দোয়ারা বাজার প্রতিনিধিঃ ২৯ এপ্রিল ২০২৪ , ১:৪৩:০২ অনলাইন সংস্করণ
বোরো ধান কাটার মধ্য দিয়ে বৈশাখ শুরু হয় সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার অঞ্চলে। কিন্তু প্রতিদিন থেমে থেমে শিলাবৃষ্টি হচ্ছে। আকাশে কালো মেঘ আভাস দিচ্ছে ভারী বৃষ্টির।
উজানে ভারতের মেঘালয়, সেখানেও শুরু হয়েছে তুমুল বৃষ্টি। নদী আসতে শুরু করেছে উজানের পানি। উজান আর ভাটির বৃষ্টি মিলে মে মাসের ৩ তারিখের মধ্যে হাওরে হঠাৎ বন্যা শুরু হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর।
সতর্ক বাণী দেয়া হয়েছে ৩ মের মধ্যে হাওরের সব ধান কেটে ফেলার।
জানা গেছে, সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার হাওরগুলোর পানি দেরিতে নামায়, ধানও রোপণ হয়েছে দেরিতে। ফলে এপ্রিল মাসের শেষ দিকেও হাওরের অর্ধেকের বেশি ধান পাকেনি। উপজেলার কয়েকটি এলাকায় বিচ্ছিন্নভাবে ধান কাটা শুরু হয়েছে।
সরেজমিনে উপজেলা সদরের কালিউড়ি হাওর, টেবলাই, লামাসানিয়া, পরম-শরিফপুর হাওর, বাংলাবাজার ইউনিয়নের পালকাপন, উরুরগাঁও, জাহাঙ্গীর গাঁও, ঘিলাতলী, উস্তুঙ্গেরগাঁও, নরসিংপুর ইউনিয়নের বৃটিশ, শ্রিপুর, শ্যামারগাঁও, তেরাপুর, বালিউড়া, নেতরছৈই, খাইরগাঁও-দ্বীনেরটুক, রহিমেরপাড়া এলাকার ছোট-বড় হাওরগুলোতে এখনো ধান পাকেনি।
এছাড়া বোগলাবাজার ইউনিয়ন, লক্ষ্মীপুর, সুরমা, দোহালিয়া, পাণ্ডারগাঁও, মান্নারগাঁওসহ নয় ইউনিয়নের বেশিভাগ জমি এখনো ধান কাটার উপযোগী হয়নি। ফলে বন্যার শঙ্কায় ধান সংগ্রহ নিয়ে দুশ্চিন্তায় উপজেলার কৃষকরা।
এদিকে আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে, মে মাসের ৩ থেকে ৮ তারিখ পর্যন্ত দেশব্যাপী ব্যাপক কাল বৈশাখী ঝড়ের আশঙ্কা করা যাচ্ছে। সিলেট বিভাগে টানা ভারী বৃষ্টিপাত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এতে সিলেট বিভাগের প্রতিটি হাওর পাহাড়ি ঢলে তলিয়ে যাওয়ার ৭০ থেকে ৮০ ভাগ শঙ্কা রয়েছে। মে মাসের ৩ তারিখের মধ্যেই হাওর এলাকার কৃষকদের ধান কেটে ঘরে তুলার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
উপজেলার সদরের টেবলাই এলাকার কৃষক আবুল হাসেম জানান, দোয়ারা সদর ইউনিয়নে ধান চাষের বেশিভাগ হাওর নিচু। হাওরের পানি শুকানোর পর জমিকে ধান চাষের উপযোগী করা হয়। যার ফলে প্রতিবছর বন্যার পানিতে তলিয়ে যাওয়ার শঙ্কা নিয়ে ধান কাটে কৃষকরা।
দোয়ারাবাজার উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শেখ মোহাম্মদ মহসিন জানান, চলতি মৌসুমে দোয়ারাবাজারে ১২ হাজার ৯০০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষ করা হয়েছে। সেখান থেকে এ বছর ৬৪ হাজার ৫০০ টন ধান উৎপাদিত হবে। ধানের বাজার দর হিসাবে প্রায় চার কোটি টাকার ধান এ বছর ঘরে তুলবে কৃষকরা।
তবে রোপন করা ধান ঘরে তুলতে পারলেই এ লক্ষমাত্রা পূরণ সম্ভব হবে।