ভারতীয়দের রুশ সেনাবাহিনীতে যোগদান স্বীকার

চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে রাশিয়ায় সেনা বাহিনীতে যোগ দেয়ানোর ঘটনা স্বীকার করে নিল ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। শুক্রবার ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তরফে জারি করা একটি বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই রুশ সরকারের সাথে আলোচনা করা হয়েছে এবং ভারতীয় নাগরিকদের অবিলম্বে রাশিয়ার সেনাবাহিনী থেকে মুক্তি দেয়ার দাবি জানানো হয়েছে।

ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে যারা তাদের নিয়োগ করেছিলেন ওইসব এজেন্টের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। একাধিক শহরে তল্লাশি চালিয়ে একটি বড় মানব পাচারের গ্যাংকে পাকড়াও করা হয়েছে এবং কিছু নথিপত্র উদ্ধার করা হয়েছে। একাধিক এজেন্টের বিরুদ্ধে মানব পাচারের অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে।’

কোনো এজেন্টের রাশিয়ান সেনাবাহিনীতে সাহায্য়ের কাজ বা এই ধরণের কোনো মিথ্যা প্রতিশ্রুতির ফাঁদে পা না দেয়ার জন্য সতর্কবার্তা দিয়েছে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘এই ধরণের যেকোনো প্রতিশ্রুতি ভুয়া এবং এরফলে জীবনের ঝুঁকি ও বিপদ রয়েছে।’ রুশ সেনাবাহিনীতে কর্মরত ভারতীয়দের দ্রুত মুক্তি এবং তাদের দেশে ফেরানোর ব্যাপারে ভারত সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলে জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

এদিকে, ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে রুশ সেনাবাহিনীর পক্ষে যোগ দেয়ায় তেলেঙ্গানা ও গুজরাটের দুই নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে। সিবিআইয়ের বক্তব্য, রাশিয়ায় লোভনীয় চাকরির প্রস্তাব দিয়ে ভারতীয় নাগিরকদের রাজি করানো হয়। বিশেষ করে অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে পড়া পরিবারের সদস্যদের বিভিন্ন সংস্থার মাধ্যমে যোগাযোগ করে চাকরির প্রস্তাব দেয়া হয়। রুশ সেনা, নিরাপত্তা বাহিনী অথবা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে চাকরির প্রলোভন দেয়া হয়। প্রথমে ভিসা এবং রাশিয়া পৌঁছানোর জন্য মোটা টাকা নেয়া হয়। এরপর রাশিয়া পৌঁছানোর পরেই তাদের পাসপোর্ট কেড়ে নিয়ে সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে বাধ্য করা হয়। প্রথমে ওইসব ভারতীয় নাগরিককে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। একইসাথে এই ভূমিকায় কাজ করলে তাদের অর্থনৈতিক সুবিধা প্রদান করার প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়। এরপরেই তাদের রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধস্থলে নিয়ে যাওয়া হয় সেই সমস্ত ব্যক্তিকে।

সিবিআই জানিয়েছে, এসব মানব পাচারকারী সংস্থা স্থানীয় এজেন্ট মারফত চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে রাশিয়া পাঠায়। এজেন্টদের সন্ধানে দিল্লি, ত্রিবান্দ্রম, মুম্বই, আম্বালা, চণ্ডীগড়, মাদুরাই এবং চেন্নাই মিলিয়ে মোট ১৩টি জায়গায় তল্লাশি চালিয়েছে সিবিআই। কয়েকজন সন্দেভাজনকে ইতিমধ্যে আটক করা হয়েছে। চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে এখন পর্যন্ত ৩৫ ভারতীয় নাগরিককে রুশ সেনাবাহিনীতে ভর্তি করা হয়েছে বলে জানতে পেরেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। দিল্লির একটি সংস্থাও সন্দেহের তালিকায় রয়েছে। এখন পর্যন্ত তারা ১৮০ জন ভারতীয়কে স্টুডেন্ট ভিসা দিয়ে রাশিয়া পাঠিয়েছে। তবে তাদের রুশ সেনাবাহিনীতে ভর্তি করা হয়েছে কিনা তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

সূত্র : আজকাল