ডেস্ক রিপোর্টঃ ৮ আগস্ট ২০২৪ , ১২:২৩:০৮ অনলাইন সংস্করণ
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের শপথ আজ বৃহস্পতিবার রাত ৮টায় অনুষ্ঠিত হতে পারে বলে জানিয়েছেন সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। বঙ্গভবনে শপথ অনুষ্ঠানের জন্য সব প্রস্তুতি নিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। এর মধ্যে উপদেষ্টাদের বাসভবন প্রস্তুতের জন্য গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। প্রয়োজনীয় সংখ্যক গাড়িও প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এ দিকে এই সরকারে ছাত্র-শিক্ষক-আলেম-সিভিল সোসাইটিসহ সব পেশার প্রতিনিধির অংশগ্রহণ থাকবে বলে প্রত্যাশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
গতকাল বুধবার সেনাসদরে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে সেনাপ্রধান বলেন, ‘ড. ইউনূস বৃহস্পতিবার দেশে আসবেন। আমি তাকে বিমানবন্দরে রিসিভ করব। আশা কারি ওই দিন রাত ৮টায় অন্তর্বর্তী সরকারের শপথ অনুষ্ঠিত হবে।
এ সরকারের সদস্য হবে ১৫ জন। তবে দু-একজন বাড়তেও পারে। এ বিষয়ে ওই দিনই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।
সেনাপ্রধান বলেন, ড. ইউনূসকে সব ধরনের সহযোগিতা করবে সশস্ত্রবাহিনী। আমরা আশা করি সবার চেষ্টায় আমরা সুন্দর ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যেতে পারব। শিক্ষার্থীদের প্রশংসা করে তিনি বলেন, আপনারা দেখেন শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন সরকারি স্থাপনা পরিষ্কার করছেন। তারা ট্রাফিক পুলিশ না থাকায় সড়কে ট্রাফিকের দায়িত্বও পালন করছেন। আমি তাদের সাধুবাদ জানাই। আশা করি আগামীতেও তারা এ দায়িত্ব পালন করবেন। আমাদের কাজে সহযোগিতা করবেন।
পুলিশ পুনর্গঠনের বিষয়ে ওয়াকার-উজ-জামান বলেন, পুলিশ বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বাহিনী। এরই মধ্যে এ বাহিনী পুনর্গঠনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। আশা করি তারা মনোবল ফিরিয়ে এনে একটি পেশাদারি বাহিনী হিসেবে নিজেদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করবে।
এ দিকে অন্তর্বর্তীকালীন এই সরকারে কারা থাকছেন এমনটি নিশ্চিত করতে পারছে না কেউ। প্রতিটি স্টেক হোল্ডারের কাছ থেকে পৃথক পৃথক তালিকা নেয়া হচ্ছে। আজ যেকোনো সময় এই তালিকা চূড়ান্ত করে শপথের জন্য আমন্ত্রণ জানানো হবে।
সংশ্লিষ্টরা বলছে, অন্তর্বর্তীকালীন এই সরকারে সব পেশাজীবীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা হবে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দু-একজন সমন্বয়কের অংশগ্রহণ এই সরকারে থাকতে পারে। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, আইনজীবী, সিভিল সোসাইটি, আলেম, সাংস্কৃতিকব্যক্তিত্ব অর্থনীতিবিদসহ সব পেশার অংশগ্রহণ থাকবে এই সরকারে।
উপদেষ্টাদের থাকার জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক বাসভবন প্রস্তুতের জন্য গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সরকার গঠন ও রাষ্ট্রাচার বিভাগের সিনিয়র সহকারী সচিব স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়, প্রধান উপদেষ্টা বা উপদেষ্টাদের ব্যবহারার্থে প্রয়োজনীয় সংখ্যক বাসভবন প্রস্তুত রাখতে নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।
গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, সদ্য বিদায়ী সরকারের ৭ জন নতুন করে গত ১ মার্চ মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন। তাদের জন্য বাসভবন প্রস্তুত করা হয়েছিল। এসব বাসভবন এখন প্রস্তুত রয়েছে। এছাড়াও বাকি কয়েকজন সাবেক মন্ত্রীর বাসভবন ছাড়তে চিঠি দেয়া হয়েছে। সেগুলোও শিগগিরই প্রস্তুত করা হবে।
সরকারি যানবাহন অধিদফতর সূত্র জানায়, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা এবং উপদেষ্টাদের জন্য ১৫ থেকে ২০টি গাড়ি ড্রাইভারসহ প্রস্তুত রাখা হয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের নির্দেশ অনুযায়ী জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এসব গাড়ি প্রস্তুত রেখেছে। প্রধান উপদেষ্টার জন্য বিএমডব্লিউ এবং উপদেষ্টাদের জন্য ক্যামরি হাইব্রিড মডেলের গাড়ির চালকের নাম, মোবাইল নম্বরসহ সরকারি পরিবহন পুল থেকে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠানো হয়েছে।
সরকারি যানবাহন অধিদফতরের পরিবহন কমিশনার (অতিরিক্ত সচিব) আবুল হাসনাত হুমায়ুন কবীর বলেন, আমাদের কাছে প্রয়োজনীয় সংখ্যক গাড়ি চাওয়া হয়েছে। আমরা প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি সেরে রেখেছি।
এর আগে গত মঙ্গলবার দুপুরে রাষ্ট্রপতি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ ভেঙে দেন। রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশের সংবিধানের ৪৮(৩) অনুচ্ছেদের অধীন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ ভেঙে দিয়েছেন। এর মধ্য দিয়ে সংসদ গঠনের মাত্র পাঁচ মাসের মাথায় তা বিলুপ্ত হলো।