• সারাদেশ

    বগুড়ায় শেখ হাসিনা ও কাদেরের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা ৩ জেলায় আসামি ৩০০

      নিউজ ডেস্কঃ ১৭ আগস্ট ২০২৪ , ৩:০৬:০৭ অনলাইন সংস্করণ

    ভারতে পলাতক আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবার দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের

    বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় বগুড়ায় এক স্কুলে শিক্ষককে হত্যার দায়ে ভারতে পলাতক আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবার দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।

    এ ছাড়া হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় বগুড়া, রাজশাহী ও পাবনায় প্রায় ৩০০ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

    বগুড়া অফিস জানায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় বগুড়ায় স্কুলশিক্ষক সেলিম হোসেনকে (৪০) হত্যার ঘটনায় আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ বগুড়ায় আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের ১০১ নেতাকর্মীর নামে মামলা করা হয়েছে। মামলায় অজ্ঞাত পরিচয় আরো ৩৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

     

    গত বৃহস্পতিবার রাতে নিহত সেলিম হোসেনের বাবা সেকেন্দার আলী বাদি হয়ে বগুড়া সদর থানায় মামলাটি করেন। মামলায় শেখ হাসিনা ও ওবায়দুল কাদেরকে হুকুমের আসামি করা হয়েছে। বগুড়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইহান ওলিউল্লাহ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

     

    মামলার বাকি ৯৯ জন আসামির মধ্যে উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন বগুড়া-৫ (ধুনট-শেরপুর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মজিবুর রহমান মজনু, বগুড়া-৬ (সদর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রাগেবুল আহসান রিপু, জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি টি জামান নিকেতা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুরুল আলম মোহন, সাগর কুমার রায়, এ কে এম আসাদুর রহমান দুলু, সাংগঠনিক সম্পাদক শাহাদৎ আলম ঝুনু, শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি রফি নেওয়াজ খান রবিন, সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল হাসান, বগুড়া জেলা যুবলীগের সভাপতি শুভাশীষ পোদ্দার লিটন, সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম ডাবলু, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি সাজেদুর রহমান শাহীন ওরফে ভিপি শাহীন, সাধারণ সম্পাদক জুলফিকার রহমান শান্ত, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সজীব সাহা, সাধারণ সম্পাদক আল মাহিদুল ইসলাম, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক দুই সভাপতি আল রাজি জুয়েল ও নাঈমুর রাজ্জাক তিতাস, সাবেক দুই সাধারণ সম্পাদক মাশরাফি হিরো ও অসীম কুমার রায়, শহর আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল মান্নান আকন্দ, বগুড়া চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি জেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ মাসুদুর রহমান মিলন, চেম্বারের সহসভাপতি ও সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাফুজুল ইসলাম রাজ, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু সুফিয়ান শফিক।

    মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, গত ৪ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা সরকার পতনের এক দফা আন্দোলনের দিন বগুড়া শহরের সাতমাথা এলাকায় শিক্ষক সেলিম হোসেনকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা করা হয়। নিহত সেলিম হোসেনের বাড়ি বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার পীরব ইউনিয়নের পালিকান্দা গ্রামে। তিনি বগুড়া সদরের ইসলামপুর হরিগাড়ীতে বসবাস করতেন। তিনি কাহালু উপজেলার মুরইল লাইট হাউজ স্কুলের সহকারী শিক্ষক ছিলেন।

    এ দিকে বগুড়া জেলা বিএনপির অফিস ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় সদর থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলায় জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক এমপি মজিবর রহমান মজনু, সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক এমপি রাগেবুল আহসান রিপুসহ ৮২ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো অনেক আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী আসামি রয়েছেন। পুলিশ একজনকে গ্রেফতার করেছে।

    জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলী আজগর তালুকদার হেনা জানান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গত ১৬ জুলাই রাত ৮টায় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা শহরের নবাববাড়ি সড়কে জেলা বিএনপি অফিসে হামলা চালান। তারা অফিসের আসবাব ভাঙচুর করে অগ্নিসংযোগ করে।

    এসব ঘটনায় গত বুধবার রাতে বগুড়া সদর থানায় আওয়ামী লীগের সভাপতি মজিবর রহমান মজনু সাধারণ সম্পাদক রাগেবুল আহসান রিপুসহ ৮২ জনের নামে মামলাটি করেছেন জেলা বিএনপির সহদফতর সম্পাদক রহিমা খাতুন মেরী।

    রাজশাহী ব্যুরো জানায়, রাজশাহীতে বাড়ি ভাঙচুর, লুটপাট ও গুলিবর্ষণের অভিযোগে আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের ২১ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে।

     

    বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে নগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানায় মামলাটি দায়ের করা হয়। বোয়ালিয়া থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এবং রাজশাহী সিটি করপোরেশনের (রাসিক) ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর রবিউল আলম মিলু বাদি হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের আরো অন্তত ৫০ জন অজ্ঞাত নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে।

    মামলায় আসামিদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকজন হলেন রাসিকের প্যানেল মেয়র মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আব্দুল মোমিন, রাজশাহী মহানগর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক তৌরিদ আল মাসুদ রনি, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রায়হানুল ইসলাম রয়েল, বোয়ালিয়া থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি আতিকুর রহমান কালু ও রাসিকের ১৯ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর শাহ মখদুম থানা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক তৌহিদুল হক সুমন।

     

    বিএনপি নেতা রবিউল আলম মিলু মামলার এজাহারে উল্লেখ করেন, গত ২২ জুলাই আসামিরা দুপুর ১২টার দিকে দেশীয় অস্ত্র হাঁসুয়া, চাইনিজ কুড়াল, রামদা, জিআই পাইপ, ধারাল চাকু ও আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে তার ষষ্ঠীতলার বাড়িতে অতর্কিত হামলা চালায়।

    ঈশ্বরদী (পাবনা) সংবাদদাতা জানান, পাবনার ঈশ্বরদীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মিছিলে হামলার ঘটনায় পাবনা-৪ আসনের (ঈশ্বরদী-আটঘরিয়া) সাবেক এমপি গালিবুর রহমান শরীফকে প্রধান করে আওয়ামী লীগের ৭১ জন নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করে অস্ত্র ও হত্যার চেষ্টা আইনে মামলা করা হয়েছে।

     

    গত বৃহস্পতিবার রাতে ঈশ্বরদী পৌর এলাকার শৈলপাড়ার মৃত আব্দুর রশিদের ছেলে গুলিবিদ্ধ নজরুল ইসলাম (৪৪) বাদি হয়ে এ মামলাটি দায়ের করেন। এ মামলায় অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে ৮০-৯০ জনকে। শুক্রবার দুপুরে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) মো: মনিরুল ইসলাম।

    এ মামলায় আসামিদের মধ্যে রয়েছেন এমপি গালিবুর রহমান শরীফের ছোটভাই উপজেলা যুবলীগের সভাপতি শিরহান শরীফ তমাল, ঈশ্বরদী পৌরসভার মেয়র মো: ইছাহক আলী মালিথা, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এমদাদুল হক রানা সরদার, ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম খান, পৌর সভার প্যানেল মেয়র আবুল হাশেম, উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মকলেছুর রহমান মিন্টু, পৌরসভার কাউন্সিলর আব্দুল লতিফ মিন্টু, পৌর যুবলীগের সভাপতি আলাউদ্দিন বিপ্লব, পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি আবির হাসান শৈশব, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি রকিবুল হাসান রনি, এমপি গালিবের বোনের ছেলে ইথার ও উচ্ছ্বাস, হাবিবুল ইসলাম, স্বজন সরদারসহ ৭১ নেতাকর্মী।

    আরও খবর

    Sponsered content