সে গাজীপুরের কোনাবাড়ীতে অটোরিকশা চালাত। তার বড় দুবোন রয়েছে। একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে দিশেহারা পরিবারের সদস্যরা। এলাকাতেও নেমেছে শোকের মাতম।

    হৃদয়ের ভগ্নিপতি মো. ইব্রাহিম হোসেন বলেন, আমরা দুজন এক রুম ভাড়া নিয়ে থাকতাম। মিছিলে গুলির ঘটনায় আমি কোনাবাড়ী মেট্রো থানা সংলগ্ন একটি বাসায় আশ্রয় নেই। সেখান থেকে দেখতে পাই ৪ জন পুলিশ গুলিবিদ্ধ একজনকে চ্যাংদোলা করে থানার সামনে নিয়ে একটি টেবিলের আড়ালে লুকিয়ে রাখছে। গুলিবিদ্ধ লোককে দেখতে হৃদয়ের মতো মনে হলেও পুলিশের গুলির ভয়ে তখন কাছে যেতে পারিনি। পরে শুনি রাত ৩টায় সব পুলিশ থানা থেকে চলে গেছে। এরপর বিভিন্ন হাসপাতাল ও মর্গে খোঁজাখুঁজি করেও তাকে পাওয়া যায়নি। ঘটনাস্থল থেকে হৃদয়ের পরনের লুঙ্গি পেয়েছি।

    আলমনগর ইউপির সাবেক সদস্য আ. হামিদ বলেন, ঘটনাস্থলের একটু দূরেই আমার দোকান রয়েছে। গুলির ঘটনার পর প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজনের বর্ণনায় নিশ্চিত হয়েছি ওটাই হৃদয়।

    অটোরিকশা গ্যারেজ মালিক হাফিজুর রহমান তপন বলেন, হৃদয় মিছিলে ছিল না। আমার গ্যারেজ থেকে বাসায় ফেরার সময় পুলিশের ধাওয়ায় দুই বিল্ডিং-এর মাঝে আশ্রয় নেয়। পুলিশ সেখান থেকে ধরে এনে গুলি করে। পরে আমার গ্যারেজের সামনে দিয়ে তাকে টেনে নিয়ে যায়। অনেকেই মোবাইলে সেই দৃশ্য ভিডিও করেন।

    এদিকে, ভিডিও দেখে হৃদয়ের বাবা, মা ও বোন চিৎকার করে হৃদয়কে জীবিত বা মৃত খুঁজে এনে দেওয়ার অনুরোধ করেন। মৃত হলে তাকে শহিদের মর্যাদা ও খুনিদের উপযুক্ত বিচার দাবি করেন।

    0Shares

    আরও খবর

    Sponsered content