ডেস্ক রিপোর্টঃ ৩০ জুলাই ২০২৪ , ৩:০৩:২১ অনলাইন সংস্করণ
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন বিভিন্ন মোড়ে আওয়ামী লীগের অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের দেশীয় অস্ত্রহাতে মহড়ার পাশাপাশি আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের মারধর করতে দেখা গেছে। গতকাল সোমবার বেলা ২টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত স্থানীয় ও মহানগর আওয়ামী লীগের পাঁচশতাধিক নেতাকর্মী এ মহড়ায় অংশ নেয়।
সরেজমিন দেখা যায়, কুবিসংলগ্ন ছাত্র আন্দোলন চত্বরে (আনসার ক্যাম্প মোড়) শুরুতে ২৪নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফার নেতৃত্বে স্থানীয় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী অংশ নেয়। এরপর কুমিল্লা মহানগর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সংসদ সদস্য বাহাউদ্দীন বাহারের প্রায় দুই শতাধিক নেতাকর্মী যুক্ত হয়। তাদের অধিকাংশের হাতে রড, লাঠি, স্টিলের বেস বল ব্যাট, রামদা ও কারো হাতে প্রকাশ্যে পিস্তল নিয়ে অবস্থান করতে দেখা যায়।
এ সময় উপস্থিত নেতাকর্মীদের কুমিল্লা শহর থেকে আগত শিক্ষার্থীদের ছাত্র আন্দোলন চত্বর, কোটবাড়ি মোড়, কোটবাড়ি বিশ্বরোডসহ বিভিন্ন স্থানে মোবাইল ফোন চেক করার পাশাপাশি চড় থাপ্পড় দিতেও দেখা যায়।
অবস্থান কর্মসূচির শুরুর দিকে ২৪নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সেক্রেটারি গোলাম মোস্তফা নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, এখন আন্দোলনকারী মানেই জামাত শিবির। দেখলেই চড় থাপ্পড় দিবা। এরপর থেকে বিভিন্ন স্কুল কলেজের প্রায় ১৫-২০ জন শিক্ষার্থীকে মারধর ও চড় থাপ্পড়ের পাশাপাশি প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থীকে তারা (আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগ) ফিরিয়ে দেন।
এ বিষয়ে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ১৫তম ব্যাচের শিক্ষার্থী মারুফ শেখ বলেন, দুপুর ২টার দিকে আমি শহর থেকে সিএনজি করে আসছিলাম ক্যাম্পাসে। এই সময় গাড়ি আনসারক্যাম্প পর্যন্ত আসলে ছাত্রলীগের কিছু ছেলে আমাকে ও সিএনজিতে থাকা বাকিদের নামিয়ে চড় থাপ্পড় শুরু করে। আমি যখন বলি আমি বন্ধুর বাসায় যাচ্ছি তখন আমাকে আবার গাড়িতে তুলে বলে শহরে চলে যেতে।
আইন বিভাগের ১১তম ব্যাচের শিক্ষার্থী সাইফুল ইসলাম বলেন, শহর থেকে আসার পথে জাদুঘরের সামনে ছাত্রলীগ আমাদের অটোরিকশা থামিয়ে দেয়, তারা বলে আন্দোলনকারী থাকলে এদের ধর, পরে কলার ধরে আমাকে অটো থেকে টেনেহিঁচড়ে নামিয়ে নেয়। তারা আমাকে মারার জন্য লাঠি নিয়ে আসে, সাংবাদিক আসতে দেখলে ওরা দ্রুত লাঠিগুলো ফেলে দেয়।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিক সমিতির সদস্যরা মারধরের ভিডিও করতে গেলে মহানগর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা দেশীয় অস্ত্র হাতে তেড়ে আসার পাশাপাশি হেনস্তা করেন।
এ দিকে মোড়ে মোড়ে মারধরের পরও কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় ও আশপাশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে অবস্থান নিয়ে স্লোগান দিতে থাকেন।