• আন্তর্জাতিক

    এক দিনে গাজায় ২৪ ইসরাইলি সেনা নিহত

    এক দিনে এত সেনার প্রাণহানি আগে কখনো দেখেনি ইসরাইল, ইসরাইলের প্রস্তাব ২ মাসের, হামাস চায় স্থায়ী যুদ্ধবিরতি

      আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ ২৪ জানুয়ারি ২০২৪ , ২:৪২:৩৩ অনলাইন সংস্করণ

    গাজায় হামাসের বিরুদ্ধে অভিযান চালাতে গিয়ে সোমবার ২৪ ঘণ্টায় ২৪ জন ইসরাইলি সেনা নিহত হয়েছে বলে গতকাল মঙ্গলবার ইসরাইলি সামরিক বাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। গাজার দক্ষিণের শহর খান ইউনুসের দখল নিতে গত সপ্তাহ থেকে সেখানে অভিযান শুরু করেছে ইসরাইলের পদাতিক বাহিনী, সাথে আকাশ হামলা তো চলছেই। মিসর সীমান্তের কাছের শহর খান ইউনুসেই হামাসের মূল সদর দফতর রয়েছে বলে দাবি করেছে ইসরাইল। তারা বলেছে, গত ৭ অক্টোবর হামাসের যে অংশটি ইসরাইলের দক্ষিণাঞ্চলে হামলা চালিয়ে এক হাজার দুই শতাধিক মানুষকে হত্যা করেছে তারা খান ইউনিস থেকেই এসেছিল। রয়টার্স

    সর্বশেষ সেনা নিহতের বিষয়ে মঙ্গলবার সকালে ইসরাইলের সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র রেয়ার অ্যাডমিরাল ড্যানিয়েল হাগারি বলেন, একটি রকেট প্রপেলার গ্রেনেড একটি ট্যাংকে আঘাত করতে ২১ ইসরাইলি সেনা নিহত হয়। ওই ট্যাংকটি ইসরাইলি বাহিনীকে কাভার করছিল। একই সময়ে দু’টি দ্বিতল ভবনে বিস্ফোরণ হয়। ইসরাইলি সেনারা ওই দু’টি ভবনে বিস্ফোরক রেখে সেগুলো উড়িয়ে দিতে গিয়েছিল। কিন্তু তারা সরে যাওয়ার আগেই বিস্ফোরণ হয়ে ভবন দু’টি ধসে পড়ে। ‘কী কারণে আগেই বিস্ফোরণ হলো তা বুঝতে আমরা বিস্তারিত তদন্ত করে দেখছি এবং কারণ খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি।’

    ইসরাইলের প্রেসিডেন্ট আইজ্যাক হারজোগ এক বিবৃতিতে বলেন, ‘আজকের সকালটি অসহনীয় কঠিন। পুরো দেশের পক্ষ থেকে আমি নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা এবং আহতদের দ্রুত আরোগ্যলাভের প্রার্থনা করছি। এতটা দুঃখ ভারাক্রান্ত ও কঠিন সকাল হওয়া সত্ত্বেও আমরা শক্ত আছি এবং মনে রেখেছি, একসাথে আমাদের জয় হবেই।’ গাজা যুদ্ধে সোমবার পর্যন্ত ২৫ হাজার ২৯৫ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। যাদের শতকরা ৭০ ভাগ নারী ও শিশু।

    দুই মাসের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব ইসরাইলের : এ দিকে আলজাজিরা জানায়, দুই মাসের জন্য গাজায় যুদ্ধবিরতির একটি প্রস্তাব দিয়েছে ইসরাইল। হামাসের হাতে বাকি বন্দীদের কয়েক দফায় মুক্তি দেয়ার শর্তে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব এরই মধ্যে হামাস দফতরে পাঠানো হয়েছে। তবে এর আগে গাজায় স্থায়ীভাবে আগ্রাসন বন্ধ না হলে বাকি বন্দীদের মুক্তি দেয়া হবে না বলে জানিয়েছিল ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস।


    ইসরাইলের প্রস্তাবে বলা হয়েছে, প্রথম ধাপে শিশু, নারী, ৬০ বছরের বেশি বয়সী এবং গুরুতর অসুস্থ বন্দীদের মুক্তি দিতে হবে। পরবর্তী ধাপে সব নারী সেনা ও ৬০ বছরের চেয়ে কম বয়সী বেসামরিক পুরুষ, পুরুষ সেনা ও নিহত বন্দীদের লাশ হস্তান্তর করা হবে। ইসরাইলের প্রস্তাবে আরো বলেছে, বন্দী মুক্তি শুরুর আগে ইসরাইল ও হামাসকে আলোচনা করে নির্ধারণ করতে হবে জেরুসালেমের কারাগারে বন্দী কতজন ফিলিস্তিনিকে প্রতি ধাপে মুক্তি দেয়া হবে। এরপর অভিযুক্তদের বিষয়ে আলাদা করে বিস্তারিত আলোচনার আয়োজন করা হবে।

    প্রস্তাবে গাজা উপত্যকা থেকে পর্যায়ক্রমে ইসরাইলি বাহিনী প্রত্যাহার ও উত্তর গাজায় ফিলিস্তিনিদের ফিরে যাওয়ার অনুমতি দেয়ার বিষয়গুলোও বলা হয়েছে। হামাসের বিরুদ্ধে সঙ্ঘাতের শুরুতে ফিলিস্তিনিদের উত্তর গাজা ছেড়ে যাওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছিল। বিশ্লেষকদের মতে, ইসরাইলের এই প্রস্তাব সাম্প্রতিক সময়ের যেকোনো যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবের চেয়ে বেশি ইতিবাচক। ইসরাইলি কর্মকর্তারা এক্সিওসকে বলেন, ইসরাইল এখন সতর্কতার সাথে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে এবং হামাসের জবাবের জন্য অপেক্ষা করছে। আগামী দিনগুলোতে পরিস্থিতির উন্নয়ন ও আলোচনার অগ্রগতি নিয়ে তারা আশাবাদী।

    উল্লেখ্য, ইসরাইল স্থায়ীভাবে যুদ্ধ বন্ধ করবে না এবং ইসরাইলি কারাগারে বন্দী থাকা মোট ছয় হাজার ফিলিস্তিনিদের সবাইকে মুক্তি দেবে না বলে প্রস্তাবে নির্দিষ্ট করে বলা হয়েছে। তবে ইসরাইলি কর্মকর্তারা একসিওসকে জানান, উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বন্দীকে মুক্তি দিতে তারা রাজি। কাতার ও মিসরের মধ্যস্থতাকারীদের মাধ্যমে এই প্রস্তাব হামাসের কাছে বিবেচনার জন্য পাঠানো হয়েছে।

    আরও খবর

    Sponsered content