নিউজ ডেস্কঃ ৪ আগস্ট ২০২৪ , ১০:১০:২৪ অনলাইন সংস্করণ
নরসিংদীর মাধবদীতে আন্দোলনকারীদের দিকে গুলি ছোড়ার পর ধাওয়া দিয়ে আওয়ামী লীগের ছয় নেতা–কর্মীকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে।
আজ রোববার বেলা দেড়টার কাছাকাছি সময়ে সদর উপজেলার মাধবদী পৌরসভাসংলগ্ন মসজিদের অজুখানায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত ছয়জন হলেন চরদিঘলদী ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন (শাহীন), সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেনের ছোট ভাই শহর মৎস্যজীবী লীগের সভাপতি দেলোয়ার হোসেন (৪৮), জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সভাপতি মনিরুজ্জামান ভূঁইয়া (৪২), মহিষাশুড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল জলিল (৩৫), আওয়ামী লীগ কর্মী ওমর ফারুক (৩৫) ও কামাল হোসেন (৩৫)।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় লোকজন জানান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে আজ দুপুর ১২টা থেকে কয়েক হাজার বিক্ষোভকারী ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করেন।
বেলা একটার দিকে সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেনের নেতৃত্বে স্থানীয় আওয়ামী লীগের শতাধিক নেতা–কর্মী সেখানে যান। আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মীরা তাঁদের আন্দোলনস্থল ত্যাগ করতে বলেন, কিন্তু তাঁরা রাজি হচ্ছিলেন না। পরে ক্ষমতাসীন দলের নেতা–কর্মীরা বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে গুলি ছুড়লে অন্তত চারজন গুলিবিদ্ধ হন। তাঁদের মধ্যে আলামিন (২৫) ও সুমন (৩০) নামের দুজনকে নরসিংদী সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। অন্য দুজনকে স্থানীয় বেসরকারি হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
এ সময় বিক্ষোভ থেকে লাঠিসোঁটা হাতে ক্ষমতাসীন দলের নেতা–কর্মীদের ধাওয়া দেওয়ার ঘটনা ঘটে। তখন নেতা–কর্মীরা পৌরসভা এলাকার বড় মসজিদের ভেতরে ঢুকে পড়েন। পরে মসজিদের ভেতরে অজুখানায় অন্তত ১০ জনকে উপর্যুপরি মারধর করেন আন্দোলনকারীরা।
এতে চরদিঘলদী ইউপির চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন, শহর মৎস্যজীবী লীগের সভাপতি দেলোয়ার হোসেন, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সভাপতি মনিরুজ্জামান ভূঁইয়া, স্থানীয় শ্রমিক লীগ নেতা আনিসুর রহমানসহ ছয়জন ঘটনাস্থলেই নিহত হন।
বেলা দেড়টায় হত্যাকাণ্ডের পর থেকে সন্ধ্যা ছয়টায় এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত নিহত ওই ছয়জনের লাশ সেখানেই পড়ে ছিল। এ সময় পর্যন্ত কোনো পুলিশ সদস্যকেও ঘটনাস্থলে আসতে দেখা যায়নি।
সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেনের ছোট ভাই জাকারিয়া হোসেন বলেন, তাঁরা শান্তিপূর্ণ অবস্থানে ছিলেন। এ সময় আন্দোলনকারীদের সঙ্গে স্থানীয় বিএনপি নেতা–কর্মীদের ধাওয়ায় তাঁদের লোকজন মসজিদের ভেতরে ঢুকে গিয়েছিলেন। সেখানে উপর্যুপরি পিটিয়ে তাঁর ছোট ভাইসহ ছয়জনকে হত্যা করেছেন তাঁরা। আহত অন্তত চারজনকে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
মাধবদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ কামরুজ্জামান বলেন, মসজিদের অজুখানায় ছয়জনকে উপর্যুপরি পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। নিহত ব্যক্তিরা আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা–কর্মী।
আন্দোলনকারীদের সঙ্গে বিএনপির লোকজন একত্র হয়ে এ হত্যাকাণ্ড চালিয়েছেন। নিহত ব্যক্তিদের নাম-পরিচয় উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।