• জাতীয়

    মূল্যস্ফীতি শিগগিরই নিয়ন্ত্রণে আসবে : প্রধানমন্ত্রী

      নিজস্ব প্রতিবেদক ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ , ৬:২২:১৪ অনলাইন সংস্করণ

    প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা সংসদে আশা প্রকাশ করে বলেছেন, তার সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের ফলে শিগগিরই মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে।

    বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় সংসদের প্রশ্নোত্তরে জাতীয় পার্টির মুজিবুল হকের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে প্রশ্নোত্তর টেবিলে উপস্থাপিত হয়।

    সরকার ভোগপণ্যের মূল্য স্বাভাবিক রাখতে সকল প্রকার কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকারি উদ্যোগের প্রভাবে শিগগিরই মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে বলে আশা করছি। তাছাড়া যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ গুরুত্বপূর্ণ অর্থনীতিগুলোতে ২০২৪ সালে মূল্যস্ফীতি উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমে আসবে বলে পূর্বাভাস রয়েছে। সামষ্টিক অর্থনীতিতে নানা চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও বাংলাদেশ এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে একটি দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতির দেশ হিসেবে অবস্থান বজায় রাখতে সক্ষম হয়েছে।

    তিনি বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘর্ষ ও যুদ্ধকেন্দ্রিক নিষেধাজ্ঞার ফলে বৈশ্বিক অর্থনীতিতে যে বিরূপ প্রভাব পড়েছে তার কারণে বাংলাদেশে অর্থনৈতিক বিভিন্ন সঙ্কট অনুভূত হচ্ছে। এর উল্লেখযোগ্য প্রভাব পড়েছে মূল্যস্ফীতি, ভর্তুকি ব্যয়, লেনদেনের ভারসাম্য, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এবং মুদ্রা বিনিময় হারের ওপর।

    ঢাকা-১৯ আসনের মুহম্মদ সাইফুল ইসলামের প্রশ্নের লিখিত জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, বিশ্ববাজারের কয়েকটি পণ্য যেমন জ্বালানি তেল, ভোজ্য তেল, গম, সারসহ বিভিন্ন খাদ্যপণ্য, ভোগ্যপণ্য ও শিল্পের কাঁচামালের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় আমাদের দেশে আমদানিজনিত মূল্যস্ফীতির ওপর চাপ অনূভূত হচ্ছে। সরকার বর্তমানে ভোগ্যপণ্যের মূল্য স্বাভাবিক রাখতে সকল প্রকার কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। উদ্যোগগুলোর কার্যকর প্রভাব অল্প সময়ের মধ্যেই পাওয়া যাবে বলে আশা করছি।

    তিনি বলেন, জনসাধারণের জীবনযাত্রাকে সহজ করার জন্য সরকারের প্রচেষ্টা ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে এবং এর ফলে চলমান সাময়িক সঙ্কট কেটে জনমনে স্বস্তি ফিরে আসবে ইনশাআল্লাহ।

    জাতীয় পার্টির মুজিবুল হক চুন্নুর অপর এক প্রশ্নের উত্তরে সংসদ নেতা বলেন, দেশ থেকে পাচার হওয়া অর্থ উদ্ধারের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় তথ্য, সাক্ষ্য-প্রমাণ ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় সহায়তা নিতে ১০টি দেশের সাথে আইনগত সহায়তা চুক্তির উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

    তিনি বলেন, অর্থপাচার রোধে বর্তমানে বাংলাদেশে‘মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন-২০১২’ বলবৎ রয়েছে যা সর্বশেষ গত ২৬ নভেম্বর ২০১৫ তারিখে সংশোধিত হয়। এই আইনের বিধান অনুসারে বৈধ বা অবৈধ উপায়ে অর্জিত অর্থ বা সম্পত্তি নিয়ম বহির্ভূতভাবে বিদেশে পাচারকে মানিলন্ডারিং অপরাধ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। মানিলন্ডারিং অপরাধের ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন ৪ (চার) বছর এবং সর্বোচ্চ ১২ বৎসর পর্যন্ত কারাদণ্ড এবং এর অতিরিক্ত অপরাধের সাথে সংশ্লিষ্ট সম্পত্তি রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্তকরণ ও সংশ্লিষ্ট সম্পত্তির দ্বিগুণ মূল্যের সমপরিমাণ বা ১০ লাখ টাকা (এর মধ্যে যা অধিক) অর্থদণ্ডের বিধান রয়েছে।

    প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিদেশে পাচারকৃত অর্থ দেশে ফিরিয়ে আনা সহজীকরণে বিভিন্ন দেশের সাথে পারস্পরিক আইনগত সহযোগিতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে অপরাধ সম্পর্কিত বিষয়ে‘পারস্পরিক সহায়তা আইন-২০১২’ জারি করা হয়েছে। এই আইনের আওতায় অপরাধ সম্পর্কিত বিষয়ে পারস্পরিক সহায়তা প্রদানকল্পে কেন্দ্রীয় কর্তৃপক্ষ হিসেবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কাজ করছে। এছাড়া, এটর্নি জেনারেলের নেতৃত্বে বিদেশে পাচারকৃত সম্পদ বাংলাদেশে ফেরত আনার বিষয়ে গঠিত টাস্কফোর্স পাচারকৃত অর্থ উদ্ধারে কাজ করে যাচ্ছে।

    এ বিষয়ে সংসদ নেতা আরো জানান, বাংলাদেশ থেকে পাচারকৃত অর্থ উদ্ধারের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় তথ্য, সাক্ষ্য- প্রমাণ ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় সহায়তা গ্রহণের জন্য প্রাথমিকভাবে ১০টি দেশের সাথে পারস্পরিক আইনগত সহায়তা চুক্তি স্বাক্ষরের বিষয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। পাচারকৃত অর্থ উদ্ধারের বিষয়ে একটি কৌশলপত্র প্রণয়ন করা হয়েছে, যা মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসী কার্যে অর্থায়ন প্রতিরোধে গঠিত জাতীয় সমন্বয় কমিটি কর্তৃক অনুমোদনের পর এসব কৌশলপত্রের সুপারিশসমূহ বাস্তবায়নের জন্য সংশ্লিষ্ট সকল মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও সংস্থায় প্রেরণ করা হয়েছে। এছাড়াও পাচারকৃত অর্থ উদ্ধারের বিষয়ে বিএফআইইউ কর্তৃক একটি গাইডলাইন প্রণয়ন করা হয়েছে, যা জাতীয় সমন্বয় কমিটি কর্তৃক অনুমোদিত হয়েছে।

    সূত্র : বাসস


    আরও খবর

    Sponsered content