• মৌলভীবাজার

    কালবৈশাখী ঝড়ে লন্ডভন্ড শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জ

    ৫০ হাজার গ্রাহক বিদ্যুৎ বিছিন্ন

      ডেস্ক রিপোর্ট: ২৯ এপ্রিল ২০২৪ , ১:২৯:৩৬ অনলাইন সংস্করণ

    মৌলভীবাজারে স্বস্থির বৃষ্টি হলেও শ্রীমঙ্গল ও কমলগঞ্জ উপজেলায় কালবৈশাখীর তাণ্ডবে লন্ডভন্ড হয়ে গেছে দু’টি উপজেলার তিনটি ইউনিয়ন। শ্রীমঙ্গল সদর, কালাপুর ও কমলগঞ্জ সদর ইউনিয়ন।

     

    মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল ও কমলগঞ্জ উপজেলায় বয়ে যাওয়া আকস্মিক কালবৈশাখী ঝড়ের তাণ্ডবে বহু গাছপালা বাড়িঘর বিদ্যুৎ লাইন লন্ডভন্ড হয়ে গেছে। এতে আক্রান্ত এলাকায় ব্যপক ক্ষতি হয়েছে। বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে পড়ে ও গাছ উপড়ে পড়ায় ঢাকা-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়কসহ অভ্যন্তরীণ অনেক সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিল। এ পর্যন্ত ৫০ হাজার গ্রাহক বিদ্যুৎ বিছিন্ন রয়েছেন।

     

    রোববার (২৮ এপ্রিল) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে শুরু হয় এই ঝড়। এতে ভেঙে পড়েছে অসংখ্য বৈদ্যুতিক খুঁটি ও বড় বড় গাছ। বিকেল সাড়ে ৪টা থেকে ৫টা পর্যন্ত আধা ঘণ্টাব্যাপী এই ঝড় বয়ে যায়। ঝড়ের পাশাপাশি অল্প পরিমাণে শিলাবৃষ্টিও হয়েছে, শিলাবৃষ্টি ও ঝড়ে হাওরের বোরো ফসল ও সবজিরও ক্ষতি হয়েছে।

    জানা গেছে, উপজেলা শহর ও শহরতলীর বিভিন্ন স্থানে গাছ উপড়ে সড়কে পড়ে রয়েছে। বিভিন্ন এলাকায় বৈদ্যুতিক তার ছিঁড়ে মাটিতে পড়ে আছে।

    20 (3)

    শহরের পূর্বাশা এলাকার বাসিন্দা রুপক দত্ত চৌধুরী জানান, ঝড়ে পূর্বাশায় ঘরবাড়ির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বড় বড় গাছ ভেঙে পড়েছে। এছাড়া বিদ্যুতের খুঁটি, ট্রান্সফরমারের ওপর গাছ পড়ে তা ভেঙে গেছে। শহরের বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সাইনবোর্ড ও টিনের চাল ঝড়ে উড়ে গেছে। কোনো কোনোস্থানে টিনের চালের ওপর গাছ ভেঙে পড়েছে।

    শ্রীমঙ্গল আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, ঝড়ের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৮৯ কিলোমিটার। ঝড়ের পিক টাইমের স্থায়িত্ব ছিল ৬ মিনিটের মত।

    22 (2)

    শ্রীমঙ্গল কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-সহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা রকেন্দ্র শর্মা জানান,‘হঠাৎ কালবৈশাখী ঝড় ও অল্প শিলাবৃষ্টি হয়েছে। ক্ষয় ক্ষতির বিষয়টি এখন বলা যাচ্ছে না। আমরা মাঠপর্যায় থেকে তথ্য সংগ্রহ করে বলতে পারব।’

    এ দিকে আকষ্মিক কালবৈশাখীর তাণ্ডবে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে শতাধিক গাছ বিধ্বস্ত হয়েছে। রেলপথের ওপর ৪০টি গাছ ভেঙ্গে পড়েছে। এতে বিকেল ৫টা ২০ মিনিট থেকে সিলেটের সাথে সারাদেশের ট্রেন চলাচল ২ ঘণ্টা বন্ধ ছিল। পাশাপাশি লাউয়াছড়ার ভেতর দিয়ে যাওয়া শ্রীমঙ্গল শমসেরনগর সড়ক বন্ধ ছিল। প্রবল কালবৈশাখী ঝড়ে শ্রীমঙ্গল ও কমলগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়েছে।
    রোববার বিকেল সাড়ে ৪টায় দু’উপজেলার মধ্যদিয়ে কালবৈশাখি ঝড় বয়ে যায়।

    23

    স্থানীয়রা জানান, প্রচণ্ড কালবৈশাখী ঝড়ে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের ব্যাপক গাছগাছালি বিধ্বস্ত হয়েছে। রেলপথ ও সড়কপথে অসংখ্য গাছগাছালি ভেঙ্গে পড়েছে। এছাড়া কমলগঞ্জ উপজেলার মাধবপুর ও আদমপুর ইউনিয়নের কয়েকটি এলাকায়ও ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়েছে। গাছ ভেঙ্গে পড়ায় বিকেল ৫টা ২০ মিনিট থেকে সিলেটের সাথে সারাদেশের ট্রেন যোগাযোগ বন্ধ ছিল। সিলেটগামী জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস ট্রেন বিকেল ৫টা ২০ মিনিট থেকে শ্রীমঙ্গল স্টেশনে এবং ঢাকাগামী পারাবত এক্সপ্রেস ট্রেন বিকেল ৫টা ৪০ মিনিট থেকে ভানুগাছ স্টেশনে আটকা পড়েছে। রেলওয়ের কর্মী ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা রেলপথ থেকে ভেঙ্গে পড়া গাছ সরিয়ে সন্ধ্যা ৭টা ৪০মিনিটে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়।

    ভানুগাছ রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার কবির আহমদ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের ভেতরে রেলপথে ৪০টি গাছ ভেঙ্গে পড়েছে। গাছ সরিয়ে সন্ধ্যা ৭টা ৪০ মিনিটে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়।

    সূত্রঃ নয়াদিগন্ত।

    আরও খবর

    Sponsered content