• সিলেট

    ছাত্রলীগকর্মী আরিফ হত্যা মামলার খুনীদের গ্রেফতার ও ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন

    প্রধান আসামি হিরণ মাহমুদ নীপু সহ সকল

      নিজস্ব প্রতিবেদক: ৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ , ৭:১৭:০৮ অনলাইন সংস্করণ

    ০৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৪ ইংরেজী রোজ বৃহস্পতিবার দুপুর ০২:৩০ মিনিটে সিলেট বন্দরবাজার জেলা পরিষদের সামনে সিলেট সরকারী কলেজ দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষার্থী মোঃ আরিফ আহমেদকে, হিরন মাহমুদ নিপু ও তার গ্রুপের ছেলেরা নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা করায়, সিসিক ৩৬ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর হিরন মাহমুদ নিপু সহ সকল আসামিদেরকে গ্রেফতার ও ফাঁসির দাবিতে সিলেট সচেতন মহলের উদ্যোগে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

     

    মানববন্ধনে জুয়েল আহমেদ এর সঞ্চালনায় সভাপতিত্ব করেন নিহত আরিফের মা আখি বেগম, । প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ট্রাস্ট বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় কমিটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন খান,।

     

    মানববন্ধনে দেলোয়ার হোসেন খান তার সংক্ষিপ্ত বক্তব্যের শুরুতে নিহত আরিফের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে বলেন, আরিফ একজন শিক্ষার্থী হিসেবে এদেশের আগামী ভবিষ্যত ছিল, সেই আগামী ভবিষ্যত চিরতরে চলে গেলো ঘাতকদের হামলার শিকার হয়ে।

     

    আধিপত্য বিস্তার কেন্দ্র করে একজন কাউন্সিলর তার দলবল সাথে নিয়ে একটি ছেলেকে কীভাবে নৃশংস ভাবে কুপিয়ে হত্যা করতে পাড়ে ? আরিফ ছিল তার অসহায় বাবা মায়ের সংসারের হাল ধরার স্বপ্ন, সন্ত্রাসীদের হাতে সেই স্বপ্ন ভেঙে আজ চুরমার হয়ে গেছে যা অতি দুঃখ জনক বিষয়।

     

    তিনি আরও বলেন আইন সবার জন্য সমান। চাঞ্চল্যকর এই আরিফ হত্যা নিয়ে পূর্বেও অনেক মানববন্ধন কর্মসূচি আমি আমরা দেখেছি, সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে একজন সচেতন মানুষ হিসেবে একটি গরীব অসহায় পরিবারের পাশে দাড়িয়েছি আরিফ হত্যার ন্যায় বিচার পাইয়ে দেওয়ার জন্য দলমত নির্বিশেষে সিলেটের সচেতন মহলের মানববন্ধনে যোগ দিয়েছি।

     

    তিনি সিলেটের সচেতন মহলের সর্বস্তরের নাগরিকবৃন্দের উদ্দেশ্য করে বলেন, আমাদের প্রত্যেকের উচিৎ এই অসহায় পরিবারের পাশে দাড়ানোর, এবং যার যার নিজ স্থান থেকে এই ন্যাক্কার জনক ঘটনার তীব্র নিন্দা প্রতিবাদ জানানোর।

    আরিফ হত্যাকারীদের অবশ্যই দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হোক, হত্যাকারীদের শাস্তি দেখে যেন সন্ত্রাসীদের বুকে কাপন ধরে, আরিফ হত্যা মামলার আটজন আসামী বর্তমানে কারাগারে আছেন, পলাতক সৈয়দ সবুজ ও কাউন্সিলর হিরন মাহমুদ নিপুকে অনতিবিলম্বে গ্রেফতার করে মামলাটির দ্রুত বিচার নিশ্চিত করার দাবি জানান তিনি।

     

    নিহত আরিফের মা আখি বেগমের ও নিহত আরিফের স্বজনদের একটাই দাবি এই নৃশংস হত্যা মামলার আসামিদেরকে ফাঁসির দাবি জানান তিনি,। এসময়ে উপস্থিত ছিলেন কুদ্দুস মিয়া, রুহেল চৌধুরী, শাকিল তালুকদার, মামুন আহমেদ, মনোয়ারা বেগম, লাকি আক্তার, ফুলেছা বেগম, ফারজানা কলি, সুহেল মিয়া, জাফর হোসেন, কামরান মিয়া প্রমূখ।

     

    উল্লেখ্য বালুচরের টিবি গেইট এলাকায় বসবাসকারী জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নাজমুল গ্রুপের কর্মী আরিফ আহমদ। সে সিলেট সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিল। এ কারণে নীপুর সঙ্গে তার এলাকাভিত্তিক দ্বন্দ্ব ছিল। এই দ্বন্দ্বের জের ধরে ১৫ই নভেম্বর রাতে নীপু গ্রুপের ছাত্রলীগের কর্মী জুনেদ, আনাছ, কুদরত, কালা মামুন, শরিফ, হেলাল সবুজ সহ কয়েকজনের নেতৃত্বে আরিফের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে।

     

    এতে আহত আরিফকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনার পর আরিফের পিতা ফটিক মিয়া বাদী হয়ে শাহ্‌পরাণ (রহ.) থানায় একটি অভিযোগ জমা দেন। পুলিশ সেই অভিযোগকে তদন্তের নামে মামলা রেকর্ডে গড়িমসি করে। এই অবস্থায় কিছুটা সুস্থ হয়ে আরিফ আহমদ বাসায় ফেরার পর পুলিশ মামলাটি রেকর্ড করে।

     

    মামলা রেকর্ডের পর আসামিরা আরও ক্ষুব্ধ হয়। আরিফের মা আঁখি বেগম জানিয়েছেন, ওই মামলার জের ধরে ২০শে নভেম্বর রাতে বাসার সামনে কাউন্সিলর হিরণ মাহমুদ নীপুর নেতৃত্বে তার ছেলের উপর হামলার ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর গুরুতর আহত অবস্থায় যখন আরিফকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল তখনই আরিফ আসামিদের নাম বলে কারা তার উপর হামলা করেছে।

     

    আরিফের দেয়া বক্তব্যের সূত্রধরে মামলায় ১০ জনকে আসামি করা হয়। এদিকে- হাসপাতালে ভর্তির পর আরিফের মৃত্যু হয়। এ ঘটনার আরিফের মা আঁখি বেগম বাদী হয়ে সিলেট এয়ারপোর্ট থানায় কাউন্সিলর হিরণ মাহমুদ নীপুকে প্রধান আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

    মামলার অন্য আসামিরা হচ্ছে; আনাছ, মামুন রাব্বি, হেলাল মিয়া, শরিফ আহমদ, জুনায়েদ আহমদ, রনি, সৈয়দ আমির আলী, সুলতান আহমদ ও সেয়দ সবুজ আহমদ। ঘটনার পর স্থানীয়রা মামুন ও রনিকে আটক করে পুলিশে দেয়। অন্য আসামিরা পালিয়ে যায়। তবে- ঘটনার এক সপ্তাহের মাথায় ২৮শে নভেম্বর কাউন্সিলর নীপু উচ্চ আদালত থেকে তিন সপ্তাহ জামিন নেন।

     

    ১৯শে ডিসেম্বর তার নিম্ন্ন আদালতে হাজির হওয়ার কথা থাকলে সে হাজির না হয়ে কিছুদিন আত্মগোপন করে ৫ ফেব্রুয়ারী উচ্চ আদালতে গিয়ে আরো দুই সপ্তাহের জামিন নিয়ে আসে, নিহত আরিফের মা আখি বেগম জানান আরো চার চারটি মামলার গ্রেফতারী পরোয়ানা থাকা শর্তে হিরন মাহমুদ নিপু প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ায় পুলিশ থাকে আটক করছেনা। সবশেষে তিনি পুলিশের উর্ধতন কর্মকর্তার দৃষ্টি আকর্ষণ করে নিপু ও সবুজকে গ্রেফতার করার অনুরোধ জানান।

    আরও খবর

    Sponsered content