আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ ৩১ জুলাই ২০২৪ , ১:৫২:৪৮ অনলাইন সংস্করণ
ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসের রাজনৈতিক প্রধান ইসমাইল হানিয়ার ওপর গভীর রাতে আকাশপথে হামলা হয়েছিল। তেহরানে যে ভবনে অবস্থান করছিলেন হানিয়া, সেখানে এই হামলা হয়। এতে হামাস প্রধান এবং তার এক দেহরক্ষী নিহত হন।
মঙ্গলবার ইরানের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ানের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে অংশ নিতে তেহরান গিয়েছিলেন হানিয়া।
তিনি রাতে উত্তর তেহরানের একটি বিশেষ বিশেষ ভবনে অবস্থান করছিলেন। ভবনটি সামরিক বাহিনীর বর্ষিয়ান কর্মকর্তারা বাস করেন।
ইরানি মিডিয়ার খবরে জানা গেছে, হামলাটি হয় রাত ২টায় (মঙ্গলবার জিএমটি সময় ২২:৩০-এ)। খবরে বলা হয়, একটি ‘এয়ারবোর্ন গাইডেড প্রজেক্টাইল’ সেখানে আঘাত হানে।
এই হামলা ইরানি নিরাপত্তার ত্রুটি আবারো প্রকটভাবে তুলে ধরেছে। খোদ রাজধানীর সুরক্ষিত স্থানে এভাবে হামলা চালানো তাদের নিরাপত্তায় ত্রুটি থাকার বিষয়টি আবারো ফুটে ওঠেছে। এর আগেও পরমাণু বিজ্ঞানীসহ কয়েকজনকে হত্যা করা হয়েছে।
বুধবার এক বিবৃতিতে হামাস এই হামলার জন্য ইসরাইলকে দায়ী করেছে। তারা জানায়, ইরানের রাজধানী তেহরানে তার বাসস্থানে ‘জায়নবাদী গুপ্ত হামলায়’ এ ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছে তারা।
ইসমাইল আবদেল সালাম হানিয়ার ডাক নাম আবু আল-আবদ। তিনি জন্মেছিলেন ফিলিস্তিনি শরণার্থী শিবিরে। তিনি হামাস আন্দোলনের রাজনৈতিক ব্যুরোর প্রধান এবং ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষ সরকারের দশম প্রধানমন্ত্রী ছিলেন।
ইসরাইল ১৯৮৯ সালে তাকে তিন বছর বন্দী করে রাখে। এরপর তাকে মারজ আল-জুহুর নামের ইসরাইল এবং লেবাননের মধ্যকার একটি নো-ম্যানস-ল্যান্ডে নির্বাসিত করা হয়।
সেখানে তিনি ১৯৯২ সালে বেশ কয়েকজন হামাস নেতার সাথে অনিশ্চিত পরিস্থিতিতে একটি পুরো বছর কাটিয়েছিলেন।
নির্বাসনে থাকার পর তিনি গাজায় ফিরে আসেন এবং ১৯৯৭ সালে হামাস আন্দোলনের আধ্যাত্মিক নেতা শেখ আহমেদ ইয়াসিনের অফিসের প্রধান হিসেবে নিযুক্ত হন, যা তার অবস্থানকে আরো শক্তিশালী করে।
২০০৬ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি হামাস তাকে ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষের প্রধানমন্ত্রী মনোনীত করে এবং একই মাসের ২০ তারিখ তাকে নিযুক্ত করা হয়।
এক বছর পর ফিলিস্তিনের জাতীয় কর্তৃপক্ষের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস হানিয়াকে তার পদ থেকে বরখাস্ত করেন। কারণ, ইজ আল-দিন আল-কাসাম ব্রিগেডস গাজা উপত্যকার নিয়ন্ত্রণ নেয়ার এক সপ্তাহের মধ্যে আব্বাসের ফাতাহ আন্দোলনের প্রতিনিধিদের বহিষ্কার করে। সেই সহিংসতায় অনেকে মারা যান।
হানিয়া এর পর বেশ কয়েকবার ফাতাহ আন্দোলনের সাথে সমঝোতার আহ্বান জানিয়েছিলেন।
২০১৭ সালের ৬ মে থেকে তিনি হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরোর প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন।
সূত্র : আল জাজিরা ও বিবিসি